Advertisement
Advertisement

বাগদাদ বিস্ফোরণে ইরাকে ৩ দিন রাষ্ট্রীয় শোক

মৃতদের মধ্যে অসংখ্য শিশু ও কিশোর রয়েছে৷

Iraq Declares Three Days Of National Mourning As Baghdad Bombing Toll Rises To 125
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 4, 2016 12:45 pm
  • Updated:July 4, 2016 12:54 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইএস জঙ্গিদের রক্তপিপাসার আরও একটি নমুনা৷ ফের রক্তের বন্যা বইল পবিত্র রমজান মাসে৷ ইরাকের বাগদাদে শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় সপ্তাহান্তে জোড়া বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২৫৷ মৃতদের মধ্যে ২৫ শিশু ও অন্তত ২০ জন মহিলা রয়েছেন৷ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট৷ সিএনএন জানিয়েছে, হামলায় জখম হয়েছেন কমপক্ষে দুই শতাধিক৷ জখমদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ ফলে বাড়তে পারে নিহতের সংখ্যাও৷ বাগদাদ বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে ইরাকে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে৷

ঢাকার নৃশংসতার রেশ কাটেনি এখনও৷ আর্টিজান রেস্তোরাঁয় রক্তে ভাসা মেঝেতে লুটিয়ে থাকা ক্ষতবিক্ষত শরীরগুলোর ছবি দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ৷ হামলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে ইসলামিক দুনিয়াতে৷ কিন্তু এর মধ্যেই ফের বাগদাদে শিয়া মুসলিমদের লক্ষ্য করে মরণকামড় দিল মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমশ জমি হারানো ইসলামিক স্টেট৷ রীতিমতো যুক্তি দেখিয়ে বুক বাজিয়ে হামলার দায় নিয়েছে তারা৷ জঙ্গিরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, রমজান মাসে জেনেবুঝেই ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে৷ শিয়া মুসলিমদের হত্যা করাই ছিল তাদের লক্ষ্য৷ সেই লক্ষ্যে সফল হয়েছে তাদের মুজাহিদরা৷ ইসলাম ধর্মকে ‘নিষ্কলুষ’ করতে বদ্ধপরিকর তারা৷ বাগদাদের হামলা সেই চেষ্টারই অঙ্গ৷

Advertisement

রবিবার যখন ঘটনাটি ঘটে তখনও ভোরের আলো ফোটেনি৷ রোজা শুরুর আগে সেহরি অর্থাত্‍ সূর্যের আলো ফোটার আগে খাবার কিনতে পথে নেমেছিলেন বাগদাদের কারাদা অঞ্চলের মানুষজন৷ ফলমূল ও অন্যান্য খাবারের পসার সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানিরাও৷ ভোরবেলাই জমজমাট হয়ে উঠেছিল বাজার চত্বর৷ এমন সময়ই ঘটে যায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হঠাৎই একটি গাড়ি তীব্র বেগে ধেয়ে আসে বাজার এলাকার দিকে৷ তারপরেই ঘটে যায় বিস্ফোরণ৷ কারাদার এই গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন শতাধিক৷ দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে এর ঠিক মিনিট সাতেক পরেই৷ পূর্ব বাগদাদের আরও একটি শিয়া অধ্যুষিত এলাকায়৷ কারাদার মতো জোরালো বিস্ফোরণ না হলেও দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হয় অন্তত ২০ থেকে ৩০ জনের৷ জখম হন কমপক্ষে ৫০ জন৷ পুলিশ জানিয়েছে, জনবহুল বাজার এলাকায় জঙ্গিদের রাখা ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি ফেটেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে৷

পরপর দু’টি বিস্ফোরণের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্হলে পৌঁছয় পুলিশ ও দমকল বাহিনী৷ ঘণ্টাখানেক পরে বিস্ফোরণস্হল পরিদর্শনে আসেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোমাত্র নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাঁকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা৷ আল আবাদিকে ‘চোর’ বলেও সম্বোধন করে স্হানীয়রা৷ দেশের রাজধানীতে এতবড় হামলা হওয়ার পরও উদ্ধারকার্য শুরু হতে প্রায় একঘণ্টা দেরি হয়৷ এর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ৷

এক সপ্তাহ আগেই ফালুজা শহরকে আইএসের কবল থেকে পুরোপুরি মুক্ত বলে ঘোষণা করে ইরাকি সেনাবাহিনী৷ কিন্তু, যতবারই ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের কবল থেকে ইরাকের অধিকৃত অংশ মুক্ত করার ঘোষণা করেছে ইরাক প্রশাসন, ততবারই পাল্টা নাশকতা চালিয়ে আইএস জঙ্গিরা বুঝিয়ে দিয়েছে ইরাকের উপর থেকে তারা তাদের অধিকার ছাড়বে না৷ এদিনের জোড়া হামলাকেও কোণঠাসা ও জমি হারানো ইসলামিক স্টেটের শক্তি প্রদর্শন বলেই মনে করছেন গোয়েন্দাদের একাংশ৷ প্রশাসন জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে অসংখ্য শিশু ও কিশোর রয়েছে৷ জখমদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে ইরাক প্রশাসন৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement