স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি নীতির বিরুদ্ধাচরণে এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনা!
বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া খসড়া বিধিতে এমনটাই উল্লেখ রয়েছে বলে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর৷ নয়া বিধির এই শর্ত ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরমহলে৷ বিধির খসড়ায় ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী৷ সোমবার আচার্যর স্বাক্ষরিত বিধি এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ ওই বিধি এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠকে অনুমোদন পেলে তা আইনে কার্যকর করা হবে৷ নয়া বিধি অনুযায়ী, কোনও অধ্যাপক, আধিকারিক বা অশিক্ষক কর্মী যদি সরকারি নীতির অনৈতিক প্রচারে যুক্ত থাকেন, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে৷ এটিকে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ বলে মনে করা হবে৷ এছাড়াও তাঁদের আচরণ যদি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সরকারের পক্ষে ক্ষতিকারক মনে হয়, সে ক্ষেত্রেও শাস্তি হতে পারে৷
কী কী শাস্তির নিদান রয়েছে?
সূত্রের খবর, শো-কজ, চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদোন্নতি ও বেতনবৃদ্ধি বন্ধ করে দেওয়া, পদ থেকে অবনতি, কম্পালসারি অবসরগ্রহণের মতো শাস্তির সম্ভাবনা রয়েছে৷ অধ্যাপকদের শাস্তিপ্রদানের বিষয়টি দেখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস৷ কর্মচারীদের ক্ষেত্রে শাস্তির বিষয়টি দেখার দায়িত্ব থাকছে রেজিস্ট্রার প্রদীপকুমার ঘোষের উপর৷ নয়া বিধি নিয়ে রেজিস্ট্রার জানান, এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠকে আলোচনা হবে৷ আগামী ইসি বৈঠকে বিধি পেশ করা হতে পারে৷ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগে এ প্রসঙ্গে মতামত জানাক, তার পর মন্তব্য করব৷” উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা ফেরাতেই বিধিতে শাস্তির উল্লেখ রয়েছে৷ প্রাথমিকভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ আগামিদিনে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতেও এমন শর্ত রাখার কথা ভাবা হচ্ছে৷
এদিকে যাদবপুরে এহেন বিধি ঘিরে জোর বিতর্ক ছড়িয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন অধ্যাপক ও কর্মীদের একাংশ৷ রয়েছে ভিন্নমতও৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা)-র সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জনা গুপ্ত জানান, “সরকার যেহেতু টাকা দেয়, তাই স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে মত শিক্ষামন্ত্রীর৷ এটা তারই প্রতিফলন৷ বিধিটি দেখার জন্য আমাদের কাছে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ নয়া শর্তগুলি নিয়মবিরুদ্ধ কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ আগামী ১২ আগস্ট সংগঠনের বৈঠক রয়েছে৷ সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে৷”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবকুপা চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক রুবি সাঁইয়ের কথায়, বিধি এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ খসড়াটি সমস্ত অধ্যাপক, অশিক্ষক কর্মী ও আধিকারিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে৷ বিধিটি ভালভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিনয় সিং বলেন, সমাজের সর্বত্র একটা বাঁধন রয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুশাসনের ক্ষেত্রেও তা প্রয়োজন৷ তাই এই নিয়মে সমস্যা হতে পারে বলে মনে হয় না৷ বিধিটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ যদি কেউ এর দ্বিমত হন, সেক্ষেত্রে তা জানানোর সুযোগ রয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.