Advertisement
Advertisement

‘গুগল’ ফিরিয়ে দিল হারানো ছেলেকে

‘গুগল’-ই খুঁজে দিল সাত বছর আগে হারানো ছেলেকে৷ ‘গুগল’-এ সার্চ করে স্কুলের পাশে জলের ট্যাঙ্ক পাওয়ায় ঠিকানা মিলল৷ বাবা পেলেন হারানো ছেলেকে৷

Google helps man to get back his son
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 12, 2016 11:56 am
  • Updated:July 12, 2016 11:56 am  

সুমিত বিশ্বাস: ‘গুগল’-ই খুঁজে দিল সাত বছর আগে হারানো ছেলেকে৷ ‘গুগল’-এ সার্চ করে স্কুলের পাশে জলের ট্যাঙ্ক পাওয়ায় ঠিকানা মিলল৷ বাবা পেলেন হারানো ছেলেকে৷
সময়টা ২০০৯ সালের নভেম্বর৷ সত্যদেব বাহাদুর নামে আট বছরের পড়ুয়া স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে ঝামেলা করে বাবার ভয়ে ট্রেনে চড়ে বসে৷ পুরুলিয়ার রেলশহর আদ্রার বাসিন্দা দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তারপর উদ্ধার হয় মহারাষ্ট্রের থানে জেলার কল্যাণ রেল স্টেশন থেকে৷ তারপর কেটে যায় সাতটা বছর৷ বাস ড্রাইভার বাবা অনেক খুঁজেও ছেলেকে পাননি৷ এদিকে বয়সের সীমা অতিক্রান্ত হওয়ায় সত্যদেবের সরকারি হোমের ঠিকানা বদলেছে৷ কিন্তু সে তার নাম ছাড়া বাবার নাম, ঠিকানা কিছুই বলতে পারেনি৷ শুধু একটাই কথা বলে এসেছে আনভরা৷ অনেক পরে তাকে কাউন্সেলিং করে জানা যায়, তার স্কুলের পাশে একটি জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে৷ সেই সূত্রে ধরেই গুগলের মাধ্যমে খোঁজ মেলে সত্যদেবের ঠিকানা৷ সোমবার রঘুনাথপুরের এসডিপিও অভিজিত্‍ বন্দ্যোপাধ্যায় হারানো সত্যদেবকে তার বাবার হাতে তুলে দেন৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের নভেম্বরে কল্যাণ রেল স্টেশন থেকে উদ্ধার হওয়ার পর থানে জেলারই উল্লাসনগরের একটি সরকারি হোমে ছিল সে৷ সেই হোমে ছয় থেকে বারো বছরের বালকরা থাকতে পারে৷ ফলে সত্যদেবের বয়স ১২ পার হতেই তার ঠিকানা হয় সেখানকারই আরেকটি হোম গান্ধী রোডের শান্তিভবনে৷ সেখানে আর পাঁচটা কিশোরের মতো বড় হচ্ছিল সে৷ হঠাৎই একদিন হোমের সুপারিনটেনডেণ্ট সন্তোষ ডি খোপরে সত্যদেবের ফাইল নিয়ে বসেন৷ তিনি সেখানে দেখতে পান তার ঠিকানা রয়েছে আনভরা৷ আনকাপাড়া৷ এই ফাইল দেখে খোঁজখবর করে জানা যায় ওই বালককে মহারাষ্ট্রের আনকাপাড়ার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার বাড়ির খোঁজ মেলেনি৷ এই ফাইল দেখার কিছুদিন পর সুপারিনটেনডেণ্ট এই কিশোরের সঙ্গে নানা কথা বলতে শুরু করেন৷ তখনই জানা যায় তার স্কুলের পাশে একটি জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে৷ এই এলাকায় রেলস্টেশনও আছে৷
মহারাষ্ট্রের সরকারি হোমের সুপারিনটেনডেণ্ট সন্তোষ ডি খোপরে বলেন, “আনভরা গুগলে টাইপ করেই বুঝে যায় এটি কোনও জায়গার নাম নয়৷ ফলে এ দিয়ে আমি নানান জায়গা ও তার পাশ স্কুলের নাম লিখে তার চারপাশে কী রয়েছে তার খোঁজ করি৷ ওভাবে খুঁজতে খুঁজতে আজ সাউথ ইস্টার্ন প্রাইমারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পাশে জলের ট্যাঙ্কের সন্ধান পাই৷” সঙ্গে সঙ্গে আজ থানার নম্বর যোগাড় করে সেখানে ফোন করেন তিনি৷ কিন্তু সেভাবে সাড়া না পাওয়ায় এই এলাকার পুলিশ অফিসার অর্থাত্‍ রঘুনাথপুরের এসডিপিওর নম্বর পান৷ সেই নম্বরে গোটা বিষয়টি জানান তিনি৷ হোয়াটসঅ্যাপে সত্যদেবের ছবি পাঠান৷ সেই ছবি নিয়ে এই স্কুলে যায় পুলিশ৷ ছবি দেখিয়ে সত্যদেবের নানা বিবরণ খুঁজে বার করেন৷ জানা যায় তার বাবার নাম ও ঠিকানা৷
কিন্তু বাস ড্রাইভার বাবা কমল বাহাদুর আদ্রার ছাইগাদার ঠিকানা বদলে ভমনকিরারীতে বাসা বাঁধেন৷ ফলে সেখানে না পেয়ে গোটা আদ্রার কমল বাহাদুর নামে খোঁজা হয়৷ তার খোঁজ মিলতেই মহারাষ্ট্র থেকে পাঠানো সত্যদেবের ছবি দেখানো হয়৷ বাবা জানিয়ে দেন এটিই তাঁর ছেলে৷ ব্যস, তারপরই বাবার ছবি তুলে হোমে পাঠাতেই সত্যদেব জানায় এই ছবিতে থাকা ব্যক্তিই তার বাবা৷ রঘুনাথপুরের এসডিপিও অভিজিত্‍ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রযুক্তিই হারানো ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে দিল৷ এই কিশোরকে মহারাষ্ট্র থেকে নিয়ে আসার পর আমরা তার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছি৷” এখন সত্যদেব অষ্টম শ্রেণির ছাত্র৷ তার যাতে এখানে ভর্তি হতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখছে পুলিশ৷ বাবা কমল বাহাদুর ছেলেকে পেয়ে তখন জড়িয়ে ধরেছেন৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement