ফ্রান্স – ৫ (জিরু ২, পোগবা, পায়েত, গ্রিজম্যান)
আইসল্যান্ড – ২ (সিগরসন, বারনাসন)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাচে নামার আগে সদ্য পদত্যাগ করা ইংল্যান্ড কোচ রয় হজসনের ভূত যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছিল দিদিয়ের দেশঁকে৷ হাজার হোক, ইংল্যান্ডের মতো হেভিওয়েট একটা দলকে ইউরোর বাইরের দরজা দেখিয়ে রীতিমতো লজ্জায় ফেলে দিয়েছিল আইসল্যান্ড৷ সেই বরফের দেশের ফুটবলারদের বিরুদ্ধে লড়াইটা তাই খুব বেশি রকম আত্মসম্মানের হয়ে দাঁড়িয়েছিল ফরাসিদের কাছে৷ না, এবার আর কোনও অঘটন ঘটল না৷ গত বছর যে স্টেডিয়ামে জঙ্গি হানার আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, রবিবার সেখানে বরফ গলল৷ আর সেই সঙ্গে ২০১২ ইউরো ও ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের শেষ আট থেকে বিদায় নেওয়ার জ্বালাটাও মিটিয়ে ফেললেন জিরুরা৷ ফরাসি বিপ্লবে ‘আইস এজ’-এর অবসান ঘটল৷
ঘরের মাঠের একটা অ্যাডভান্টেজ থেকেই যায়৷ তবে এই ফ্রান্স যে যেকোনও স্থানে যে কোনও দলের রাতের ঘুম উড়িয়ে দিতে পারে তা বললে বাড়িয়ে বলা হবে না৷ ফরাসি শিবিরের সবচেয়ে ধারালো দু’টো অস্ত্র এদিনও বিপক্ষের ঘাড়ে কোপ বসালো৷ টাফ ডিফেন্স আর কাউন্টার অ্যাটাক৷ জিরুর প্রথম গোলটা হল সেই প্রতি আক্রমণ থেকেই৷ লং পাস পায়ে জমা হতেই তা জালে ঠেলে দেন জিরু৷ দলের প্রথম সারির সব ফুটবলাররা ছিলেন দুরন্ত ফর্মে৷ নিজেদের ফেভরিট খেলোয়াড়ের গোল দেখতেই তো মাঠে আসেন ভক্তরা৷ রাত জেগে টিভি-র সামনে বসে থাকেন ফুটবলপ্রেমীরা৷ দর্শকদের মনের কথা যেন আগেই পড়ে ফেলেছিলেন গ্রিজম্যানরা৷ তাই কেউই হতাশ করেননি৷
চলতি ইউরোয় আগেই ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিল আইসল্যান্ড৷ মাত্র ৩ লক্ষ ৩০ হাজার জনগণের দেশ প্রথমবার ইউরোর শেষ আটে পৌঁছেছিল৷ রবিবার স্তাদে দ্য ফ্রান্সে আরও একবার ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ফুটবলাররা৷ যাঁরা ফুটবল খেলেন নেশায়৷ পেশা তাঁদের অন্য৷ সেই দল নিয়েই ম্যাচের আগে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন আত্মবিশ্বাসী যুগ্ম কোচ হ্যালগ্রিমসন৷ বলেছিলেন, ফ্রান্সের দুর্বলতা তিনি জানেন৷ ম্যাচ শেষে হুঙ্কার মিলিয়ে গেলেও মাথা উঁচু করেই মাঠ ছাড়ল আইসল্যান্ড৷ কারণ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে রীতিমতো লড়াই করেছেন ল্যাগারব্যাকের ছেলেরা৷ চার-চারটে গোলে পিছিয়ে গিয়েও অসহায় আত্মসপর্ণন করেননি৷ বরং ঘুরে দাঁড়িয়ে দু’টো গোল শোধ করেছেন৷ আর সেখানেই সাফল্য তাঁদের৷ এই আইসল্যান্ডকে ফুটবল ভক্তরা অনেকদিন মনে রাখবেন৷ এমনকী শুরুটাও ভালই করেছিল আইসল্যান্ড৷ ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়ার ছবিটাও ছিল স্পষ্ট৷ তবে ২০ মিনিটের মধ্যে দু’টো গোল হজম করে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলে দল৷ কর্নার কিককে কাজে লাগিয়ে দুরন্ত হেডারে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন পোগবা৷
তবে এদিন ফ্রান্সের পাঁচটা গোলের মধ্যে প্রথম দু’য়ে অবশ্যই রাখতে হবে পায়েত ও গ্রিজম্যানের গোল দু’টোকে৷ বাঁ-দিক থেকে গ্রিজম্যানের বাড়ানো বল থেকে তিনজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে গোল করলেন পায়েত৷ দু’মিনিট পরই গ্রিজম্যান প্রায় মাঝমাঠ থেকে সোলো রানে এসে তিন ডিফেন্ডারকে টপকে বল চিপ করতেই এল চতুর্থ গোল৷
আইসল্যান্ড বিদায় নিয়ে শেষ চারের লড়াইটা জমিয়ে দিয়ে গেল৷ সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন৷ ইতালিকে মাটি ধরিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছেছে জার্মানি৷ ফলে ফের একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার অপেক্ষায় রইল গোটা বিশ্ব৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.