Advertisement
Advertisement

ইতিহাস গড়ে প্রথমবার ইউরোর শেষ চারে ওয়েলস

ওয়েলস-৩( উইলিয়ামস, রবসন-কানু, ভোক্স)আরও পড়ুন:ময়নাগুড়িতে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠি, কাঁদানে গ্যাসশীতলকুচি কলেজে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ‘দাদাগিরি’! পলাতক টিএমসিপির প্রাক্তন ছাত্রনেতা Advertisement বেলজিয়াম-১(নইনগোলান) Advertisement ইতিহাসের এক সোপানে দাঁড়িয়ে সামনে ছিল আর এক ধাপ এগনোর হাতছানি। ক্রিস কোলম্যানের ছেলেরা দেখিয়ে দিল, যোগ্য বলেই তাঁরা ছুঁতে পেরেছেন সে মাইলফলক। একদা বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডারের স্ট্র্যাটেজি […]

History creates, wales is in euro last four for the first time
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 2, 2016 3:57 am
  • Updated:February 28, 2019 5:06 pm  

ওয়েলস-৩( উইলিয়ামস, রবসন-কানু, ভোক্স)

বেলজিয়াম-১(নইনগোলান)

Advertisement

ইতিহাসের এক সোপানে দাঁড়িয়ে সামনে ছিল আর এক ধাপ এগনোর হাতছানি। ক্রিস কোলম্যানের ছেলেরা দেখিয়ে দিল, যোগ্য বলেই তাঁরা ছুঁতে পেরেছেন সে মাইলফলক। একদা বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডারের স্ট্র্যাটেজি ঘুম কেড়ে নিল বেলজিয়াম রক্ষণের। অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এককালের সেরা ফরোয়ার্ড  দেখে গেলেন, হাজারো চেষ্টা সত্ত্বেও কিছুতেই গোলমুখ খুলতে পারল না তাঁর ছেলেরা। আর এই পারা, না-পারার মাঝেই ফুটবলের ইতিহাস পৌঁছে গেল নতুন একটা অধ্যায়ে। বিপন্ন উইলমটসের বেলজিয়ামকে ৩-১ গোলে পরাস্ত করে যখন প্রথমবার ইউরোর শেষ চারে পৌঁছনোর টিকিট ছিনিয়ে নিচ্ছে ওয়েলস, তখন শুধু সে দেশের তো নয়, বিশ্ব ফুটবলেও তৈরি হল নয়া ইতিহাস।

এদিনের খেলা ছিল ডেভিল বনাম ড্রাগনের। একদল এখনও পর্যন্ত ইউরোর সবথেকে বড় ব্যবধানে জয় হাসিল করেছে। অন্যদল এই প্রথমবার পৌঁছেছিল ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে। ১৯৫৮-র বিশ্বকাপের পর এই কোনও বড় প্রতিযোগিতার মূল পর্বে প্রবেশ করতে3278
পেরেছিল তারা। কিন্তু঵উত্তেজনার পারদের ওঠানামা ছিল একই মাত্রায়। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ৪-০ ব্যবধানে জয়ে যতটা চাঙ্গা ছিল বেলজিয়াম, ইংল্যান্ডের সঙ্গে এক গ্রুপে থেকে টপার হয়ে শেষ আটে উঠে ততোটাই চনমনে ছিল ওয়েলস। সামনে ছিল ইতিহাসের সরণিতে এগিয়ে যাওয়ার ডাক। সেইসঙ্গে লড়াই ছিল এককালের সেরা ফরোয়ার্ড মার্ক উইলমটস বনাম এককালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার ক্রিস কোলম্যানের। দুই ক্ষুরধার ফুটবল মস্তিষ্কের স্ট্র্যাটেজিতেই জমা ছিল ম্যাচের উত্তেজনার রসদ। দেখা গেল, দুই কোচই জোর দিয়েছিলেন আক্রমণের উপর। খেলার শুরু থেকেই তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। গোটা তিনেক হলুদ কার্ড ছাড়া নকআউট পর্যায়ে যে শিল্পিত ফুটবলের প্রত্যাশা করেন ফুটবলপ্রেমীরা এদিন তাই উপহার দিলেন বেল-হ্যজার্ডরা। যদিও শেষ হাসি হাসলেন গ্যারেথ বেলরাই।

