সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর গা থেকে অহংকারের গন্ধ বেরোয়৷ ক্যামেরা দেখলে তাঁর শরীরী ভাষা বদলে যায়৷ রোনাল্ডো স্বার্থপর৷ রোনাল্ডো দল বেঁধে কিছু করেন না৷ রোনাল্ডোর সব ব্যাপারেই ‘আমি’ ব্যাপারটা বাধ্যতামূলক৷ রাজত্ব তাঁর, রাজাও তিনি৷ প্রতিটা সমালোচনা কখনও না কখনও রোনাল্ডোরও কান ছুঁয়ে যায় নিশ্চয়ই৷ নিজের এই ‘সেলফিশ’ ইমেজ বজায় রাখেন৷ হাঁটেন, চলেন, কথা বলেন এমনভাবে যাতে আরও বেশি করে বোঝা যায়, হ্যাঁ তিনিই এই ফুটবল বিশ্বের ‘কোহিনুর’৷ পর্তুগাল কোচ এই নিয়েই আলোচনা করছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে৷
কাট টু, ওয়েলস শিবির৷ বড় ম্যাচের আগে দলে গ্যারেথ বেল যেন অনুপ্রেরণার আরেক নাম হয়ে উঠেছেন৷ কোচ বলছেন, এত অর্থের মালিক একজন কী করে এরকম মাটির কাছাকাছি থাকতে পারেন? কোচ কোলম্যান নাকি বেলের মতো মাটির কাছাকাছি মানুষ দেখেননি৷ ওয়েলসের অধিনায়ক অ্যাশলে উইলিয়ামসের কাছে, বেল মানে আদ্যন্ত টিমম্যান৷ বেল মানে ফুটবল ধর্মে দীক্ষা নিয়ে সংসারত্যাগী!
‘টিমম্যান’ নাকি ‘কোহিনুর’৷ ইউরোর শেষ চারের লড়াইয়ে কোন তারা বেশি উজ্জ্বল হবে লিয়ঁতে? প্রহর গুণতে শুরু করে দিয়েছে বিশ্ববাসী৷ সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা৷ ভেঙে যাওয়া রিয়ালে আজ কার পাশে দাঁড়াবেন তাঁরা? কার জন্য গলা ফাটাবেন? কার জয়ে উচ্ছ্বসিত হবেন?
সিআর সেভেন সম্পর্কে বলতে গিয়ে কোচ স্যান্টোস বলেন, “ও আর বেল দু’জন দুই মেরুর৷ তবে রোনাল্ডোর ব্যাপারে সবটা ঠিক নয়৷ ও কিন্তু টিমম্যান৷” তবে রোনাল্ডোকে নিয়ে সব মন্তব্য মেনে নিতে রাজি নন তিনি৷ কোচের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন শিষ্যরাও৷ তাঁদের মতে পর্তুগাল দলটাকে শরীর ধরলে সেই শরীরের আত্মা কিন্তু রোনাল্ডো৷ পর্তুগালের ফুটবলাররা রোনাল্ডোকে এখন যেন টিমম্যান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন৷ মিডফিল্ডার আন্দ্রে গোমেস বলছিলেন, “অধিনায়ক হিসাবে ও গোটা বিশ্বের কাছে উদাহরণ হতে পারে৷ জাতীয় দলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে৷”
লা লিগায় ২১টি চেষ্টায় বেল হেড দিয়ে গোল করেছেন ন’টি৷ এরিয়াল বলে বেল কতটা ভয়ানক তা পর্তুগাল কোচ স্যান্টোস ভিডিও দেখে বুঝে নিয়েছেন৷ পর্তুগিজ কোচিং স্টাফরা নাকি গত ক’দিন শুধুই ওয়েলসের ম্যাচের ভিডিও দেখেছেন৷ বিপক্ষের এরিয়াল পাস সামলে দেওয়ার লোক অবশ্য স্যান্টোসের হাতে রয়েছে৷ গত ম্যাচগুলিতে সেই দায়িত্ব সামলেছেন রিকার্ডে কার্ভালহো, পেপের মতো ডিফেন্ডাররা৷ কারভালহো এই ম্যাচে খেলবেন না৷ তাঁর জায়গায় তাই দানিলোকে দলে নেওয়ার ছক কষেছেন কোচ৷ দানিলোর স্পট জাম্প ভাল৷
কেন বেলের হেড নিয়ে এত চাপে রয়েছে পর্তুগাল শিবির? কোনও কারণ তো নেই৷ তবে কোলম্যান অন্য ছক এঁকেছেন৷ তিনি চাইছেন, এই ম্যাচে বেলই ‘টার্গেট ম্যান’ হোন৷ পর্তুগালের রক্ষণের ফুটবলাররা বেলকে নিয়ে পড়ে থাকুন গোটা সময়টা৷ আসল কাজটা তাহলে অন্যদের পক্ষে করা সহজ হয়ে যাবে৷ লিয়ঁতে যাওয়ার আগে একাই প্র্যাকটিস সারলেন বেল৷ দলের বাকিদের থেকে কিছুটা আলাদা হয়ে৷ ফিটনেস নিয়ে পড়লেন বেশি করে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে আগেই অবশ্য বলেছিলেন, “এত ম্যাচ খেলার পর পেশি শক্ত হওয়া স্বাভাবিক৷ সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে৷” রোনাল্ডোর দেখা সবসময় না মিললেও বেল কিন্তু বেশিরভাগ সাংবাদিক সম্মেলনে আসেন৷ হাসেন, কথা বলেন, বাঁকা প্রশ্নে লজ্জাও পান৷ ঠিকই বলেছিলেন স্যান্টোস৷ দু’জন একেবারে দুই মেরুর৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.