Advertisement
Advertisement

Breaking News

অসহিষ্ণুতা কমাতে টিভি সিরিয়ালেও পরিবর্তন চান মমতা

সমাজে অপরাধ বাড়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 5, 2016 12:43 pm
  • Updated:June 22, 2022 5:09 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে কাজে লাগাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অপরাধের ক্ষেত্র যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে দিক৷ তবে কেন্দ্রের টাকা না আসায় পুলিশের আধুনিকীকরণ পুরোপুরি করা যায়নি৷ সেই প্রসঙ্গেই রাজনৈতিক নেতাদের যেমন দায়িত্বশীল হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনই তাঁর বার্তা, “সবাইকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে, যাতে অসহিষ্ণুতা না থাকে৷ পুলিশকে জানাবেন৷ ক্লাব-প্রশাসন বা এনজিওকেও যুক্ত করতে চাই৷” টিভি সিরিয়ালেও অপরাধমূলক কাজ বা অসামাজিক কাণ্ড দেখালে শিশুমনে বা মানবমনে যে প্রভাব ফেলে, সেদিকে নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেক্ষেত্রে সিরিয়াল নির্মাতাদের প্রতি বার্তা দিয়েছেন তিনি৷
সোমবার বিধানসভায় স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেটের আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, অপরাধের ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হবে না৷ তৃণমূলের হাতে তৃণমূল সমর্থক খুন হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী৷ মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রসঙ্গে বলেন, “নির্বাচনবিধি চলাকালীন আটটি ঘটনায় ছ’জন তৃণমূল আক্রান্ত হন৷ বিধি শেষ হলেও চারটি ঘটনায় চারটিই তৃণমূল আক্রান্ত৷ কোনওটিই হওয়া উচিত নয়৷” বাম জমানার তুলনা টেনে বলেন, “আগে ডায়েরি নেওয়া হত? থানা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হত৷ এফআইআর করতেই দেওয়া হত না৷” কংগ্রেসের মইনুল হক, মনোজ চক্রবর্তীরা চিৎকার করলে তিনি তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “মইনুল কোনওদিন বিপদে পড়েছ? এত আনন্দে আছ, হচ্ছে না! মনোজও ভাল থাকুন৷” মুখ্যমন্ত্রী সুজনবাবুর অভিযোগকে উড়িয়ে বলেন, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূল, বলা হচ্ছে৷ সীতারাম ইয়েচুরির বিরুদ্ধে কারাতের কোনও অভিযোগ নেই?” সুজন আপত্তি জানাতে উঠলে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেন, “আপনি আমার পার্টি নিয়ে বলেছেন৷ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতেই পারে৷ এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম৷ ক্লাবে-ক্লাবে বা পাড়ায় পুজো কমিটির ঝগড়াও তৃণমূলের ঝগড়া দেখাচ্ছেন৷ এই আমলে তৃণমূলের যত কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন, সিপিএমের এত কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে আপনাদের জমানায়?” সুজনকে কড়াভাবে মমতা বলেন, “তৃণমূলের ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার ফেয়ার করছেন! আমাদের রাজনৈতিক নেতারা রয়েছেন৷ ব্লকে, জেলায় কমিটি রয়েছে৷ নিজের পার্টিতে নজর দিন৷” ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল বিধায়ককে গ্রেফতার, আরাবুল ইসলাম, মুন্না ইকবাল, শম্ভুনাথ কাউয়ের জেলে থাকার উল্লেখ করেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, তৃণমূলের কোনও কর্মী অপরাধ করলেও ছাড়া পাবে না৷
সমাজে অপরাধ বাড়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর মন্তব্য, “অসহিষ্ণু কেন হব? ক’দিন আগে পিটিয়ে হত্যা করাও হচ্ছিল৷ টিভি সিরিয়ালকে অনুরোধ, অসামাজিক কাণ্ড দেখাবেন না৷ এগুলো লোকে চটপট দেখে খারাপটা নেয়৷ গঠনমূলক ভূমিকা নিতে হবে৷” এই প্রসঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেন, সাউথ সিটির বহুতল থেকে একজনের আত্মহত্যার দৃশ্য টিভিতে দেখে এক শিশুর মনে প্রশ্ন জাগে, ওই লোকটি লাফাচ্ছে কেন? মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “টিভি দেখতে দেখতে ছোট্ট মনে খারাপ জিনিস গ্রহণ করে নেয়৷ আগে সংবাদমাধ্যমে রক্তাক্ত ছবি দেখানো হত না৷ এখানকার সংবাদমাধ্যম দাঙ্গার সময় বড় ভূমিকা নিয়েছে৷ তবে খুন করা হচ্ছে এমন ছবি ইউ টিউবে দিয়ে দিচ্ছে৷ এটা ভাল নয়৷”
বাজেট আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “গত পাঁচ বছরে একটাও নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, বানতলা, নেতাই, আনন্দমার্গীকে খুন করতে দিইনি৷ আইন-শৃঙ্খলা অনেকটাই সোনার পাথরবাটির মতো৷ কেন্দ্রের সুবিধা, কেন্দ্রকে আইন-শৃঙ্খলা দেখতে হয় না৷ জ্ঞান দিলেই হল৷ শুধু প্রশাসন নয়, রাজনৈতিক নেতাদেরও দায়িত্বশীল হতে হয়৷ সাইবার ক্রাইম আগে এত ছিল না৷ পুলিশকে খেলা, ডাকাতি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পুজো-ঈদ-বড়দিন, দুর্ঘটনা সবটাই দেখতে হয়৷ কাজের পরিধি বেড়েছে৷ পরিকাঠামোর উন্নয়ন শুধু রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়৷ এতদিন পরিকাঠামো বাড়ানো হয়নি৷ আধুনিকীকরণের দরকার রয়েছে৷ আগে কেন্দ্র টাকা দিত৷ তবুও ৮৯টি নতুন থানা হয়েছে৷ ৪৪টি মহিলা থানা হয়েছে৷” এই প্রসঙ্গেই সিবিআই কোর্ট, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের উদ্যোগের বিষয় উল্লেখ করেছেন মমতা৷ কোনও অপরাধে কীভাবে দ্রূত চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ের উল্লেখ করে তিনি জানান, শালবনির ক্ষেত্রে চার দিনে, দক্ষিণ দিনাজপুরে বারো দিনে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement