ক্ষীরপাইয়ের ‘বড় মা’ । ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী।
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: মাকে দর্শন শুধু নয়, পুজোও করতে পারেন আপনি। একেবারে মায়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম পর্যন্ত। ফুল নেই তো বয়েই গেল। বনফুল দিয়েও হবে মায়ের পুজো। এমনকী, ধূপ জ্বালিয়ে মায়ের পুজো হতে পারে। কোনও পুরোহিতও ডাকার দরকার নেই। প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতার করাল বদনী ভয়ঙ্কর মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে চাইতে পারেন আর্শীবাদও। কেউ বাধা দেবে না। মায়ের পুজোর দিনক্ষণও মানা হয় না। সারাবছর যে কোনওদিন মায়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে সারতে পারেন পুজো। তবে প্রতি অমাবস্যার দিন আপনার কোনও অনুমতি নেই। একইভাবে অনুমতি নেই এই তিনদিনের কালীপুজোয়।
ঘাটালের ক্ষীরপাই শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরের শ্মশানে রয়েছেন মা শ্মশান কালী। যেতে পারেন পায়ে হেঁটে বা টোটো নিয়ে। শ্মশানের এক কোণে কংক্রিটের তৈরি কালী মূর্তির ভয়ঙ্কর চেহারা দেখে ভয় পাওয়াই স্বাভাবিক। মা এখানে চতুর্ভুজা। একহাতে রয়েছে মহাপৃথিবী। অন্য হাতে শান্তির প্রতীক পায়রা। আর দুটি হাতে বিশালাকার খড়গ ও নরমুন্ডু। বিরাটকায় মা শিবের বুকে এক পা আর অন্য পা মাটিতে রেখে দাঁড়িয়ে আছেন। দন্তবিকশিত, উদগত চোখ, রক্তাক্ত ঠোঁট, মিশমিশে কালো গায়ের রঙ। পাশে ডাকিনী-যোগিনীদের চেঁচামেচি। সঙ্গে নরমুন্ডু নিয়ে নৃত্য। মা এখানে নিরামিশাষি। তাই মাংস ছাড়া যা কিছু দিয়েই আপনি মায়ের পুজো দিতে পারেন। শুধু মিষ্টিতেও হবে পুজো।
মায়ের বয়স নিয়ে কথা পাড়তেই রে রে করে উঠলেন সেবাইত বাণী রায়। বললেন, ‘মায়ের আবার বয়স কী, মা মা-ই। দেখছেন না মায়ের হাতে গোটা পৃথিবী। এবার আপনি আন্দাজ করে নিন মায়ের বয়স। এই পৃথিবীর বয়স যত, মায়ের বয়সও তত।’ মাকে তিনি ‘বড় মা’ বলে ডাকেন। তবে ছোট মা কোথায়? বাণীবাবু উত্তর, ‘এই তো পাশেই রয়েছেন। কয়েক বছর আগে বন্যায় তিনি দেহ রেখেছেন। কিন্তু তিনি আছেন। মিথ হয়ে গিয়েছে ক্ষীরপাইয়ের ‘বড় মা’। মায়ের ফতোয়া, ‘পুরোহিত নয় ভক্ত নিজেই আমার পুজো করবে। শুধু অমাবস্যার দিন ছাড়া।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.