সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা সত্তর ছুঁই ছুঁই৷ ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতীয় রেল মুক্তি পেয়েছে, তাও প্রায় বছর ষাটেকের বেশি সময় হতে চলল৷ সারা ভারতে এখন জালের মতো বিস্তৃত ভারতীয় রেল৷ বুলেট, ট্যালগো, গতিমান – একের পর ধাপ পার হচ্ছে ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ৷ কিন্তু, বেশিরভাগেরই অলক্ষ্যে থেকে গিয়েছে দেশের একমাত্র বেসরকারি রেলওয়েটি৷ শকুন্তলা রেলওয়ে৷
নাহ, শকুন্তলা বা দুষ্মন্তের কিংবা কালিদাসের কোনও যোগাযোগ নেই প্রায় শতাব্দী প্রাচীন এই রেলওয়েটির সঙ্গে৷ ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ সরকারের অধীনস্থ ভারতে এই রেল চলাচল শুরু করেছিল কিলিক নিক্সন অ্যান্ড কোম্পানি৷ উদ্দেশ্য, ভারত থেকে তুলো রফতানি করে নিয়ে যাওয়া৷ মহারাষ্ট্রের যাভতমাল থেকে ন্যারো গেজ লাইন ধরে তুলো বোঝাই করে ট্রেন আসত মুম্বই শহরে৷ সেই তুলো মুম্বই থেকে জাহাজে পাড়ি দিত ম্যাঞ্চেস্টারের উদ্দেশে৷
৭০ বছর ধরে স্টিম ইঞ্জিন চলার পরে ১৯৯৪ সালের ১৫ এপ্রিল প্রথমবার চলে ডিজেল ইঞ্জিন৷ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার৷ এখনও ইট, কাঠ, পাথরের মাঝে ফিসফিস করে সেই ইতিহাসের কথা বর্তমানের কাছে তুলে ধরছে শকুন্তলা রেলওয়ে৷ গ্রামের গরিব মানুষের কাছে এখনও যাভতমাল থেকে মুর্তাজাপুর যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম স্বাধীনতার আগের এই রেলপথ৷ কারণ এটাই সবচেয়ে সস্তা উপায় যা চলে অমরাবতী ডিভিশনের অধীনে৷কর্মী বলতে মাত্র সাত জন৷ টিকিট কাটা, সিগনাল সামলানো থেকে মাল ওঠানামা সবই তাঁরাই সামলান৷ একটি গুদামঘর আছে বটে তবে তাতে বাসা বেঁধেছে আগাছার দল৷
স্বাধীনতার পর রেল অধিগ্রহণের সময় অলক্ষ্যেই থেকে গিয়েছিল এই ন্যারো গেজের রেলপথ৷ তবে প্রতি ১০ বছর অন্তর কেন্দ্র এই রেলওয়ের পরিকাঠামো পর্যালোচনা করে৷ কিন্তু, এই ডিভিশনকে আধুনিক করে তুলতে গেলে প্রচুর অর্থলগ্নির প্রয়োজন। তাই বোধহয় আজও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি৷ তাই একার কাঁধেই ইতিহাসকে বহন করে চলেছে শকুন্তলা রেলওয়ে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.