বছরভর হাজারও খবরের ভিড়৷ ভাল-মন্দর দ্বন্দ্ব পেরিয়ে সে সব খবরে নিখাদ বিশ্বাস করেছেন মানুষ৷ কিন্তু বিশ্বাস করলেই কী আর সব খবর সত্যি হয়? অন্তত বছরশেষে দেখা যাচ্ছে তা নয়৷ যা রটে তা সত্যি তো নয়, খবরও নয়৷ এ বছর বেশ কিছু খবর ছড়িয়েছিল, যা পড়ে বিশ্বাস করেছিল মানুষ৷ কিন্তু পরে দেখা গিয়েছে তা ভুয়ো৷ সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তি আর জনপ্রিয়তার কারণেই ছড়িয়েছিল সেই সব খবর৷ বেলাশেষে উঁকি সেইসব ভুয়ো খবরের বাক্সে৷
নতুন নোটে মাইক্রো চিপ
কালো টাকা রুখতে নোট বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ এনেছিলেন নতুন নোট৷ তা কালো টাকাই যদি রোখা তাহলে বড় অর্থমূল্যের নোট আনা কেন? তাতে তো কালো টাকার কারবারিদেরই সুবিধা হবে৷ রাতারাতি এর কোনও মানে খুঁজে পায়নি আম জনতা৷ ফলত রটল, নতুন নোটে নাকি আছে বিশেষ চিপ৷ যে কেউ তা নকল করতে চাইলেই ধরা যাবে৷ এমনকী মাটির তলায় লুকোলেও রেহাই মিলবে না৷ দিব্যি সে কথা বিশ্বাস করেছিলেন মানুষ৷ কিন্তু আরবিআই জানিয়ে দেয়, কোথায় কী! চিপোর গপ্পো আদতে ভুয়ো৷
ইউনিসেফের বিচারে বিশ্বের সেরা প্রধানমন্ত্রী মোদি
এমন খবর পেলে কোন ভারতবাসীর না গর্বে বুক ফুলে ওঠে! এমনিতেই মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই ভক্তদের মধ্যে ছাতির গরব ষোলআনা৷ তাতে এমন খবর৷ ফলে বিশ্বাস করতে সময় নেয়নি মানুষ৷ কিন্তু এখানেও তাল কাটল৷ হতোদ্যম হয়ে বিশ্বাসের হাল ছাড়তে হল মানুষকে৷
জনগণমন সেরা জাতীয় সংগীত
আসমুদ্র হিমাচল উদ্বেল হয়ে উঠেছিল এ খবরে৷ ব্লগ, স্ট্যাটাস, হোয়্যাটসঅ্যাপে ভেসে গিয়েছিল তেরঙা আবেগে৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় এও আসলে সত্যি ছিল না৷
১০ টাকার কয়েন নিষিদ্ধ
আচমকাই রটে গিয়েছিল ডিজিটাল পাড়ায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নাকি বাতিল করেছে দশ টাকার কয়েন৷ তাতেও রক্ষে নেই, আসল নকলের ছবিও সব বেরিয়ে পড়েছিল হু হু করে৷ দাবানলের মতো সে খবর ছড়িয়ে পড়তেই সকলের ওয়ালেটে হাত৷ যার কাছে যা আছে সব গছিয়ে দিতে চায় মানুষ৷ এদিকে খবর কি আর বাকিদেরও কানে ওঠেনি! ফলে কয়েন নিতে প্রবল অস্বীকার বাসে-ট্রামে-অটোয়৷ বাধছে তুমুল বচসা৷ শেষে আরবিআই-কে জানাতে হল, কয়েন বৈধ৷ কেউ নিতে অস্বীকার করলেই বরং শাস্তির মুখে পড়তে হবে৷
জয়ললিতার মেয়ে
তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণের পরই ছড়িয়ে পড়েছিল এ খবর৷ এক মহিলার ছবি ঘুরছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ দাবি ছিল, ইনিই নাকি জয়ললিতার কন্যা৷ সকলের চোখ কপালে৷ দত্তক পুত্র ছাড়া অবিবাহিতা জয়ললিতার কোনও সন্তান ছিল বলে কেউ কোনওদিন শোনেননি৷ ফলে দেদার রটনা, জল্পনা, ফিসফাস৷ শেষমেশ জানা গেল, ছবির মহিলার সঙ্গে জয়লললিতার দূরতমও কোনও সম্পর্ক নেই৷ শুধু মুখের সাদৃশ্যটুকু আছে এই যা৷ আসলে তিনি অষ্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা৷
দেশে নুনের ঘাটতি
রাতারাতি রটে গিয়েছিল এ খবর৷ দেশে নুনের বেজায় ঘাটতি৷ নুনের দামও আকাশছোঁয়া৷ আর কদিন পরে তা নাগালের বাইরে বেরিয়ে যাবে৷ শুনে নুন জমিয়ে রাখার হিড়িক৷ শেষমেশ প্রশাসনকে বার্তা দিতে হল, যা রটে তা সত্যি নয় মোটে৷
হোয়্যাটসঅ্যাপের ছবি আইসিসের ঘরে
এ খবর দেখে অনেকেই ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছিলেন৷ হোয়্যাটসঅ্যাপের প্রোফাইল পিকচার নামে ব্যবহার করছে আইসিস জঙ্গিরা৷ তারপরই চুরি যাচ্ছে সব তথ্য৷ ফলে যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘনাতে পারে৷ তাই প্রোফাইল পিকচার সরিয়ে দেওয়াই ভাল, বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে৷ তলায় সংস্থার সিইও এ কে মিত্তালের নাম লেখা এ খবর ছড়াতেই শিরদাঁড়ি দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু পরে দেখা গেল, মিত্তাল কোথায়, সিইও তো এ কে ভার্মা৷ ফলে ভাঙল ভুল৷ দিব্যি আবার হাসিুশি মুখে সেজে উঠল হোয়্যাটসঅ্যাপ৷
আরও পড়ুন-
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.