ম্যাচের শুরু থেকেই এদিন তুমুল আক্রমণ শানাতে থাকে দুই দল। গোড়াতেই গোল তুলে নিয়ে বিপক্ষকে কাবু করে দেওয়াই ছিল লক্ষ্য। কিন্তু এই ধরনের নকআউটে স্নায়ুর যুদ্ধ অন্য মাত্রা নেয়। তাই লড়াইটাও হয় জোরদার। এদিন যদিও বল দখলে ওয়েলসেরই আধিপত্য ছিল বেশি, কিন্তু খেলার ১৩ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। ওয়েলস বক্সের ঠিক বাইরে হ্যাজার্ডের পাস পেয়ে যান নইনগোলান। ধারেকাছে লাল জার্সির কেউ ছিলেন না। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নিখুঁত লক্ষ্যে গোলে বল রাখেন। পরাস্ত হন ওয়েলস গোলরক্ষক। শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি ওয়েলস। বরং আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তারই ফল মেলে কয়েক মিনিট গড়াতে না গড়াতেই। খেলার ৩১ মিনিটে সমতায় ফেরে ওয়েলস। সেট পিস মুভমেন্ট CmTx4m-XgAAc3GCথেকে উড়ে আসা বলে উইলিয়ামসের নীচু হেড জড়িয়ে যায় বেলজিয়ামের জালে।  প্রথমার্ধে খেলার ফল ১-১ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই কঠিন লড়াইয়ের প্রত্যাশি ছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। তা যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে বলাই বাহুল্য।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল তুলে নেওয়ার লক্ষ্যে ছিল বেলজিয়াম। একটা সময় রীতিমতো বেসামাল দেখায় ওয়েলস রক্ষণকে। একের পর এক আক্রমণ এসে পড়ে ওয়েলস বক্সে। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি একটাও। বেলজিয়ামের আক্রমণ দানা বেঁধেও শেষে এসে খেই হারিয়েছে। কয়েকটা ক্ষেত্রে বিপদ দেখা দিলেও তাই গোল হজম করতে হয়নি ওয়েলসকে। প্রাথমিক আক্রমণের ঝাঁঝ সামলে ফিরতি আক্রমণে গিয়েই ফায়দা তোলে ওয়েলস। খেলার ৫৫ মিনটে তিন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বেলজিয়ামের জালে বল জড়িয়ে দেন রবসন কানু। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হলেও এরপর বেশ কয়েকটা সুযোগ হাতছাড়া হয় বেলজিয়ামের। এই ধরনের খেলায় যে হাফ চান্স থেকে গোল হয়ে উঠতে পারে তা একরকম নষ্টই করে বেলজিয়াম। যার খেসারতও দিতে হল তাদের। চাপ বাড়িয়ে বেলজিয়াম যখন খেলায় সমতা ফেরাতে মরিয়া, তখনই ভোক্সের হেডে ফের গোল হজম করতে হয় তাদের। খেলার ৮৬ মিনিটের এই গোলই বেলজিয়ামের এবারের ইউরো অভিযানের কফিনে শেষ পেরেক। অন্যদিকে ওয়েলসের জন্য এই গোলই নিশ্চিত করল ইউরোর শেষ চারের ছাড়পত্র।

স্বপ্নরাজ্য বলে যদি কিছু থাকে তবে এই মুহূর্তে ওয়েলসের সঙ্গে তার তুলনা অত্যুক্তি হবে না। এতদিন তাদের ফুটবল ইতিহাসে জমা ছিল ১৯৫৮-র বিশ্বকাপের স্মৃতি। গ্যারেথ বেলরা তাঁদের দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন ইতিহাস গড়ে চলেছেন। বিশ্বের ফুটবল মানচিত্রে তারা যে আর কোনওভাবেই হীনবল নয় তা এদিন এডেন হ্যাজার্ডের ফিফা ব়্যাঙ্কিংয়ে দু’নম্বরে থাকা দেশকে হারিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে ওয়েলস। সেমিতে সামনে পর্তুগাল। নয়া ইতিহাস কি রচনা করতে পারবে ওয়েলস, নাকি সিআর সেভেন ম্যাজিকে থমকে যাবে তাদের অশ্বমেধের ঘোড়া! এই ম্যাচের পর এখন সেই লড়াইয়েরই প্রহর গোনা শুরু ফুটবলপ্রেমীদের।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement