সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘স্করপেন’ সাবমেরিনের গোপন তথ্য ফাঁসে বিব্রত ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক৷ ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে দেশের নৌবাহিনী ফ্রান্সের অস্ত্রভাণ্ডারের ডিরেক্টরেট জেনারেলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে৷ দ্রুততার সঙ্গে তদন্তের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ফরাসি সরকারকেও৷ নৌবাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যও ফরাসি সরকারকে জানানো হয়েছে৷ কারণ, নির্মাতা সংস্থা ডিসিএনএস ফরাসি সংস্থা৷
এদিকে, যেখানে গোপনীয়তার সঙ্গে স্করপেন ডুবোজাহাজ তৈরি হচ্ছে, সেই মাজগাঁও বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের হেফাজত থেকে নথি ফাঁস হয়নি৷ তদন্তে নৌবাহিনীকে তারা সহযোগিতা করছে৷ বুধবারই এক বিবৃতিতে নৌবাহিনী জানিয়ে দিয়েছিল, নথি ফাঁস হয়েছে বিদেশ থেকে৷ তা সত্ত্বেও নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্হায় কোনও গলদ রয়েছে কি না, তা জানতে অভ্যন্তরীণ অডিট করা হচ্ছে৷ তাদের দাবি, “অস্ট্রেলীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত নথি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে৷ গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি কালো রং দিয়ে ঢাকা থাকায় নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তার কারণ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে না৷” মজার বিষয়, ওই ২২,৪০০ পাতার নথির অল্প কয়েকটি অংশই অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছিল৷ ভারতের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে তার কিছু অংশ আবার কালো করে দেওয়া হয়৷ যদিও তাতে বিপদ খুব একটা কমবে না৷ নৌবাহিনী আরও দাবি করেছিল, ফাঁস হওয়া নথি অনেক পুরনো৷ ভারতে তৈরি হওয়া স্করপেন-এর সঙ্গে সেগুলি মিলবে না৷
Scorpene Submarines – Update on Documents Leak https://t.co/4fA3STkINP
— SpokespersonNavy (@indiannavy) August 25, 2016
তা সত্ত্বেও কেন উদ্বেগ প্রকাশ করে ফরাসি সরকারের অস্ত্রভাণ্ডারের ডিরেক্টরেট জেনারেলের কাছে চিঠি দেওয়া হল? কেন দ্রুত তদন্তের অনুরোধ করা হল? পাশাপাশি, কূটনৈতিক চ্যানেলে স্করপেন ব্যবহারকারী অন্য কয়েকটি দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করে ফাঁস হওয়া নথির সত্যতা জানতে অনুরোধ করা হয়েছে৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রক ও নৌবাহিনীর যৌথ কমিটি তৈরি করে সম্ভাব্য পরিস্থিতি যাচাই করার কাজ শুরু হয়েছে৷ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ কমোডর (অবসরপ্রাপ্ত) উদয় ভাস্করের মত, “নথিগুলি সত্যি হলে ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ তৈরি হবে৷ এত টেকনিক্যাল তথ্য জানা থাকলে স্করপেনকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করতে শত্রুদের কোনও অসুবিধাই হবে না৷” পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি ভারতীয় দলকে বিদেশ পাঠানোর কথা ভাবছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক৷ আগামী মাসে নথি ফাঁস নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্করকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা৷ এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয় যে, ফাঁস হওয়া নথি কার দখলে ছিল –নৌবাহিনী, মাজগাঁও বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমডিএল) না নির্মাতা সংস্থা ডিসিএনএস-এর৷ এমডিএল জানিয়েছে, গোপনীয় নথি সংরক্ষণে তাদের ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠোর৷ তারা নিশ্চিত যে, মুম্বইয়ে তাদের দফতর বা বন্দর থেকে নথি ফাঁস হয়নি৷ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যতক্ষণ না দু’দেশের সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি নিজেদের হেফাজতে থাকা নথি নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা না করছে, ঘটনা স্পষ্ট হবে না৷ এদিকে নথি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া ফরাসি জাহাজ নির্মাণ সংস্থা ডিসিএনএস-এর কাছে তথ্য সংক্রান্ত বিষয়ে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি করেছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.