দেবশ্রী সিনহা: পাঠানকোট জঙ্গি হামলায় পাক-যোগ আরও ভিত্তি পেল আমেরিকার গোয়েন্দা-তথ্যে৷ পাঠানকোট জঙ্গি হামলার তদন্তে সাহায্য করতে এবার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতের হাতে তুলে দিল আমেরিকা৷ হামলার বড় প্রমাণ হিসাবে দেশের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র হাতে এক হাজার পাতার ডোসিয়ার তুলে দিল ওবামা প্রশাসন৷ যার মধ্যে রয়েছে পাঠানকোট হামলাকারী চার জঙ্গি ও পাক মাটি থেকে জৈশ-এ-মহম্মদের হ্যান্ডেলার কাসিফ জানের বিশদ কথোপকথন৷ এমনকী, সালবিন্দর সিংহকে অপহরণ করার সময় যে ফোন ব্যাবহার করা হয়েছিল, সেই ফোন নম্বরই যে কাসিফ জানের, তারও প্রমাণ মিলেছে হাতেনাতে৷ পাকিস্তান যে ভারতের বিরুদ্ধে জঙ্গি-সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর, তা ফের প্রমাণিত হল আমেরিকার দেওয়া এই নথির মাধ্যমে৷ তবে এনআইএ আধিকারীকদের মতে, ‘মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যাণ্ট ট্রিটি’ বা এমএলএটি মেনেই এইসব তথ্য ভারতকে দিয়েছে আমেরিকা৷ এনআইএ সূত্রের মতে, তথ্যে উঠে এসেছে বেশ কিছু মোবাইল নম্বর৷ যা পাকিস্তানের৷ সেইসব নম্বর সম্পর্কে এখনও তদন্ত চালানো হচ্ছে৷ তবে কূটনৈতিক মহলের ধারণা, আমেরিকার এহেন সাহায্যে আগামী সময়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করার দাবিতে অনেকটাই এগিয়ে রইল ভারত৷
এনআইএ সূত্রের মতে, তারা এই সব নথি এখন খতিয়ে দেখছে৷ বিশেষ করে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চলাকালীন চার জঙ্গির সঙ্গে হ্যান্ডেলার কাসিফ জানের ফোনে কথার্বাতা৷ অন্যদিকে, কাসিফের সঙ্গে জৈশের অন্যান্য সদস্যদের চাঞ্চল্যকর কথোপকথন৷ এছাড়াও তদন্তে পাওয়া গিয়েছে কাসিফের ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ ও ‘ফেসবুক’-এর মেসেজও৷ ‘মুল্লা-দাদুল্লা’ নামেআরও একটি ‘ফেসবুক’ অ্যকাউণ্টও ব্যাবহার করত কাসিফ৷ এমনকী, সেই অ্যাকাউণ্টেও ব্যবহৃত ফোন নম্বরে যোগাযোগ রেখেছিল পাঠানকোট হামলাকারীরা৷ এই অ্যাকাউণ্টে ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছিল জিহাদের৷ পাকিস্তানের এক সংস্থা ‘টেলিনর অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড ইসলামাবাদ’-এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করছিল কাসিফ৷ এমনকী, জঙ্গিরা যোগাযোগ রেখেছিল জৈশের আর্থিক শাখা আল রাহমত ট্রাস্টের সঙ্গেও৷
পাঠানকোট হামলার তদন্ত করতে আসা পাক যৌথ তদন্তকারী দল দেশে ফিরে গিয়ে দাবি করেছিল, ভারত তাদের হাত সঠিক প্রমাণ তুলে দিতে পারেনি৷ কূটনৈতিক মহলের দাবি, বিশদে এই তথ্যপ্রমাণ পাকিস্তানের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে আগামী সময়ে৷ তেমনই ভারত আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণ দিতে পারবে জৈশ প্রধান মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে৷ বিশেষ করে যখন এই তথ্য প্রমাণ দেওয়ার পিছনে ভূমিকা রয়েছে আমেরিকার৷ সেক্ষেত্রে, চিনের বিরোধিতা কতটা টিকবে, তা সময় বলবে৷ তবে চিনকে কোণঠাসা করতেই যে আমেরিকার এই পদক্ষেপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.