বছরভর হাজারও কেলেঙ্কারি৷ স্টিং অপারেশন থেকে ইডির সমন, ঋণখেলাপি থেকে ড্রাগচক্র- গোটা বছরটা ঠিক কী কী বিষয়ে সরগরম থাকল? বিদায় দেওয়ার আগে আর একবার নজর সেই সব ঘটনায়৷
নারদা স্টিং কাণ্ড
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল এই ঘটনা৷ শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে উঠেছিল ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ৷ নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের সেই ভিডিওকে হাতিয়ার করেই নির্বাচনের আগে সরব হয়েছিল বিরোধীরা৷ ম্যাথু নিজে শহরে এসে জানিয়েছিলেন, কোনও অনুদান নয় ঘুষই দেওয়া হয়েছিল৷ যদিও নির্বাচনের ফলাফলে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি৷ উল্টে সমন জারি হয়েছিল খোদ নারদ কর্তার নামেই৷
সারদা কাণ্ডে চিদাম্বরমের স্ত্রীকে সমন ইডির
সারদা কাণ্ডের রেশ এ বছর থিতিয়েই পড়েছিল৷ কিন্তু শেষ হয়েও যেন হইল না শেষ৷ এবছর আগস্ট মাসে এই কাণ্ডে ইডির সমন পেয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের স্ত্রী নলিনী চিদাম্বরম৷ সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে নাম ছিল তাঁর৷ তাঁর অ্যাকাউন্টে লেনদেনেও কিছু গলদ নজরে এসেছিল ইডির৷ তা খতিয়ে দেখতেই এই তলব৷ সারদা কাণ্ডে কংগ্রেসের এই যোগ, জাতীয় রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷
বিজয় মালিয়ার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বিজনেস টাইকুন৷ একসময়ের বেতাজ বাদশা৷ কিন্তু হঠাৎ কাহানি মে টুইস্ট৷ দেশের চর্চিত ব্যবসায়ী থেকে একেবারে ফেরার৷ ঋণখেলাপির দায়ে পড়েন বিজয় মালিয়া৷ প্রায় ৬০২৭ কোটি টাকা অনাদায়ী ঋণের দৌলতে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় মালিয়ার নামে৷
পানামা পেপার লিক
রাতারাতি শোরগোল পড়েছিল এই ঘটনায়৷ অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বর্য রাই থেকে ডিএলএফ কর্তা- বহু ভারতীয়র নাম জড়িয়েছিল৷ ফাঁস হয়েছিল বিদেশে থাকা তাদের কোম্পানি ও বা লগ্নি সংক্রান্ত তথ্য৷ তা নিয়ে বেজায় হইচই৷ তবে সময়ের নিয়মেই তা ফের চাপা পড়ে গিয়েছে৷
ড্রাগচক্রে মমতা কুলকার্নি
ছিলেন ডাকসাইটে নায়িকা৷ সৌন্দর্যের মাদকতায় এমনিই নেশা ধরাতেন পুরুষকুলের হৃদয়ে৷ সেই তিনিই কি ধরা পড়লেন ড্রাগ পাচারের দায়ে৷ আন্তর্জাতিক এক ড্রাগ চক্রের সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে থাকার অভিযোগে শোরগোল পড়েছিল গোটা দেশে৷
বিহার টপার স্ক্যাম
কাগজে কলমে কৃতী৷ কিন্তু সামান্যতম জ্ঞান নেই৷ সিনেমার চিত্রনাট্যকেও যেন হার মানিয়েছিল বিহারের টপাররা৷ রুবি রায়, সৌরভ শ্রেষ্ঠ, রাহুল কুমার- তিন কৃতী টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ই বোকা বনে যায়৷ ধরা পড়ে গলদ৷ পরে তদন্তে দেখা যায়, টপার হলে কী হবে, জ্ঞানের ভাঁড়ে মা ভবানি৷ পুরো ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়েছিল৷ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশাকেই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল এই ঘটনা৷
ফ্রিডম ২৫১
মোটে ২৫১ টাকায় স্মার্টফোন! তাও আবার হয় নাকি? রিংগিং বেলস বলল, হয়৷ অর্ডার দিলেই ঘরে পৌঁছে যাবে সবথেকে সস্তার স্মার্টফোন৷ অমনি রে রে করে বুক করা শুরু হয়ে গেল৷ এদিকে প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত মানুষরা ভাবতে বসলেন, এত সস্তা, সত্যি৷ তার উপর আবার এর সঙ্গে নাম জড়াল কেন্দ্রীয় শাসকদলের৷ তারা তো এমনিতেই দেশকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে৷ ফলে দুয়ে দুয়ে চার করে নিতে অসুবিধা হয়নি সাধারণ মানুষের৷ কিন্তু ঝুলি থেকে বেড়াল বেরল আরও কটাদিন পরে৷ যখন আর যে স্মার্টফোন আসার কথা সে আর এল না৷ রাজ্যসভায় হইচই হল৷ কেলেঙ্কারি নিয়ে সর হলেন অনেকে৷ কিন্তু তাতে আর বেশি কী হবে৷ ফ্রিডম আপাতত ভুলে যাওয়ার স্বাধীনতাতেই গা ঢাকা দিল৷
এইসব তর্ক-বিতর্কেই জড়িয়েছিল ২০১৬৷ বিতর্ক থেকেই নাকি নতুন পথের দেখা মেলে৷ আশা করা যায়, নতুন বছর সে পথের হদিশ পাবে৷
আরও পড়ুন-
২০১৬য সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হয়েছিল যে ঘটনায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.