শ্রীষিতা ঘোষ: ‘সাইবার ক্রাইম’ নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতার প্রসারে পুলিশের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়৷ লালবাজারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ক্যাম্পাসে এ সংক্রান্ত ওয়ার্কশপ, সেমিনার আয়োজন করতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ কীভাবে, কোন ধরনের সাইবার ক্রাইম হয়, কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, বাঁচার উপায়ই বা কী–সমস্ত বিষয়ে এই সেমিনারে আলোচনা হবে৷ বক্তব্য রাখবেন লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারা৷ দ্রুত লালবাজার ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷
অনলাইন চ্যাট, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ‘সাইবার ক্রাইম’-এর শিকার হচ্ছেন মহিলারা৷ বাদ যাচ্ছেন না পুরুষরাও৷ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন নারী-পুরুষ উভয়েই৷ সমীক্ষা বলছে, বিশেষত বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাই এ ধরনের সমস্যার শিকার৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র-ছাত্রীও এ ধরনের সমস্যায় পড়েন বলে জানতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ৷ তাই কীভাবে সাইবার ক্রাইমের ছোবল থেকে পড়ুয়াদের বাঁচানো যায় তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়৷ রেজিস্ট্রার সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘পরিকল্পনাটি এখনও ভাবনাচিন্তার স্তরে রয়েছে৷ তবে দ্রুত সাইবার ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হবে৷” তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই নন৷ সাইবার ক্রাইমের শিকার হন শিক্ষক, আধিকারিক, অশিক্ষক কর্মীরাও৷ তাঁরাও এই সেমিনারগুলিতে অংশ নিতে পারবেন৷ এছাড়াও অনেক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করেও অনৈতিক কাজকর্ম করে কিছু চক্র৷ একাধিকবার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে৷ সেগুলি সম্পর্কেও জ্ঞানলাভ করা যাবে এই সেমিনার থেকে৷
সাইবার ক্রাইম সাধারণত কত ধরনের হয়?
প্রথমত, কারও ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক করে অনৈতিক কাজকর্ম করা৷ দ্বিতীয়ত, ফেসবুক প্রোফাইল থেকে কারও ছবি চুরি করে ভুয়া প্রোফাইল তৈরি৷ তৃতীয়ত, কোনও মহিলার ছবি ‘সুপার ইমপোজ’-এর মাধ্যমে বিকৃত করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে দেওয়া৷ চতুর্থত, কোনও সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করে অশ্লীল ছবি, পোস্ট দেওয়া বা বেআইনি কার্যকলাপ করা৷ কারও মেল হ্যাক করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য জেনে নিয়ে আর্থিক প্রতারণা৷
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এর আগে একাধিকবার হ্যাক হয়েছিল৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটটির নেভিগেশন বারে অ্যাডমিশনের ভিতরে ‘রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন’ বিষয়ক লিঙ্কে ঢুকলেই খুলে যাচ্ছিল পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইট৷ ওই ওয়েবসাইটটির মধ্যেই ছিল আরও অন্যান্য নীল ছবির ওয়েবসাইটের লিঙ্ক৷ তারও আগে ‘হোক কলরব’ আন্দোলনের সময়ে প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তীর ভুয়া বক্তব্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়৷ সেক্ষেত্রে ক্যাম্পাসে পুলিশি হানার ঘটনায় অভিজিৎবাবু ক্ষমা চেয়েছেন বলে ওয়েবসাইটে একটি পোস্ট করা হয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পরে জানানো হয় ওই বয়ান অভিজিৎবাবুর নয়৷ ওয়েবসাইটটি হ্যাক করা হয়েছে৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে৷ এছাড়াও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটও হ্যাক হয়েছে বহুবার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.