স্টাফ রিপোর্টার: সকালে কয়লাঘাটায় নিজের দফতরে যাওয়ার সময় হাওড়া লঞ্চ ঘাটে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ হঠাৎই দেখতে পান একটি অল্পবয়সি ছেলে প্রায় মাঝ গঙ্গায় চলে গিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে৷ পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যাচ্ছে না৷ এই দৃশ্য দেখে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি প্রাক্তন সোনাজয়ী সাঁতারু সুরজিৎ ঘোষ৷ জুতো ও জামা-প্যান্ট ছেড়ে ঝাঁপ দেন গঙ্গায়৷ হাবুডুবু খাওয়া ছেলেটিকে চুলের মুঠি ধরে তুলে পাড়ে নিয়ে আসেন তিনি৷
ততক্ষণে জল খেয়ে জ্ঞান হারিয়েছে ছেলেটি৷ আধঘণ্টা পর বছর বাইশের ছেলেটির জ্ঞান আসে৷ সে জানায় তার নাম পীযূষ ময়রা৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি. এস. সি. অঙ্ক অনার্সের ছাত্র সে৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরে বাড়ি তার৷ এ দিন জ্ঞান ফেরার পর সে বার বারই বলতে থাকে অঙ্কে নম্বর ৯৮ শতাংশ এসেছে৷ একশো শতাংশ আসেনি৷ জানা যায়, এ দিন পীযূষ প্রথমে লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে কলেজ স্ট্রিটে বই কিনতে যায়৷ তারপর সেখান থেকে সোজা হাওড়া চলে আসে৷
এ দিকে পীযূষকে যিনি এ দিন প্রাণে বাঁচিয়েছেন সেই সুরজিৎবাবু একজন সাঁতারু৷ তিনি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১২টি সোনা জিতেছেন তিনি৷ বাংলার হয়ে সাঁতার কেটে ১০৫টি পুরস্কার জিতেছেন৷ বর্তমানে হাওড়ার বাসিন্দা সুরজিৎবাবু কয়লাঘাটায় ইস্টার্ন রেলের অফিসের সুপারিন্টেনডেন্ট৷ শুধু একজন সাঁতারুই নয়, এর বাইরেও রয়েছে তাঁর অন্য পরিচয়৷ তাঁর দাবি, গত ৩২ বছর ধরে হাওড়া লঞ্চঘাট দিয়ে যাতায়াত করছেন তিনি৷ এর আগে ২২ জনকে গঙ্গা থেকে উদ্ধার করেছেন৷
পীযূষকে উদ্ধার করে সুরজিৎবাবু তাঁকে দুপুরের খাবার খেতে দেন৷ এর পর পীযূষকে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ খবর দেওয়া হয় লক্ষ্মীকান্তপুরে তার বাড়িতে৷ কিন্তু পীযূষ কীভাবে গঙ্গায় পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ অঙ্কে ২ শতাংশ নম্বর কম পাওয়ার জন্য সে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিল না লঞ্চ থেকে পড়ে গিয়েছিল তা ধোঁয়াশায় রয়েছে৷ নম্বর কম পাওয়ার দুঃখেই সে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিল কি না তাই তদন্ত করছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.