Advertisement
Advertisement

বৈষ্ণবমতে পুজো হলেও মায়ের পাতে রুই-কাতলা! কোথায় জানেন?

জমিদারী মেজাজ আনতেই বন্দ্যোপাধ্যায়দের আদিপুরুষ দুর্গাপুজো শুরু করেন।

Fish offer to goddess Durga in Ghatal’s Banerjee family

বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে, ছবি :সুকান্ত চক্রবর্তী।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:September 20, 2018 1:50 pm
  • Updated:September 26, 2018 7:33 pm  

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল ঘাটালের আমড়াপাট গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায়দের দুর্গাপুজোর কথা।

শ্রীকান্ত পাত্র, চন্দ্রকোণা: বৈষ্ণবমতে পুজো হলেও মায়ের পাতে রুই-কাতলা থাকতেই হবে। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এই অভিনব প্রথায় দুর্গাপুজো চলে আসছে ঘাটালের আমড়াপাট গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে। ঘোষিত জমিদার ছিলেন না৷ কিন্তু ঠাঁটবাটে জমিদারের চেয়ে কম ছিলেন না আমড়াপাট গ্রামের জয়রাম বন্দোপাধ্যায়৷ ঘাটালের খড়ারপুর এলাকায় পিতল কাঁসার ব্যবসা করে ফুলে ফেঁপে উঠেছিলেন জয়রামবাবু৷ প্রায় ৫০০ বিঘা জমি কিনে তৈরি করেন প্রাসাদোপম বাড়ি৷ জমিদার না হয়েও জমিদারি আদব কায়দা, মেজাজ কোনওটিতেই খামতি ছিল না। সেসময় ঝি-চাকরে গমগম করত গোটা বাড়ি। যাকে বলে পুকুর ভরা মাছ৷ গোয়াল ভরা গরু৷ সবই অর্জন করেছিলেন জয়রামবাবু৷ সেকালে চন্দ্রকোণা জুড়ে জমিদারদের দাপট ছিল নজরকাড়া৷ প্রতিটি জমিদার বাড়িতে দুর্গাপুজোর চল ছিল৷ তাঁর বাড়িতে দুর্গাপুজো হবে না কেন?  নিজেকে অভিজাত প্রমাণ করতে বাড়িতে মায়ের পুজো শুরু করেন। জমিদারি কায়দায় দুর্গাদালান নহবতখানাও তৈরি হয়৷ সেই দুর্গাদালানে আজও দুর্গাপুজো হয়৷ কিন্তু সেই মেজাজে ঘাটতি পড়েছে। নহবতখানা যেমন দেখতে পাওয়া যায় না। তেমনই নেই ৫০০ বিঘা জমির মালিকানাও৷ তবে ৩০০ বছরের প্রথা মেনে আজও দুর্গাপুজো করেন জয়রামবাবুর উত্তরসূরিরা৷

Advertisement

[স্বপ্নাদেশে পাওয়া দুর্গামূর্তিতেই শুরু মিঠানির চক্রবর্তী বাড়ির পুজো]

বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির বর্তমান কর্তা নেপালবাবু। বংশের আদিপুরুষ জয়রাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচলিত পথেই হেঁটেছেন তিনি। ৮৪ বছরের বৃদ্ধ সঙ্গে পেয়েছেন ভাই দুলাল বন্দোপাধ্যায়কে (৭৬)। বাড়িতেই প্রতিমা তৈরি করে পুজোর আয়োজন করা হয়৷ জয়রামবাবুর নির্দেশ ছিল, বৈষ্ণবমতে মায়ের পুজো হওয়া চাই। তবে উৎসবের চারদিন উমার পাতে পোনা মাছের ঝোল থাকতেই হবে। রুই কাতলা ছাড়া মায়ের সপ্তমী থেকে দশমীর ভোগ সম্পূর্ণই হবে না। জমিদারি নিয়ে দেখনদারি কমছিল না। সেকালের জমিদাররা ঢ্যাঁরা পিটিয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের পুজোর আমন্ত্রণ জানাতেন। ঢ্যাঁরা না পেটালেও জয়রামবাবুও আভিজাত্য প্রতিষ্ঠায় কম কিছু করেননি। পুজোতে নরনারায়ণ সেবা চালু করেছিলেন। নবমীর দিন মায়ের ফলাহার৷ তাই নানা রকমের ফলমূলের সঙ্গে পাতে বিবিধ পদের তরি তরকারিরও পরিবেশন করা তয়। গ্রামের মানুষকে ডেকে পাত পেড়ে খাওয়ানোর রীতি ছিল। আজ আর এতকিছু না হলেও প্রথায় বিঘ্ন ঘটেনি। নেপালবাবু বলেন, ‘সেই জমিজায়গা তো নেই৷ আর্থিক সঙ্গতিও নেই৷ তবে প্রথা মেনে গ্রামের কিছু মানুষকে ডেকে খাওয়ানো হয়৷ বস্ত্রদান থেকে বালকভোজন সবই হয় নমো নমো করে।’

[দেবীর স্বপ্নাদেশ, মহানবমীতে কুমারী পুজো করেন কান্দির দত্তবাড়ির বউরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement