সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে শুরু করে দেশের উত্তর-পূর্বে, লাদাখ থেকে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ- দেশের প্রতিটি স্পর্শকাতর সীমান্তে নিঃশব্দে সেনার উপস্থিতি ও পেশীশক্তি বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক৷ উত্তর-পূর্বে মোতায়েন করা হচ্ছে অতিরিক্ত সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান, লাদাখে বাড়ানো হচ্ছে ট্যাঙ্ক ও পদাতিক সেনার সংখ্যা৷ সবমিলিয়ে ‘প্রতিবেশী’ চিন বা পাকিস্তানের নিরন্তর ‘হুমকি’ মুখ বুজে মেনে নেওয়ার দিন যে এবার শেষ, মুখে না বললেও হাবেভাবে এ কথাই বুঝিয়ে দিতে চাইছে ভারত৷
অরুণাচল প্রদেশ, কাশ্মীরে- বারবার সীমান্ত লঙ্ঘন করে অনুপ্রবেশ করছে পাক রেঞ্জার্স, চিনা সেনা! এতদিন ভারত কূটনৈতিক স্তরে এ নিয়ে বারবার অভিযোগ করে এসেছে৷ কিন্তু স্বাধীনতা দিবসেও সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে৷ লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাখঢাকের দিন শেষ৷ প্রকাশ্যেই সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে ইসলামাবাদকে তুলোধোনা করেছেন মোদি৷ আর মোদির বডি-ল্যাঙ্গুয়েজই অক্সিজেন জুগিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে৷ পাকিস্তান ও চিনকে উচিত শিক্ষা দিতে কোমর বেঁধে নামছে সেনা৷
চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মিকে সীমান্তে রুখে দিতে অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং জেলায় পাসিঘাট অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড (এএলজি) চালু করে দিচ্ছে ভারত৷ ওই গ্রাউন্ড থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ‘অ্যাসেট’ সামরিক হেলিকপ্টার ও এয়ারক্রাফট পরিচালনা করবে ভারতীয় বায়ুসেনা৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজু ও ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড চিফ এয়ার মার্শাল সি হরি কুমার আগামী শুক্রবার এএলজি-র উদ্বোধন করবেন৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক কর্তা নাম গোপন রেখে জানিয়েছেন, দেশের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লে এএলজি শুধু পাল্টা আঘাত হানতেই সাহায্য করবে না, বরং গোটা ইস্টার্ন ফ্রন্টে ভারতীয় বায়ুসেনার একাধিপত্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে৷
কৌশলগত ভাবে চিন-পাকিস্তানকে আরও চাপে রাখতে শতাধিক ট্যাঙ্ক আর বিশাল বাহিনী মোতায়েন করে অরুণাচলকে দুর্ভেদ্য বানানোর কাজ ইতিমধ্যেই সারা। এ বার কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল ভারতীয় বাহিনী। ‘অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড’ তৈরি হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য। এই বিমানঘাঁটির অবস্থান এমন একটি এলাকায়, যেখান থেকে চিনা সেনার লাইফ লাইন যে কোনও সময় স্তব্ধ করে দেওয়া সম্ভব।
শুধু অরুণাচল প্রদেশে নয়, লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি ও ন্যমা অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডকেও তৈরি রাখছে সেনাবাহিনী৷ সেনাবাহিনীর এক কর্তা জানিয়েছেন, জিরো, অ্যালং, মেচুকা, ওয়ালং-এর পর পাসিঘাট হতে চলেছে দেশের পঞ্চম অপারেশনাল অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড৷ ডিসেম্বরের ৩১ তারিখের মধ্যে টুটিং ও আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে তাওয়াং এএলজি-ও অপারেশনাল হয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন ওই সেনাকর্তা৷ একই ভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছে মন্ত্রক৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.