এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন কাশী বোস লেনের পুজোর প্রস্তুতি৷
সুলয়া সিংহ: করোনা কালে প্রতিমা পুজো কি আদৌ হবে? নাকি ঘটপুজোই করতে হবে! পুজোর মাস খানেক আগে পর্যন্তও এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল। তবে শেষমেশ দুর্গাপুজো আয়োজনের অনুমতি দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু একগুচ্ছ নিয়মবিধি মেনে। তাই পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এবার নিজেদের মণ্ডপ সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর কলকাতার নামজাদা পুজো কমিটি কাশী বোস লেন। দেবীঘটেই হবে পুজো। তবে সেখানে থাকছে শিল্পী পরিমল পালের শৈল্পিক ছোঁয়া।
প্রতিবার পুজোর চার-পাঁচটা দিন কাশী বোস লেনের (Kashi Bose Lane) ছবিটা ঠিক কেমন থাকে, তা নতুন করে না বললেও চলবে। প্রতিবারই নিজেদের ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই উৎসবে শামিল হয় এই ক্লাব। কিন্তু বিশ্বজুড়ে মহামারী পরিস্থিতির মধ্যে উৎসবের রং খানিকটা ফিকে। পকেটে টান পুজো কমিটিগুলিরও। তাই পূর্ব পরিকল্পনায় লাগাম টানতে বাধ্য হয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। ঠিক হয়, বাজেটে কাটছাঁট করেই হবে দায়বদ্ধতার পুজো। আর সেই সঙ্গে দাঁড়াতে হবে মানুষের পাশে। আর এই ভাবনাকেই বাস্তবের রূপ দেন শিল্পী পরিমল পাল। পুজো তো আসলে দেবীর ঘটেই হয়। তাই ঘটই এখানে মুখ্য। থিমের নামও দেওয়া হয়েছে ‘দেবীঘট’। মণ্ডপে পা রাখলেই বিরাট ঘটের দর্শন মিলবে। যা শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় অনন্য রূপ পেয়েছে। পরিমল পাল বলছিলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে একেবারে সাধারণ উপকরণ দিয়েই দেবালয় সেজে উঠছে। কাঠ, খড়, বাঁশ, দড়ি, কাপড়, গামছা- অর্থাৎ পুজোর সময় যে সমস্ত সামগ্রীর প্রয়োজন হয়, সেসবই ব্যবহার করা হচ্ছে।”
তথাকথিত থিমের চাকচিক্য থেকে এবারের মণ্ডপসজ্জা অনেকটাই ভিন্ন। আর ঠিক এই কারণেই কাশী বোস লেনের পরতে পরতে এবার শুধুই পুজোর আমেজ। থিম ও সাবেকি মিলিয়েই তৈরি হয়েছে প্রতিমা। শিল্পীর আশা, এই করোনা কালেও দর্শনার্থীরা নতুন এক শৈল্পিক ও ঈশ্বরিক পরিবেশের মেলবন্ধন উপভোগ করবেন।
আর পুজোর আচারবিধির ক্ষেত্রে কি কিছু বদল ঘটেছে? পুজো উদ্যোক্তা সোমেন দত্ত বলছিলেন, “হ্যাঁ। প্রতিবারই প্রায় তিন হাজার মানুষের জন্য মায়ের ভোগের ব্যবস্থা হয়। বিশেষে করে নবমীর দিন ৫৬ ভোগের আয়োজন হয়। এবার তা বন্ধ। বরং ভোগের কাঁচা সামগ্রী এবং কাপড় আমরা পৌঁছে দেব আমফান বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে। এছাড়া অঞ্জলি থেকে সিঁদুরখেলা, সবই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আয়োজন করা হবে।” সকলে সুস্থ থেকে যেন উৎসবের দিনগুলি কাটাতে পারেন, দেবী দুর্গার কাছে সেই প্রার্থনাই করছে কাশী বোস লেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.