স্টাফ রিপোর্টার: মহিলার কন্ঠে কথা বলে প্রেমের অভিনয়৷ তাতেই মুগ্ধ হয়ে ‘বান্ধবী’কে ক্যামেরা আর ট্যাব কেনার জন্য ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন কসবার বাসিন্দা এক যুবক৷ ওই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় ওই ‘বান্ধবী’৷ গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তের শেষে অপরাধীর পরিচয় জেনে মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা অভিযোগকারী যুবকের৷ এতদিন যে ‘বান্ধবী’ সুমিষ্ট স্বরে প্রেমের অভিনয় করে এসেছে, সে আসলে মেয়েই নয় জলজ্যান্ত পুরুষ৷ নাম সৌমেন দাস৷
২২ বছরের সৌমেন হলদিয়া সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র৷ সে ও তার বন্ধু জয়ন্ত কোটালকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷ সৌমেন লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকদের সামনে যখন মহিলা কন্ঠে কথা বলতে শুরু করে, তখন অবাক হয়ে যান গোয়েন্দারাও৷ যদিও সাধারণভাবে সৌমেন এই কন্ঠে কথা বলে না৷ তখন তার গলা রীতিমতো পুরুষালি ও রাশভারী৷ কিন্তু কোনও অপরাধ ঘটানোর সময় মুহূর্তের মধ্যে নিজের গলা পাল্টে ‘মহিলা-কন্ঠী’ হয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তার৷
পুলিশ জানিয়েছে, সুমিত নামে কসবার বাসিন্দা ওই যুবককে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় এক ‘যুবতী’৷ ‘মিষ্টি মেখলা’ নামে ওই ফেসবুক প্রোফাইলে ছিল এক সুন্দরীর ছবি৷ তার অনুরোধে যুবক নিজের মোবাইল ফোনের নম্বর দেন৷ একদিন যুবককে ফোন করে ওই ‘বান্ধবী’৷ তার সুমিষ্ট মেয়েলি কন্ঠ শুনে মুগ্ধ হন যুবক৷ একেকবার একেকটি সিমকার্ড থেকে ফোন করে ওই ‘বান্ধবী’৷ যুবকের হয়ে অনলাইনে ক্যামেরা ও ট্যাব কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়৷ ‘বান্ধবী’কে বিশ্বাস করে একটি অ্যাকাউন্টে কয়েক বারে ৪৫ হাজার ৩০০ টাকা পাঠান সুমিত৷ কিন্তু ক্যামেরা আর ট্যাব আর তাঁর হাতে আসেনি৷
গত মাসে তিনি লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, ওই অ্যাকাউন্টটি হলদিয়ার বাসিন্দা জয়ন্ত কোটালের৷ সেই সূত্র ধরে জয়ন্তকে গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেন৷ জেরার মুখে সে স্বীকার করে যে, তার বন্ধু সৌমেন মহিলার কন্ঠে কথা বলে এই প্রতারণা করে৷ সৌমেনকে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে ১১টি সিমকার্ড, ট্যাব, ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়৷ এর আগেও সৌমেন ও জয়ন্ত এই ধরনের অপরাধ করেছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের৷ তাদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.