স্টাফ রিপোর্টার: ৭০তম স্বাধীনতা দিবসে জনসমাগমে গত পঞ্চাশ বছরের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল সৈকতসুন্দরী দিঘা৷ সোমবার ১৫ আগস্টের দিনেই শুধুমাত্র দিঘাতে প্রায় দেড় লক্ষ পর্যটক ভিড় জমিয়েছিলেন৷ পাশাপাশি খেজুরি থেকে মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর, উদয়পুর সব মিলিয়ে প্রায় তিন লক্ষ পর্যটক এদিন সমুদ্র উপকূলের নানা পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় করেন৷ শনি ও রবিবারের ছুটির সঙ্গে সোমবার স্বাধীনতা দিবসের দিনটি একটি বাড়তি ছুটি পাওয়ায় এই ভিড় বলে মনে করছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন৷ এ সম্পর্কে দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, “দিঘাতে আজ কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড় হয়েছে৷ গত ৫০ বছরের সমস্ত রেকর্ড আজ, সোমবার ভেঙে দিয়েছেন পর্যটকরা৷ আর এর সমস্ত কৃতিত্বই প্রাপ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ তিনি যেভাবে দিঘাকে সাজিয়ে তুলেছেন তাতে মানুষ আগে এসে কোনও রকমে একদিন কাটিয়েই ফিরে যেতেন৷ আর এখন এক সপ্তাহ থেকেও তাঁদের মন ভরে না৷ মনে হয় আরও কিছুদিন কাটিয়ে যাই৷ সেজন্যই দিঘায় ভিড় বাড়ছে৷ আগামিদিনে অন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও এমন ভিড় হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী সেই মতো পরিকল্পনা তৈরি করে দিয়েছেন৷ তার কাজও চলছে৷”
এদিনও বিভিন্ন হোটেলের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ দু’শো টাকার ঘর দু’হাজার টাকায় ভাড়া নিতে বাধ্য হন পর্যটকেরা৷ হোটেলের ঘর কালোবাজারির জন্যেই প্রায় দুই মাস আগে থেকেই হোটেল ব্যবসায়ীদের একাংশ ঘরের বুকিং নেওয়া বন্ধ করে দেন৷ এমনকী আগে থেকে হোটেলের সমস্ত ঘর খাতায়-কলমে বুক করে রাখে দালালরা৷ ফলে পর্যটকেরা এলেই তাঁদের হোটেল কর্তৃপক্ষ নয়, দালালরাই চড়া দামে নানা হোটেলের ঘর ভাড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ৷ সোমবার দুপুরের পর থেকেই দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের কাছে বিভিন্ন হোটেলের বিরুদ্ধে ঘরভাড়া হিসাবে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ আসতে থাকে৷ দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী ও পর্ষদের সদস্য দেবব্রত দাস বলেন, বেশ কিছু হোটেল বাড়তি বাড়া নিয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে৷ সেই সমস্ত হোটেলের একটি তালিকা তৈরি হচ্ছে৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
শুক্রবার রাত থেকে দিঘা রেল স্টেশন ও বাস টার্মিনাসগুলিতে নামতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা৷ শনি ও রবিবার কানায় কানায় ভর্তি ছিল সৈকতনগরী৷ কিন্তু সোমবার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে মানুষের ঢেউ আছড়ে পড়ে দিঘায়৷ এত প্রবল ভিড়ে এদিন যাতে কোনও পর্যটক সমস্যায় না পড়েন সেজন্যে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়ে জেলার সমস্ত সমুদ্রসৈকত জুড়ে৷ পুলিশ এদিন বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় একজনও পর্যটককেও সমুদ্রস্নানে অনুমতি দেয়নি৷ এদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) জাফর আজমল খিদওয়াই নিজে সকাল থেকে সৈকত শহরগুলিতে নজরদারি চালিয়েছেন৷ তিনিও বেশ কিছু মদ্যপ যুবককে সমুদ্রস্নানে নামতে বাধা দেন৷ বিকালে কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় দিঘা সমুদ্রসৈকতে দাঁড়িয়ে থেকে নজরদারি চালান৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.