পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন শিবমন্দির সর্বজনীনের পুজো প্রস্তুতি৷
সন্দীপ্তা ভঞ্জ: আজকের দিনে যেখানে দুরন্ত গতিতে সময় ছুটছে, ছুটে চলেছে গোটা বিশ্ব, আমাদের কারওরই কারও জন্য এক লহমা সময় নেই। নেই কথা কওয়ার, মনের ঝাঁপি খোলার লোক, আমরা বড় একা! ফেসবুক, টুইটার যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ গুঁজে এক অন্য জগতে বিচরণ করি আমরা। ভুলে যাই যে এই জগৎ সংসারে আমরা নানান বন্ধনে আবদ্ধ। স্নেহ-মায়া-মমতার বন্ধন, বন্ধুত্বের বন্ধন, প্রেম-প্রণয়-ভালবাসার সুমিষ্ট বন্ধন থেকে কর্মজগৎ, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই কোনও না কোনও বন্ধনে আমরা আবদ্ধ। তবে আজ নানান কারণে সেই বন্ধন প্রায় শিথিল হয়ে পড়েছে। সেসব বন্ধনের দৃঢ়তা এবং গভীরতার অভাব বর্তমানে প্রায় সর্বত্রই পরিলক্ষিত হয়। হাজার হাজার বন্ধু-অনুরাগীদের সংখ্যা থাকলেও দিনের শেষে কিন্তু আমরা বড় একলা হয়ে গিয়েছি। কারণ? এখন তো ‘নিউক্লিয়ার’ যুগ মশাই। সেই বাঁধন ছাড়া সমাজ-সম্পর্ককে জোড়ার ভাবনাই এবার শিবমন্দির সর্বজনীনের থিম। সেই অভিনব থিমের নাম ‘বন্ধনী’।
শিথিল হওয়া সম্পর্কের বাঁধনগুলিকে এক সুতোয় গেঁথে অটুট বন্ধনের বার্তা তুলে ধরবে দক্ষিণ কলকাতার খ্যাতনামা দু্র্গোৎসব পুজো কমিটি শিবমন্দির সর্বজনীন। ‘বন্ধনী’র ভাবনা, পরিকল্পনা এবং নির্মাণের কৃতিত্ব বিমল সামন্ত। পুরো মন্ডপ সেজে উঠেছে রং-বেরঙের সুতো এবং দড়িতে। শুধু তাই নয়, থিম ভাবনা ফুটিয়ে তুলতে বিমলবাবু ব্যবহার করেছেন তাঁতের শাড়ির ‘ছিলা’। তাঁতের শাড়ি বোনার সময়ে শেষের দিকে যে অবশিষ্টাংশ পড়ে থাকে সরু পাড়ের মতো, তাকে ‘ছিলা’ বলা হয়। পরিত্যক্ত সাইকেলের চাকায় রং-বেরঙের সেই ছিলা বেঁধে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অনন্য নকশা। সরু দড়িতে আঠার মাঞ্জা দিয়ে মন্ডপ সেজে উঠেছে বিভিন্ন ডিজাইনে।
সুতোর ব্যবহার শুধু মন্ডপেই নয়, এমনকী মা দুর্গার মূর্তি এবং চুলও দড়ি-সুতো দিয়েই তৈরি করেছেন শিল্পী অরুণ পাল। প্রতিমা অলংকরণের দায়িত্বে রযেছেন বিমল সামন্ত-কন্যা সূচনা সামন্ত আদক। আর শিল্পী বিমল সামন্তের এই ভাবনা ফুটিয়ে তুলতে আলোক নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী এবং আবহে অবদান রয়েছে শিল্পী নিলয় দত্তের। এবছর ৮৩তম শারদোৎসব পালন করছে শিবমন্দির সর্বজনীন দু্র্গোৎসব কমিটি। বন্ধনের বার্তা এবার মানুষের কাছে কতটা পৌঁছয় সেটাই এবার দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.