Advertisement
Advertisement

মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানিকে ‘শহিদ’ বলল পাকিস্তান

১৯ জুলাই কালা দিবস পালনের ডাক পাক প্রধানমন্ত্রীর৷

Pakistan declares Hizbul terrorist Burhan Wani a 'martyr', to observe July 19 as black day
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 16, 2016 10:44 am
  • Updated:July 16, 2016 10:44 am  

বিশেষ সংবাদদাতা: অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ভারতকে কারগিল যুদ্ধ উপহার দিয়েছিলেন৷ এবার নরেন্দ্র মোদির বন্ধুত্বের বিনিময়ে কাশ্মীর নিয়ে নতুন খেলা শুরু করে দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ৷ যদিও তাঁর অবস্থানের পিছনে পাক সামরিক বাহিনী ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ শুক্রবার কাশ্মীর ইস্যুতে চূড়ান্ত উস্কানিমূলক আচরণ শুরু করল পাকিস্তান৷ সেনা সংঘর্ষে নিহত হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানিকে ‘শহিদ’ বলে ঘোষণা করেছে তারা৷ পাশাপাশি, কাশ্মীরের সাম্প্রতিক হিংসাত্মক আন্দোলনকে পাকিস্তান ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে বলে লাহোরে ঘোষণা করেছেন নওয়াজ৷ একইসঙ্গে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে নজিরবিহীনভাবে কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি জানাতে আগামী ১৯ জুলাই কালা দিবস পালনের কথাও ঘোষণা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি আরও জানান, কাশ্মীরের এই স্বাধীনতা আন্দোলন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে পাকিস্তান নৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে সাহায্য অব্যাহত রাখবে৷

উল্লেখ্য, তিনদিন আগেই পাকিস্তানের অন্তত ১৩টি শহরে একটি স্বল্পপরিচিত রাজনৈতিক দলের তরফে পোস্টার-ব্যানার লাগিয়ে সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের কাছে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার আবেদন জানানো হয়৷ তাতে পাকিস্তানে সেনাশাসন জারি করার কথাও বলা হয়েছিল৷ তাই চাপে থাকা নওয়াজ আর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি৷ বিশেষত, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে সেনাবাহিনী ও আইএসআই তাঁকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে৷ শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদে ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী শরিফ৷ ছিলেন লাহোরে নিজের বাড়িতে৷ কিন্তু আচমকাই হাতে পাওয়া কাশ্মীর ইস্যু পুরোমাত্রায় কাজে লাগাতে নিজের শহরে গভর্নর হাউসে জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন তিনি৷ সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯ জুলাই গোটা পাকিস্তান কাশ্মীরের সমর্থনে কালা দিবস পালন করবে৷ কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের উভয় সভার যৌথ অধিবেশন ডাকা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ নওয়াজ বলেছেন, “ভারতের বর্বরতা কাশ্মীরে স্বাধীনতা আন্দোলন আরও তীব্র করবে৷ তারা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পাবেই৷ গোটা পাকিস্তান তাদের পিছনে রয়েছে৷” কাশ্মীর উপত্যকায় ভারত যে সাত লক্ষ সেনা মোতায়েন করেছে, তা এই আন্দোলনকে দমন করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন নওয়াজ৷ তিনি সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যু তুলে ধরতে হবে৷

Advertisement

যদিও পাক সরকারের এই ঘোষণার অব্যবহিত পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত৷ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, “পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্ত আমরা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি৷ আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের লাগাতার নাক গলানোর চেষ্টায় আমরা অত্যন্ত হতাশ ও বিরক্ত৷ নিষি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের শহিদের মর্যাদা দেওয়ার মধ্যেই স্পষ্ট, পাকিস্তানের সহমর্মিতা কোথায়, কাদের দিকে৷ কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলে পাকিস্তান আসলে সীমান্তপারের সন্ত্রাস ও অনুপ্রবেশে মদত দিতে চাইছে৷” শুক্রবার সকালেও অবশ্য কাশ্মীর নিয়ে প্ররোচনামূলক আচরণ চালিয়ে গিয়েছে পাকিস্তান৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোওয়াজা এম আসিফ একের পর এক টুইটে কাশ্মীরের ঘটনার সঙ্গে ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার তুলনা করেন৷ তিনি বলেন, “মোদি গুজরাতে সংখ্যালঘু নিধনের যে কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন, কাশ্মীরে তারই সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণ চলছে৷”

গত ৮ জুলাই সেনার গুলিতে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই পাকিস্তান ক্রমাগত উস্কানি দিয়ে চলেছে৷ প্রথমে পাক বিদেশমন্ত্রক, পরে স্বয়ং নওয়াজ এ নিয়ে মুখ খোলেন৷ ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক পাল্টা জবাব দেওয়ার পরেও তারা সংযত হয়নি৷ উল্টে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে বিষয়টি তুলতে চেষ্টা করে৷ যার জবাবে পাকিস্তানের সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তীব্র আক্রমণ করেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী দূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন৷ তারপরও থামার নাম নেই পাকিস্তানের৷ বৃহস্পতিবারই ভারত জানিয়েছিল, শুধু জঙ্গি পাঠানোই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় অর্থের জোগান দিয়ে সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে পাকিস্তান৷ বিকাশ স্বরূপ বলেছিলেন, “পাকিস্তান যতই চেষ্টা করুক, সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা বদল করা যাবে না৷” কিন্তু ভারতের তীব্র প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও পাকিস্তান যে তাদের অবস্থান বদলাবে না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ নওয়াজ তো প্রকারান্তরে কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার ডাকই দিয়েছেন৷ তবে আমেরিকাকে পাশে পাওয়ায় ভারতও যে আগ্রাসী ব্যাটিং করবে, তা বুঝিয়ে দিয়েছে বিদেশমন্ত্রকও৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement