শুভময় মণ্ডল: কোনও জায়গা কিংবা সামাজিক সমস্যাকে কেন্দ্র করে পুজোর থিম হয়েই থাকে। থিমপুজোর ভিড়ে তা আর নতুন করে বলার কিছুই নেই। তবে সেই প্রতিযোগিতার মাঝে এক্কেবারে অনন্য ভাবনা নিয়ে হাজির সেলিমপুর ক্লাব। তাঁর দ্বিশত জন্মবার্ষিকীতে বিদ্যাসাগরকে সম্মান জানাতে অনবদ্য উদ্যোগ ক্লাব কর্তৃপক্ষের।
মণ্ডপে ঢুকতে গিয়েই হোঁচট খেতে পারেন আপনি। কারণ, মণ্ডপের সামনে দাঁড়িয়ে যতদূর চোখ যায় চতুর্দিকে নীল জল। উত্তাল সমুদ্রের মাঝে রয়েছে জাহাজ। তার উপরেই রয়েছে একাধিক বইখাতা। তাতেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। সমুদ্র পার করে মণ্ডপে ঢুকলে দেখবেন বর্ণপরিচয়ের প্রথম ভাগ, দ্বিতীয় ভাগ-সহ নানা বই। মূলত বিদ্যাসাগরের লেখা বইতে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে মণ্ডপ। বর্ণপরিচয় দেখে আপনার মন যে ছোটবেলায় পৌঁছে যাবে, তা নতুন করে বলার কিছুই নেই। মণ্ডপের যেদিকে চোখ যাবে, সেদিকে দেখতে পাবেন নানা বর্ণ। এভাবেই বিদ্যাসাগরকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সেলিমপুর ক্লাব কর্তৃপক্ষ। থিমশিল্পী বিশ্ব ভট্টাচার্যের হাতের ছোঁয়ায় ফুটে উঠছে গোটা মণ্ডপ। তিনি বলেন,”ভেবেছিলাম কোনও মনীষীকে নিয়ে মণ্ডপ তৈরি করব। কোন ক্লাব সেই সুযোগ করে দেবে, তা বুঝতে পারছিলাম না। তবে সেলিমপুর ক্লাব জন্মদ্বিশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিদ্যাসাগরকে সম্মান জানানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আমি খুশি। ক্লাব কর্তৃপক্ষকে সে কারণে ধন্যবাদ জানাই।”
মণ্ডপ সম্পর্কে তো নয় ধারণা পেলেন। নিশ্চয়ই এবার আপনার জানতে ইচ্ছা করছে প্রতিমা কেমন হবে। মণ্ডপের মতোই প্রতিমার মাধ্যমেও বিদ্যাসাগরকে কুর্নিশ জানিয়েছে সেলিমপুর ক্লাব কর্তৃপক্ষ। একটি খোলা বইয়ের উপরেই থাকবেন মা দুর্গা। পাশে বইয়ের উপরে থাকবেন লক্ষ্মী, সরস্বতী।
বাংলা মাধ্যম স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করানোর ভাবনাচিন্তা প্রায় বাদ দিয়েছেন বাবা-মায়েরা। তার ফলে খুদেদের বর্ণপরিচয়ের সঙ্গে পরিচিতি প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। তাই সেক্ষেত্রে এই মণ্ডপ বিদ্যাসাগরের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচয়ের মাধ্যম হবে বলেও আশা উদ্যোক্তাদের। অবশ্যই পুজোর মাঝে কিছুটা সময় হাতে নিয়ে আপনার বাড়ির খুদে সদস্যর হাত ধরে ঢুঁ মারুন সেলিমপুর ক্লাবের পুজোর মণ্ডপে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.