স্টাফ রিপোর্টার: নিছক আনুষ্ঠানিক ও সাংবিধানিক রীতি৷ তবু রাজ্যসভার মতো লোকসভাতেও জিএসটি সংবিধান সংশোধনী বিল পেশের দিন দলের সব সাংসদদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে হুইপ জারি করল শাসক বিজেপি ও বিরোধী কংগ্রেস৷ হইপ জারি করেছে তৃণমূলও৷ আজ, সোমবার বিলটি পাসের জন্য লোকসভায় পেশ করা হবে৷
কংগ্রেসের নেতা তথা লোকসভায় চিফ হুইপ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া রবিবার বলেছেন, জিএসটি বিল পেশের দিন লোকসভায় দলের সব সাংসদকে উপস্থিত থাকতে হবে৷ তিনি আরও বলেন, “আমরা সংবিধান সংশোধনী বিলে সমর্থন দিয়েছি এর প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে৷ জিএসটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ সরকার জিএসটি বিলে পরিবর্তনের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছে বলেই দল সেটিকে সমর্থন জানিয়েছে৷”
উল্লেখ্য, ৬৬ বছরের ভারতের সংবিধান কেন্দ্রকে অধিকার দিয়েছে শুল্ক ধার্যের৷ আর রাজ্যকে অধিকার দিয়েছে খুচরো বিক্রয়ে কর সংগ্রহে৷ বুধবার রাজ্যসভায় পাস হওয়া ১২২তম সংবিধান সংশোধনী বিলে সেই বিষয়টির সংশোধন করা হয়েছে৷ বিলে বলা হয়েছে, সংবিধানে আনা হবে পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা, অর্থাত্ এক দেশ অভিন্ন কর ব্যবস্থা৷
কংগ্রেসই প্রথম দেশে অভিন্ন কর ব্যবস্থার কথা বলে৷ ২০১১ সালে বাজেট অধিবেশনে ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম পণ্য ও পরিষেবা করের বিষয়টি বলেন৷ চার বছরে বিজেপি, সেই সময়ের প্রধান বিরোধী দল এই ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি৷ এনডিএ সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিজেদের হাতে তুলে নেয়৷ সংখ্যার জোরে গত বছর লোকসভায় বিলটি পাসও করিয়ে নেয়৷ কিন্তু রাজ্যসভায় শক্তিশালী কংগ্রেস বিলটি পাস করাতে বেঁকে বসে৷ এরপর সরকার বিরোধীদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছয়৷ বিরোধীদের দাবি মেনে তাতে কিছু সংশোধন করা হয়৷ বিজেপিও সোমবার লোকসভায় দলের সব সাংসদের উপস্হিতি চেয়ে হুইপ জারি করেছে৷
যদিও এই বিষয়কে রাজনৈতিকভাবে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ কোনও মহলই৷ কারণ নেহাত সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মানতেই এই বিলকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে লোকসভায়৷ স্বাভাবিকভাবেই লোকসভায় নতুন করে বিরোধীদের আপত্তি করার কোনও বিষয় নেই৷ তা ছাড়া লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে বিজেপিরই৷ ফলে পুরো প্রক্রিয়াটিই শাসক ও বিরোধী সব পক্ষের কাছেই নেহাত আনুষ্ঠানিক৷ সোমবার প্রক্রিয়া মেনে লোকসভায় অনুমোদন আদায়ের পরই শুরু হবে জিএসটির মূল বিল আনার আসল কাজ৷ দেশের মোট বিধানসভার ১৫টিতে পাস হতে হবে এই বিল৷
বুধবার রাজ্যসভায় বিল পাসের দিনই বিরোধিতা জানিয়ে ওয়াক আউট করে গিয়েছে এআইএডিএমকে৷ স্বাভাবিকভাবেই তামিলনাড়ুতে এই বিলের ভবিষ্যত্ কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷ যেহেতু বাম, কংগ্রেস, তৃণমূলের মতো দল বরাবরই জিএসটির পক্ষে সওয়াল করছে সেহেতু মনে করাই যায় ত্রিপুরা, কেরল, কংগ্রেস শাসিত রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় অনায়াসেই অনুমোদন পাবে এই বিল৷
রাজ্যে বিল পাসের পর তা আবার আসবে রাষ্ট্রপতির কাছে৷ রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পরই শুরু হবে মূল জিএসটির কাজ৷ মোট তিনটি জিএসটি বিল তৈরি হতে চলেছে৷ একটি সিজিএসটি অর্থাত্ কেন্দ্রের জিএসটি বিল৷ একটি কেন্দ্র-রাজ্য জিএসটি বিল৷ এবং এসজিএসটি শুধুমাত্র রাজ্যের জন্য৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.