ছবিতে ঘোষাল বাড়ির জাগ্রত দুর্গা।
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়েহাজির sangbadpratidin.in৷ আজ রইল জঙ্গিপুরের ঘোষাল বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।
শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: পঞ্চমীর সকালেই দেবীকে বেদিতে তুলে ধুমধাম করে পুজো শুরু হয়ে গেল জঙ্গিপুরের ঘোষাল বাড়িতে। এবছর দুর্গাপুজোরে আনুমানিক বয়স ৪০৮ বছর। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ঘোষাল বাড়ির পুজোর প্রচলন করেছিলেন গয়ামুনি বৈষ্ণবী। গয়ামুনি দেবী নিঃসন্তান ছিলেন। সত্যব্রতী দেব্যাকে পোষ্য পুত্রি হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। জঙ্গিপুরের গয়ামুনি বৈষ্ণবীর দুর্গাপুজো গোঁসাই বাড়ির পুজো বলে খ্যাত। বর্তমানে সেই পুজো ঘোষাল বাড়ির পুজো বলে পরিচিত হয়েছে। এদিন বেদিতে তোলার পরেই দেবীকে পিছনে বড় লোহার কড়া-সহ শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। কারণ ঘোষাল পরিবারের বিশ্বাস সন্ধিপুজোর সময় দেবী দুর্গা জীবন্ত হয়ে ওঠেন। আস্তে আস্তে দেবী সামনের দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন। মা দুর্গা যাতে ঘোষাল বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে না পারেন তার জন্য প্রতিমার কাঠামোকে শেকল বেঁধে রাখা হয়।
এই বিশ্বাসকে আঁকড়েই আদিকাল থেকে সেই রীতি মেনে পুজো হয়ে চলেছে। প্রথা মেনে রথের দিন পুজো পাঠের পর দেবীর কাঠামোতে প্রলেপ পড়ে। শুরু হয় মূর্তি গড়ার কাজ। রথ যাএার দিন থেকে দুর্গা পুজোর উৎসব শুরু হয় ঘোষাল বাড়িতে। মহালয়ার দিন মন্দিরে দেবীর বোধনের ঘট স্থাপন করা হয়। সপ্তমীর দিন ঢাক, ঢোল, উলু-সহ নব পত্রিকাকে পালকি করে আনা হয় ভাগীরথি নদীতে। বৈদিক মতে স্নান করিয়ে আনা হয় মন্দিরে। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন লুচি, মিষ্টি সহ-ভোগ নিবেদন করা হয়। সন্ধি পুজোতে তিন রকমের খিচুড়ি, পোলাও, পনির ও বক ফুলের বড়া ভোগ হিসাবে দেবীকে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.