স্টাফ রিপোর্টার: সিআইএসএফ-এর কড়া নজরদারিতে গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের ডক থেকে জলে নামল ছোট যুদ্ধজাহাজ ‘তারাসা’৷ বছরখানেক আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই জাহাজ কারখানার ভিতর থেকে পাকিস্তানে তথ্য পাচার করেছিল আইএসআই এজেন্টরা৷ এবার যে কোনও ধরনের নাশকতা ও ষড়যন্ত্র এড়াতে কড়া ব্যবস্থা নিল সিআইএসএফ ও জিআরএসই কর্তৃপক্ষ৷
বৃহস্পতিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই জিআরএসই-র ডক থেকে জলে নামল ‘ওয়াটার জেট ফাস্ট অ্যাটাক ক্রাফ্ট’৷ এই জাহাজের উদ্বোধন করেন ভাইস অ্যাডমিরাল জয়ওয়ান্ত কোড়ে ও তাঁর স্ত্রী অরুণা কোড়ে৷ জিআরএসই-র চেয়ারম্যান ও এমডি রিয়ার অ্যাডমিরাল এ কে ভার্মা জানান, নয় মাসের মধ্যে এই জাহাজ তৈরি হয়েছে৷ ছোট মাপের এই জাহাজটি প্রয়োজনে ঘণ্টায় প্রায় ৩৫ নটিক্যাল মাইল বেগে যেতে পারে৷ সমুদ্রে জঙ্গি হামলা বা চোরাচালান রোখার জন্য এই জাহাজকে কাজে লাগানো হবে বলে জানা গিয়েছে৷ শত্রূদের জাহাজ পালানোর আগেই এই দ্রুতগামী জাহাজে করে তাদের ধরে ফেলা সম্ভব হবে৷
এদিকে, এই মাসের প্রথম থেকেই এই জাহাজ কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় সিআইএসএফ৷ জিআরএসই সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি গেটে নিরাপত্তার উপর জোর দিয়েছে সিআইএসএফ৷ বাইরে থেকে কোনও দর্শনার্থী দেখা করতে এলে তাঁর বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা চলছে৷ তিনি কার সঙ্গে কী কারণে দেখা করবেন, তা লিপিবন্ধ করা হচ্ছে৷ এমনকী, কর্মীদেরও বায়োমেট্রিক গেটে পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ যেহেতু আইএসআই এজেন্ট ইরশাদ ছিল জিআরএসই-র অস্থায়ী কর্মচারী, তাই প্রত্যেক ঠিকা কর্মীর প্রবেশ ও প্রস্থানের উপরও নজরদারি চলছে সিআইএসএফ-এর৷ ঠিকা কর্মীদের দেওয়া হয়েছে বিশেষ পরিচয়পত্র৷ সঙ্গে সেটি না থাকলে তাঁকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ প্রত্যেকটি গেটের কাছে বাঙ্কারও তৈরি করেছে সিআইএসএফ৷ ভিতরে কর্মীরা কী করছেন, কেউ কোনও ছবি তুলছেন কি না, সিসিটিভির মাধ্যমে সেদিকেও নজর রাখছেন সিআইএসএফ ও জিআরএসই-র নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা৷ কোনও জাহাজের গোপন নকশা যাতে বাইরে বেরিয়ে না আসে, সেদিকেও নজর রাখছে কর্তৃপক্ষ৷
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর মাসেই উত্তরপ্রদেশ থেকে ধরা পড়ে আইএসআই এজেন্ট ইজাজ৷ তার সূত্র ধরেই কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বন্দর এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করে শিপ বিল্ডার্স বা জিআরএসই-র অস্থায়ী কর্মচারী ইরশাদ, তার ছেলে আসফাক ও ইরশাদের শ্যালক জাহাঙ্গিরকে৷ গোয়েন্দাদের জেরার মুখে ইরশাদ স্বীকার করে যে, অস্থায়ী কর্মচারী হওয়ার কারণে সে সহজেই পাকিস্তান থেকে চোরাপথে কলকাতায় আসা আইএসআই এজেন্ট ইজাজ ও ছেলে আসফাককে সহজেই জিআরএসইতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিল৷ সেই সুযোগ নিয়ে ইজাজ জাহাজ কারখানার ছবি তুলেছিল৷ সাবমেরিন বিধ্বংসী জাহাজের ছবি তুলে পাঠিয়েছিল পাকিস্তানে৷ এই ঘটনার পর কারখানায় নজরদারি বাড়ায় জিআরএসই৷ পরে এই নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় সিআইএসএফ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.