Advertisement
Advertisement

Breaking News

দশমীতেই গোটা গ্রামের প্রণাম পান ঝালদার ‘একদিনের রাজা’

গুরু শঙ্করাচার্যের উপদেশে বৈষ্ণবমতে সম্পন্ন হয় হাজার বছরের প্রাচীন পুজো।

Purulia: special rituals observed in Durga Doshami at Jhalda

ছবিতে সিং দেও রাজবাড়ির প্রতিমা গড়ছেন শিল্পী, ছবি : অমিত সিং দেও।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:September 24, 2018 5:34 pm
  • Updated:September 26, 2018 7:22 pm  

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল ঝালদার হাজার বছরের সিং দেও-দের দুর্গাপুজো।

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রাজা নেই, রাজতন্ত্রও নেই, কিন্তু রয়েছে রাজবাড়ি। তাই রাজবাড়ির দশভূজার আরাধনায় বৈভব, জৌলুস কমলেও হারায়নি ঐতিহ্য। সেকারণেই  রাজ পরিবারের পুজোয় এখনও ‘রাজা-রাজা’ ব্যাপারটা রয়েই গিয়েছে। পুরুলিয়ার ঝালদা-১ নম্বর ব্লকের রাজা হেঁশলা গ্রামের রাজপরিবারের পুজো। প্রাচীনত্বে হাজারেরও বেশি প্রাচীন। তবে হাজার বছর আগের যে জাঁকজমক সেটা খানিক ফিকে হয়ে গেলেও এই গ্রাম লাগোয়া মানুষ কিন্তু ঐতিহ্যকে ভুলে যাননি। তাই বিজয়া দশমীর দিন হেঁশলার শেষ রাজা প্রয়াত কিঙ্করনারায়ণ সিং দেওয়ের ছেলে কন্দর্পনারায়ণ সিং দেওকে ‘একদিনের রাজা’ মেনে নতমস্তকে প্রণাম করেন বাসিন্দারা। সেদিন ‘রাজা’র মাথায় থাকে মুকুটও। ফলে এই রাজপরিবারের পুজো যেন একটু অন্যরকম।

Advertisement

[জলপাইগুড়ির তিস্তাপারের পুজোয় ঘট ভেঙে দুগ্গা মায়ের আবাহন]

অযোধ্যা পাহাড়ের ল্যান্ডস্কেপকে সামনে রেখে জঙ্গল ঘেরা এই রাজবাড়ি। কেমন যেন একটা গা ছমছমে ভাব। কিন্তু এই রাজবাড়ির ঠাকুরদালানে মা দুগ্গার কাঠামোতে মাটি পড়তেই যেন আনন্দের হিন্দোল ওঠে পাহাড়তলিতে। অতীতে এলাকার কুড়িটি মৌজার মানুষ এই পুজোয় শামিল হতেন। এখনও ঐতিহ্য অটুট। দশমীর দিন তাই ওই মৌজার বাসিন্দারা শেষ রাজার সন্তানকে একদিনের রাজা হিসাবে মেনে নেন। রাজস্থানের যোধপুর থেকে হাজার বছরেরও বেশি আগে হিন্দু ধর্ম প্রচারের জন্য দিগ্বিজয়ী প্রতাপ সিং দেও ঝালদায় আসেন। এই রাজা হেঁশলার পার্শ্ববর্তী ইলু গ্রামে ঘাঁটি গেড়ে রাজপাট বিস্তার করেন। তারপর থেকে টানা ছ’শো বছর সিং দেও-দের রাজত্ব চলে। কিন্তু কোনও কারণে সেই রাজপাট পাশের গ্রাম হেঁশলায় চলে আসে। সেই থেকে গ্রামের নতুন নাম হয় রাজা হেঁশলা। ইলুতে থাকাকালীনই রাজা দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন। রাজপাটের পাশাপাশি হেঁশলাতে চলে আসে দুর্গাপুজোও। 

বেনারসের গুরু শঙ্করাচার্যের উপদেশে বৈষ্ণবমতে এই পুজো হয়। রীতি মেনে ইলু গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার আজও এই রাজবাড়ির কুল-পুরোহিত। অতীতে পুজোর চারদিনে একাধিক বলি হত। ষষ্ঠীতে ছ’টি, সপ্তমীতে সাতটি, অষ্টমীতে আটটি, নবমীতে ন’টি ও দশমীতে দশটি ছাগল বলি হত। শেষ রাজা কিঙ্করনারায়ণ সিং দেও-র মৃত্যুর পরেও তিন বছর এই বলি প্রথা বহাল ছিল। তবে এখন তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই রাজবাড়ির পুজো পরিচালনা করা ‘একদিনের রাজা’ কন্দর্পনারায়ণ সিং দেও বলেন, ‘আগের রাজপাট নেই। তাই পুজোর জৌলুস খানিক কমেছে, কিন্তু রাজ ঐতিহ্য আজও অটুট।’

[চন্দ্রকোণার এই বনেদি বাড়ির পুজোয় কালো পাঁঠা চাই-ই চাই! কেন জানেন?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement