ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: প্রতি বছর বর্ষা কাটতে না কাটতেই পিঁয়াজের ঘাটতি তৈরি হয় রাজ্যে৷ ফলে অস্বাভাবিক চড়া দামে বিক্রি হয় অন্য রাজ্য থেকে আমদানি করা পিঁয়াজ৷ পিঁয়াজের ঘাটতি মেটাতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন বিভাগের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে খারিফ পিঁয়াজ চাষের এলাকা সম্প্রসারণ প্রকল্প৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে খারিফ অথবা বর্ষাকালীন পিঁয়াজ চাষের জন্য চাষিদের বিশেষ অনুদান দেবে সরকার৷ তাই এবার ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করে নয়, এই রাজ্যেই বর্ষাকালে উন্নত জাতের পিঁয়াজের চাষ করে মেটানো হবে ঘাটতি৷
সরকারের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে খারিফ পিঁয়াজ অথবা বর্ষাকালীন পিঁয়াজের চাষের জমি সম্প্রসারণের জন্য চাষিদের অনুদান দেওয়া হবে৷ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি ০.১০ হেক্টর অথবা ১৫ কাঠা জমিতে খারিফ পিঁয়াজ চাষ করতে খরচ পড়ে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা৷ প্রতিটি প্রকল্পে সরকারের তরফ থেকে প্রকল্প মূল্যের চল্লিশ শতাংশ টাকা অনুদান হিসাবে দেওয়া হবে৷ এছাড়াও এই পিঁয়াজের বীজ কেনার ক্ষেত্রেও চাষিদের ভরতুকি দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে৷
চাষিদের থেকে জানা গিয়েছে, সারা বছর বাজারে যে পিঁয়াজ মূলত বিক্রি হয় সেগুলি শীতকালীন পিঁয়াজ৷ সুখসাগর নামে এই জাতের পিঁয়াজটি শীতের সময় চাষ করা হয়৷ তবে রাজ্যে যে পরিমাণ পিঁয়াজ উৎপাদন হয়, তা বছর পার হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যায়৷ প্রতিবছর বর্ষার সময় থেকেই পিঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়৷ ফলে ভিনরাজ্য থেকে পিঁয়াজ আমদানি করতে হয়৷ প্রতিবছর এই সময় পিঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায়৷ যে পিঁয়াজ সারা বছর ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে সেই পিঁয়াজের দাম কখনও পঞ্চাশ টাকাও ছাড়িয়ে যায়৷ সে কারণে এবার বর্ষাকালীন পিঁয়াজ চাষের উপর জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার৷
উত্তর ২৪ পরগনা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিক দীপককুমার সারেঙ্গী জানান, খারিফ পিঁয়াজ অথবা বর্ষাকালীন পেঁয়াজের চাষ অন্য জাতের পিঁয়াজের তুলনায় খুব তাড়াতাড়ি হয়৷ জুলাই মাস থেকে খারিফ পিঁয়াজের বীজ বপণ করা হলে মাত্র তিন মাসের মধ্যেই তা বিক্রি করার উপযোগী হয়ে যায়৷ রাজ্যে মজুত থাকা শীতকালীন পিঁয়াজ যখন শেষ হয়ে আসবে তখন এই খারিফ পিঁয়াজ বাজারে পিঁয়াজের ঘাটতি মেটাবে বলে ধারণা প্রশাসনিক আধিকারিকদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.