সৌরভ মাজি, বর্ধমান: রাজা নেই, রাজতন্ত্রও নেই। তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলার আরাধনা হয়ে আসছে। মহানবমীতে রীতি মেনে পূজিত হয় ৯ জন কুমারী। সোমবার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে নবমীতে কুমারী পুজো দেখতে প্রচুর ভক্তসমাগম হয়েছিল। অষ্টমীর দুপুর থেকে রাত গড়িয়ে নবমীর সকাল পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু নবমীতে কুমারী পুজো দেখতে ভক্তের কাছে তা বাধা হয়নি। দূরদূরান্ত থেকে ভিড় জমায় ভক্তের দল। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পুজোর ডালি সাজিয়ে এনে কুমারীদের কাছে অর্পণ করেন।
কথিত আছে, বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ স্বপ্নাদেশ পেয়ে চুনুরিদের কাছ থেকে দেবীকে নিয়ে এসে সর্বমঙ্গলা পাড়ায় বিষ্ণুমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেবী এখানে দশভুজা রূপে পূজিত হন। রাজ আমলের রীতি মেনে প্রতিপদের দিন কৃষ্ণসায়র থেকে ঘট এনে স্থাপন করা হয়। শুরু হয় নবরাত্রি পুজো। এখনও রাজ পরিবারের সদস্যদের নামে সংকল্প করে দেবীর পুজো শুরু হয়।
আগে এখানে মহাষ্টমীতে কামান দেগে সমস্ত আচার পালন করা হত। মন্দিরের সামনের বটতলায় থাকত সেই কামান। তার তোপধ্বনি শুনে মন্দির ও শহর এবং শহর সংলগ্ন বিভিন্ন পুজোয় অষ্টমীতে সন্ধিপুজো হত। বেশ কয়েকবছর আগে দুর্ঘটনার পর কামান দাগা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে সেই কামানতলায় আজও প্রতীক হয়ে বিরাজমান সেই ঐতিহ্যের কামান। এখন আর কামান দাগা হয় না। দেবী সর্বমঙ্গলা পুজোয় মহানবমীতে কুমারী পুজোরও রীতি রয়েছে। ৯ জন কুমারীকে এদিন দেবী রূপে পুজো করা হয়। আগে সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত ছাগ, মেষ ও মহিষ বলিদানের প্রথা ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে এই মন্দিরে পশুবলি প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বদলে ছাঁচি কুমড়ো বলি দেওয়া যায় এখানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.