পুজোর সেকাল-একাল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভরেছে স্মৃতির পাতা। শরৎ এলেই তাতে চোখ রাখেন। কেমন ছিল তাঁদের কৈশোর, যৌবনের পুজো? সেসব ভাগ করে নিতে কলম ধরলেন সমাজের বিশিষ্টরা। লিখলেন ‘পুজোর প্রেম’কথা।
আমার পুজো মানেই পাড়ার প্যান্ডেল, ঢাকের বোল আর নতুন জামার গন্ধ। বিশেষ করে ঢাকের সেই বোল, এখনও এই বয়সে ফিরে ফিরে আসে। সোনারপুরের কালিকাপুরে তখন এত বৈভব ছিল না। ছিল না ঠাট-বাট। কিন্তু অফুরন্ত মজা ছিল। লেখাপড়ার চাপও ছিল না। খুব মনে আছে, তখন ক্লাস সিক্স কি সেভেনে পড়ি। ভোরে ঘুম ভাঙতেই নতুন জামা, প্যান্ট পরে এক দৌড়ে প্যান্ডেল। ধূপের গন্ধ, ঢাকের আওয়াজ। আর কী চাই? কখন যে দুপুর হত, বুঝতেই পারতাম না। হঠাৎ কেউ হিড়হিড় করে বাড়ি নিয়ে আসত। কোনওরকমে খেয়ে আবার ছুট পুজো প্যান্ডেলে।
গ্রামের বড় পুজো, তাই অনেকেই আসত। আর সেটাই ছিল বড় আকর্ষণ। কত যে আনন্দ, তা ঠিক বলে বোঝাতে পারব না। একটু বড় হতে দল বেঁধে বন্ধুদের সঙ্গে বেরতাম। তবে পাড়ার পুজো মাস্ট। আর একটা বিষয় না বললেই নয়, পুজোর একদিন বাড়ির সবাইয়ের সঙ্গে কলকাতায় ঠাকুর দেখতে আসা। বাবা-জেঠা-কাকা-দাদার সঙ্গে আরও দু’টো কি তিনটি ফ্যামিলির সবাই দল বেঁধে ঠাকুর দেখতে যেতাম।
দুপুর বেলায় নতুন জামা-প্যান্ট-জুতো পরে বেরোনো হত। তখন দক্ষিণ কলকাতার সংঘশ্রী, সংঘমিত্রার পুজোয় ছিল দারুণ ভিড়। ঠাকুর দেখে মাঝরাত করে বাড়ি ফেরা! ভাবতেই পারতাম না। খুব বেশি হলে রাত আটটা। আর দারুণ খাওয়া হত দশমীর দিন। মাংস, আর দই মাস্ট। সঙ্গে আরও অনেক কিছু। মধ্যবিত্ত আটপৌরে ঘরের সন্তান। তাই ওই খাওয়াটার জন্য সারাবছর অপেক্ষা থাকত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.