Advertisement
Advertisement
Durga Puja

সুন্দরবনের সর্বহারাদের জীবনে উৎসব ফেরাতে ‘সেতু’ নির্মাণ করছে বালিগঞ্জের এই পুজো

কঠিন পরিস্থিতিতে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে শহর আর গ্রাম।

Kolkata's Samaj Sebi Sangha will make bridge between Kolkata and Sundarban in this Durga Puja | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:October 14, 2020 3:45 pm
  • Updated:October 14, 2020 3:45 pm  

এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন সমাজসেবী সংঘে পুজো প্রস্তুতি৷

সুলয়া সিংহ: ওরা কর্মে বিশ্বাসী। শহুরে বিনোদন আর দেখনদারির জীবন থেকে অনেক দূরে বাস ওদের। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে আজ ওরাও গৃহহীন-কর্মহীন। প্রকৃতির নিষ্ঠুর রূপ ওদের করেছে সর্বহারা। হ্যাঁ, বিশ্বজুড়ে অতিমারীর প্রকোপে যখন অসহায় জীবন, ঠিক তখনই বিধ্বংসী আমফান তছনছ করে দিয়েছিল সাজানো সুন্দরবনকে। ঘরছাড়া হতে হয়েছিল বহু মানুষকে। হিঙ্গলগঞ্জের মাধবকাঠির প্রত্যন্ত এলাকা সর্দার পাড়ার বীভৎস চেহারাটা দেখে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল বালিগঞ্জ সমাজসেবী সংঘের পুজো উদ্যোক্তাদের। তাই নিজেদের ৭৫ তম বর্ষে উৎসবে মেতে ওঠার গতিপথে বদল আনার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ঠিক করেন, মানবিকভাবে যেমন ওই হতদরিদ্র মানুষগুলির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন, ঠিক একইভাবে মণ্ডপসজ্জার মধ্যে দিয়েও তাঁদের কথা পৌঁছে দেবেন দিক-দিগন্তে। বালিগঞ্জের সঙ্গে মিলন ঘটবে হিঙ্গলগঞ্জের। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। হীরক জয়ন্তীতে তাই তাদের নিবেদন ‘সেতু’। নেপথ্যে শিল্পী প্রদীপ দাস।

Advertisement

Samaj-Sebi

৭৫ বছর আগে সমাজ সেবার মূলমন্ত্রেই সমাজসেবী সংঘের জন্ম। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই এবার পুজোর আয়োজকরা ঠিক করেন, সর্দার পাড়ার ৭৫টি পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন তাঁরা। পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব নেবে ক্লাব। তাঁদের এই মহৎ উদ্যোগে শামিল হয়ে শিল্পী প্রদীপ দাস তাই ঠিক করেন, মণ্ডপসজ্জার পরতে পরতেও থাকবে তাদেরই কাহিনি। সেচে জল দেওয়া থেকে তাদের দুর্যোগের আশ্রয়স্থল- সবই ফুটিয়ে তুলবেন। আর তার মধ্যে দিয়েই মহানগরী আর সুন্দরবনের ‘সেতু’বন্ধন হবে। উৎসবের আড়ম্বরে তিলোত্তমা যে তাদেরও মনে রেখেছে, এ বার্তাই দিতে চান শিল্পী। প্রদীপ দাসের কথায়, “বালিগঞ্জ স্টেশন আর হিঙ্গলগঞ্জের ফেরিঘাটের সহাবস্থানই মনে করিয়ে দেবে ওই মানুষগুলির প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ। একটা নির্মীয়মান সেতুই আমাদের বেঁধে রাখার কাজ করবে। আর এসবের মিলন ঘটবে মায়ের মন্দিরে।”

Samaj-Sebi

মৃৎশিল্পী পিন্টু শিকদার বলছিলেন, সুন্দরবনে পূজিত বনবিবি ও স্থানীয় দেবতার ছোঁয়া থাকছে মায়ের সজ্জায়। সেখানকার মাটি লেপা, খড়-কুটো দেওয়া মন্দিরের আদলেই তৈরি হচ্ছে মা দুর্গার গর্ভগৃহ। তবে একইসঙ্গে থাকছে এ শহরের মন্দিরের স্থাপত্যের ছোঁয়াও। এখানেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর অতিমারীর মতো কঠিন পরিস্থিতিতে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে শহর আর গ্রাম। পরস্পরের দুঃখ-দুর্দশা, আনন্দ-কান্না ভাগ করে হাতে হাত মিলিয়েই হবে মায়ের আরাধনা। এভাবেই নিজের সৃষ্টি দিয়ে সমাজকে একজোট হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন শিল্পী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement