বিশাখা পাল: সুপ্রিম কোর্ট তৃতীয় লিঙ্গকে আইনি মর্যাদা দিয়েছে অনেকদিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও তাঁরা সমাজে সহজে গ্রহণযোগ্য নয়। রূপান্তরকামীরা নামেই আইনত স্বীকৃত। কিন্তু বাস্তব চিত্র অনেক আলাদা। আইন আইনের পথে চলেছে। কিন্তু সাদা মনে আজও কেউ তাদের উপস্থিতি মানতে পারে না। কোনও শুভকাজে তাঁদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। সমাজকে বদলানোর সেই সিঁড়িতে এবার একধাপ উঠলেন উপাসনা চট্টোপাধ্যায়। রূপান্তরকামীদের সমাজে গ্রহণযোগ্য করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিল শীলপাড়া বড়বাগান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন।
[ পঞ্জিকা নয়, এই বাড়ির পুজোয় মায়ের নির্দেশে বলি সম্পন্ন হয় ]
সমাজের ভ্রান্ত ধারণা লিপিবদ্ধ করতে গেলে একটা মোটা বই হয়ে যাবে। ওই বইয়ের একটা অধ্যায়ে অবশ্যই থাকবে তৃতীয় লিঙ্গের কথা। সেখানে লেখা থাকবে রূপান্তরকামীরা নাকি প্রকৃতিবিরুদ্ধ। প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে নিজেদের লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন তাঁরা। কিন্তু এই ধারণা যে সমীচিন নয়, তা স্পষ্টভাবে নিজের কারুকাজে ফুটিয়ে তুলেছেন উপাসনা। আর্ট কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। কিন্তু তাঁর ভাবনা অনায়াসে টেক্কা দিতে পারে অভিজ্ঞ কোনও শিল্পীকে।
মণ্ডপ সেজেছে গজ, লাল ওষুধ, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে। কেন এমন জিনিস মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করেছেন শিল্পী? উপাসনা জানালেন, এটি তাঁর দ্বিতীয় থিম ভাবনা। তাই একটু অন্যভাবে ভাবনাকে বাস্তবে আনতে চেয়েছিলেন তিনি। রূপান্তরকামীদের ক্ষেত্রে কাপড় অন্যতম বিতর্কিত বিষয়। এর মধ্যেই তাঁদের স্বাধীনতা বেঁধে রাখার প্রবণতা বিদ্যমান। তাই বিশেষ করে এটিই বেছেছেন তিনি। থিমেরই প্রতিফলেই তৈরি হয়েছে আবহসংগীতও। তবে বিশেষ কোনও রাগ বা সুর এখানে ব্যবহার করা হয়নি। নিত্যদিনের শব্দকেই আবহসংগীতের রূপে বাজানো হবে। এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে রেডিও, চোং ইত্যাদি। মণ্ডপের পাশাপাশি প্রতিমার মধ্যেও রয়েছে রূপান্তরকামিতার ছোঁয়া। উপাসনাই গড়েছেন প্রতিমা।
এমন এক অভিনব ভাবনার বহিঃপ্রকাশ হয়েছে মহালয়ায়। সেদিন মহিষাসুরমর্দিনীর চোখ আঁকেন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল হবে পুজোর উদ্বোধন। সর্বসমক্ষে আসবেন চিন্ময়ী উমার রূপান্তরকামী রূপ।
[ দেশ পেলেও দুর্গা আরাধনার অধিকার এখনও অধরা চরমেঘনাবাসীর ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.