সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছেন তিনি। কিন্তু বরাত জোরে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। জঙ্গিহানার ছবি ভুলবশতও কোনও সংবাদমাধ্যমে বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে দেখতে চান না যাকপো বিয়নি। তাঁর স্মৃতিতে ঢাকা এবং গুলশনের ভাল মুহূর্তগুলোকেই বাঁচিয়ে রাখতে চান ইতালির এই শেফ।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়নি জানিয়েছেন, গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ আর্টিসান বেকারিতে ডেসার্ট শেফ ছিলেন তিনি। জঙ্গি হামলার সময় অতিথিদের টেবিলে খাবার পরিবেশনের তদারকিতে ছিলেন বিয়নি। আচমকা রেস্তোরাঁয় ঢুকেই এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। এক মুহূর্তও সেখানে অপেক্ষা না করে তিনি ছাদের দিকে প্রাণপণ ছুটতে শুরু করেন। ছাদে পৌঁছে তিনি পাশে কোনও বাড়ি আছে কিনা তারই খোঁজ করছিলেন। ঠিক সেই সময়ই পাশে একটি বাড়ির ছাদ লক্ষ্য করে লাফ দেন তিনি। প্রায় একতলার সমান দুরত্ব তিনি লাফিয়েছিলেন কেবল প্রাণের ভয়ে।
বিয়নি জানিয়েছেন, ততক্ষণে রেস্তোরাঁর মধ্যে গুলি চলার আওয়াজ শুরু হয়েছে। চরম আতঙ্কের মধ্যে প্রতিবেশী বাড়ির লোকেদের কাছে সাহায্য চান তিনি। খুব স্বাভাবিকভাবেই চরম আতঙ্কেই ছিলেন ওই বাড়ির লোকজন। তবুও তাঁকে তাঁরা আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং লুকিয়ে রেখেছিলেন।
শনিবার সকালে সেনাবাহিনী আর্টিসান রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি নিকেশ করলে, তারপর বাড়ি থেকে বের হন বিয়নি। জরুরি দু’একটি জিনিস এবং পাসপোর্ট নিয়ে সোজা এয়ারপোর্টের দিকে রওনা দেন তিনি। এরপর সোজা ফ্লাইট ধরে ব্যাংকক চলে যান।
আজ, সোমবার ইতালি পৌঁছবার কথা রয়েছে তাঁর।
প্রসঙ্গত, ৩৪ বছরের বিয়নি-সহ মাত্র দু’জন ইতালীয় এই হামলায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। তবু এতকিছুর পরেও জঙ্গি হামলার কথা মনে রাখবেন না বিয়নি। ঢাকায় কাটানো সুন্দর মুহূর্তগুলিকেই স্মৃতিতে রেখে দেবেন তিনি। ভয় দেখিয়েও আইএস জঙ্গিরা তাঁর মনে কুপ্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে না। এখানেই হয়তো বহু সাধারণ মানুষ আইএস-এর বন্দুকের নলের কাছে হেরে গিয়েও জিতে যায়। এভাবেই হয়তো সব চোখ রাঙানি ভুলে নতুন করে সব ভালর স্বপ্ন দেখা যায়!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.