Advertisement
Advertisement

শ্যামা মাকে দু’ভাগ করেই পুজো হয় এই গ্রামে, কেন জানেন?

মিষ্টান্নতেই তুষ্ট দেবী।

Midnapore Kali Puja story

জোয়ান কালী, ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:November 6, 2018 2:30 pm
  • Updated:November 6, 2018 2:30 pm  

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল:  মা কি ভাগ হয়?  না, রক্তমাসের মাকে কেটে দু’ভাগ নয়৷ মা কালীকে দু’ভাগ করেই প্রায় ৫০০ বছর ধরে পুজো চলছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের জোতকেশব গ্রামে৷ এই গ্রামে কর্মকার পাড়ায় পাড়াগত দ্বন্দ্বে কালী মা ভাগ হয়ে গিয়েছেন৷ বুড়ো কালী আর জোয়ান কালী৷ মা ভাগ হলেও পুজোর আচার ও নিয়ম কানুন সবই মেনে চলা হয় আদি কালীর প্রথা মেনে৷ পরে জাঁকজমকে-বৈভবে-প্রচারে এগিয়ে যান জোয়ান কালী৷ কর্মকার পাড়ার প্রায় ২৫০টি পরিবার জোয়ান কালীর পুজোয় অংশ নেয়৷ ধীরে ধীরে কৌলিন্য হারিয়ে ফেলে আদি কালী বা বুড়ো কালী৷ এখন জোয়ান কালীর পুজোতেই যত রমরমা৷

জোয়ান কালীর পুজোয় বাজে ১২টি ঢাক, ঢোল, সানাই৷বাজে নহবতও৷আগে নিম গাছে চালাঘর বেঁধে বসত নহবতের দল৷ এখন রয়েছে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার নহবতখানাও৷ আলোর মালায় সাজে মণ্ডপ। এখানে চারদিনের মায়ের পুজোয় বসে মেলা।  মেলা চলে দশ দিন। লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হয় জোয়ানকালীর মেলায়৷ বুড়ো, জোয়ান দুই মা-ই চতুর্ভুজা৷ মহাকাল শিবের বুকে পা দিয়ে রুদ্র মূর্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মা৷ দুই প্রতিমার রূপ, উচ্চতা সবই এক। মায়ের ভোগেও রয়েছে অভিনবত্বের ছোয়া। থাকে মুড়ি, মুড়কি, মিষ্টান্ন ও ফল।

Advertisement

[ইংরেজ সাহেবের হাতেই পত্তন কালচিনির হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর]

কিন্তু কেন ভাগ হল মা?  জোতকেশব গ্রামের ডাব কর্মকার পরিবার লোহার জিনিসপত্র তৈরি করতেন৷ আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে গ্রামের বেশিরভাগ অংশই ছিল জঙ্গলে ভরা। একসময় গ্রামে কলেরা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে তা মহামারীর আকার নিলে বহু মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। দেবীর কোপেই মহামারী হয়েছে। এসব দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতেই গ্রামে কালীপুজোর করার কথা ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দা বিদুর রানা, শীতল রানারা উদ্যোগ নিয়ে কালীপুজো শুরু করেছিলেন। দুঃখের বিষয়, গ্রামে পুজো হলেও পাড়ার সমস্ত বাসিন্দারা সেখানে যাওয়ার সুযোগ পেতেন না। একবার মাকে দেখার টানে রানাদের পুজো মণ্ডপে হাজির হয়েছিলেন কর্মকার পরিবারের সদস্যরা। পুজোর দিনে অনাহুত অতিথিদের তাড়িয়ে দেয় রানা পরিবার। সেই অপমানের পরেই ভাগ হয়ে যান মা। আদি কালী ভাগ হয়ে হয়, বুড়ো ও জোয়ান কালীতে। রানারা বুড়ো কালীর আরাধনা করলেও, ডাব কর্মকারদের শুরু করেন  জোয়ান কালীর আরাধনা। জোয়ান কালীপুজো কমিটির সম্পাদক যুগলকিশোর ডাব কর্মকার বলেন, “আমরা ভাগ হতে পারি৷ কিন্তু সেই ঐতিহ্য আজও মেনে চলি৷ আমরা আজ প্রায় ২৫০ পরিবার এই পুজোয় যুক্ত৷ নিজেরাই চাঁদা তুলে মায়ের পুজো করি৷”      

[ভাঙন রুখতেই পাগলি কালীর আরাধনায় মাতেন মালদহবাসীরা] 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement