দেবী অম্বিকা কালনা, ছবি: মোহন সাহা।
রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: দেবী অম্বিকার নামেই শহরের নাম অম্বিকা কালনা। রেল স্টেশন থেকে শুরু করে দোকানের নাম, পূর্ব বর্ধমানের এই জনপদে সর্বত্রই দেবীর উপস্থিতি। দেবীর অধিষ্ঠান সিদ্ধেশ্বরী বাড়িতে, বহুকাল ধরে দেবী অম্বিকার মন্দির এই নামেই পরিচিত। মন্দিরের গর্ভগৃহে পাঁচ ফুটের দেবী অম্বিকা নিমকাঠে নির্মিত। সারাবছরই হয় দেবীর আরাধনা. কিন্তু দ্বীপান্বিতা অমবস্যায় অত্যন্ত জাগ্রত এই দেবীর পুজো হয় আর সব কালীপুজোর মতই। তাই ফি বছর লক্ষ্মীপুজো মিটতেই স্থানীয় ধুমধামের সঙ্গে দেবীর পুজোর আয়োজন শুরু হয়ে যায়। কালীপুজোর আগের দিন হয় দেবীর অঙ্গরাগ।
রাজ্যের প্রাচীন কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম এই অম্বিকা কালনার মন্দির। তবে মন্দির প্রতিষ্ঠার সময়কাল নিয়ে ধন্দ রয়েছে গিয়েছে। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৭৩৯ খ্রিষ্টাব্দে বর্ধমানের রাজা চিত্রসেন রায় দেবী কালনার মন্দিরের সংস্কার করেন। জোড়া বাংলোর ধাঁচে তৈরি মন্দিরটি উঁচু ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। মন্দিরের বাইরের অংশে পোড়ামাটির কাজ । মন্দির চত্বরে অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত পাঁচটি শিবমন্দির। বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন যোগী অন্মু ঋষি। বিগ্রহের পদতলে শায়িত শিব। বামহস্তে খড়গ ও নরমুণ্ড।
বছরভর দেবী অম্বিকার নিত্যসেবা চলে। তবে কালীপুজোর দিন হয় বিশেষ পুজাপাঠ। সেই পুজোর আবার বিশেষ কিছু নিয়ম আছে. যেমন পুজোর সময়ে পুরোহিত ছাড়া মন্দিরে আর কেউ ঢুকতে পারেন না। পুজো করেন দু’জন পুরোহিত। সকালে শুরু হয় পুজো। দুপুর পর্যন্ত পুজো চলে। বিকেলে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। রাতে দেবীকে অন্নভোগ দেওয়া হয়। কালনার দেবীর অম্বিকার মন্দিরের পুরোহিত প্রদীপ অধিকারী, সাধন ভট্টাচার্য, কাজল ভট্টাচার্যরা বলেন,” সমগ্র কালনার মানুষের বিশ্বাস, সবসময়ই এলাকার মঙ্গল করে চলেছেন দেবী অম্বিকা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.