সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: আর পাঁচটা থিমের পুজো যেমন হয়, হাওড়ার বাগনানের মুরালীবাড় শান্তি সংঘের কালীপুজোও তেমনই৷ তফাৎ বলতে, পুজো উদ্যোক্তা সকলেই মনেপ্রাণে মোহনবাগানি৷ তাই মন্দির বা অন্য কোনও বিখ্যাত স্থাপত্য নয়, প্রিয় ক্লাবের ঐতিহাসিক কীর্তিকেই এবারের কালীপুজোর থিম করেছেন তাঁরা৷ বাগনানের মুরালীবাড় শান্তি সংঘের পুজো প্রাঙ্গণে ফুটে ওঠেছে ১৯১১ সালে ব্রিটিশদের হারিয়ে মোহনবাগানের শিল্ড জয়ের ঘটনা৷ মাত্র একদিনেই মণ্ডপটি সাজিয়ে তুলেছেন ক্লাব সদস্যরা৷ মণ্ডপসজ্জায় হাত লাগিয়েছিল এলাকার কচিকাঁচারাও৷
[কালীপুজোয় খড়দহের শ্রীপাদে শ্যামা সাজবেন শ্যামসুন্দর, কিন্তু কেন?]
খাতায় কলমে ফুটবল ক্লাব হিসেবেই পরিচিত মোহনবাগান৷ কিন্তু, পরাধীন ভারতে এই ক্লাবটি হয়ে ওঠেছিল জাতীয়বাদের প্রতীক৷ প্রবল পরাক্রমশালী ব্রিটিশদেরও যে হারানো যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন ১১ জন সবুজ-মেরুন জার্সিধারী ফুটবলার৷ ১৯১১ সালে ইস্ট ইর্য়কশায়ার রেজিমেন্টকে হারিয়ে প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আইএফএ শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান৷ খেলার মাঠে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে খালি পায়ে ১১ জন বাঙালি ফুটবলারের লড়াইয়ে উদ্বেলিত হয়েছিল গোটা দেশ৷ নয়া উদ্যমে স্বাধীনতার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন জাতীয়বাদীরা৷ পরাধীন দেশের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিল ব্রিটিশদের৷ একশো বছরেরও বেশি আগের সেই ঘটনাই এবার থিম বাগনানের মুরালীবাড় শান্তি সংঘের কালীপুজোর৷
পুজো প্রাঙ্গণে ঢোকার মুখে আইএফএ শিল্ডের বিশাল কাটআউট৷ গোটা প্যান্ডেল জুড়ে ছোট ছোট ভাসমান নৌকা৷ আর পুজো প্রাঙ্গণে ১৯১১ সালে মোহনবাগানের শিল্ডজয়ী দলের সদস্যদের ছবি যেমন আছে, তেমনি স্থান পেয়েছেন শৈলেন মান্না, চুনী গোস্বামীর মতো ক্লাবের কিংবদন্তী ফুটবলাররা৷ অভিনব এই থিমের কালীপুজো দেখতে মঙ্গলবার রাতে মানুষের ঢল নেমেছিল বাগনানের মুরালীবাড় শান্তি সংঘের পুজো প্রাঙ্গণে৷ ক্লাবের সদস্য সুমন চন্দ্র জানিয়েছেন, আপামর বাঙালির রক্তে মিশে মোহনবাগান৷ পরাধীন ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনের শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবটির অবদান কম নয়৷ বার্তা একটাই, “হৃদয় জুড়ে একটি নাম, তোমার আমার মোহনবাগান।”
[ পাহাড় চূড়ায় মন্দির, কালীপুজোয় সাধনা করতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.