ছবিতে সিংহ বাড়ির চার হাতের দুর্গা।
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ রইল কান্দির সিংহ বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।
চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: পুজো শুরু হতে না হতেই চার হাতের দুর্গা দেখতে ভিড় জমেছে খড়গ্রামের সিংহবাড়িতে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জমিদারিতে নায়েব ছিলেন মুর্শিদাবাদের কান্দির খড়গ্রাম থানার বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত বৈকুন্ঠ নারায়ণ সিংহ। তিনি ছিলেন খুবই ঠাকুর ভক্ত। পরবর্তীকালে এক সময় গ্রামের মানুষের মঙ্গল কামনায় উমার স্বপ্নাদেশ পেয়ে চার হাতের দুর্গার পূজো শুরু করেন তিনি। এখন আগের মতো পুজোর জৌলুস না থাকলেও খড়গ্রামের সিংহবাড়ির চার হাতি দুর্গা আজও এলাকা মাতিয়ে রাখে। পুজোর চারদিন মুর্শিদাবাদ তো বটেই, আশেপাশের জেলা, এমনকী, কলকাতা থেকেও চার হাতি দুর্গা দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন খড়গ্রামের কানা ময়ূরাক্ষী নদীর ধারের গ্রাম বালিয়াতে। আগে সিংহবাড়ির পুজোতে বলিদান প্রথা চালু থাকলেও এখন সেসব হয় না। তবে আগের মতো আচার, নিয়ম ও বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মেনেই পুজো হয়।
মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার খড়গ্রাম থানার বালিয়া গ্রাম। কানা ময়ূরাক্ষী নদীর ধারে এই গ্রাম নানা দিকে খুবই উন্নত। প্রাচীনকালে বুড়িমা ঠাকুরের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে গ্রামে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন প্রয়াত বৈকুন্ঠ নারায়ণ সিংহ। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো পুজোয় পূর্ব পুরুষের রীতি মেনে দেবী দূর্গা সাবেকি প্রতিমা পুজা করা হয়। বালিয়া সিংহ বাড়ির সদস্য সুখদেব সিংহের বয়স ৮৭ বছর। তিনি পারিবারিক পুজোর ইতিহাস শুনিয়েছেন। নবাব বাহাদুরের আমল থেকে এই এলাকা দুর্গা ঠাকুরানি চক নামে পরিচিত ছিল। গোটা এলাকাটিই ছিল সিংহ পরিবারের জমিদারির অংশ। এই পুজোয় ৭০ বছর আগেও তিনটে ছাগল বলি প্রচলন ছিল। এখন বন্ধ। তবে পুজো হয় নিয়ম মেনে। ডাকের সাজের এক চালের প্রতিমা। কানা ময়ূরাক্ষী নদীতে ঘট ভরার মধ্য দিয়ে প্রতিপদ তিথিতে পুজোর সূচনা হয়। পরে সপ্তমী , অষ্টমী, নবমী শেষে দশমীতে ফের কানা ময়ূরাক্ষী নদীতে গ্রামবাসীদের কাঁধে চেপে মা পাড়ি দেন কৈলাসে।
[এবার পুজোয় আপনিও দুর্গা কিংবা অসুর, জানেন কীভাবে?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.