স্টাফ রিপোর্টার: একে নিম্নচাপে রক্ষা নেই, তার উপর গঙ্গার জোয়ারের দ্বিগুণ জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কা৷ যার জেরে জলে ভাসতে হতে পারে শহর কলকাতা৷ এমনই অশনি সংকেত দিচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর ও কলকাতা পুরসভা৷ আজ, শনিবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হলেও গঙ্গার জলস্তর বাড়ায় কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে ঢুকবে গঙ্গার জোয়ারের জল৷ আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে৷ যার প্রভাব পড়তে পারে রবিবার ও সোমবার৷ বুধবারের ঝড়ে এ পর্যন্ত শহরে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচজন৷ শুক্রবার যাদবপুরের বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় আরও এক অজ্ঞাত পরিচয় তরুণীর৷ পুলিশ ওই তরুণীর পরিচয় জানার চেষ্টা করছে৷
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উত্তরে যে নিম্নচাপের পূর্বাভাস দিল্লির মৌসমভবনের তরফে দেওয়া হয়েছে তা যতক্ষণ পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে ততক্ষণ অবধি তার গতিপ্রকৃতি বোঝা মুশকিল৷ তবে এই নিম্নচাপের জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও উপকূলের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ মৌসম ভবনের পর্যবেক্ষণ রবিবার ভারী বৃষ্টি হলেও সোমবার অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবণা রয়েছে৷ তবে গত বুধবার রাতের স্মৃতি উসকে ফের নিম্নচাপ কোনও ঝড়ের রূপ নেয় কি না তা নিয়েও পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা৷ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের আশেপাশেই থাকবে বলে জানা গিয়েছে৷
অন্যদিকে এই প্রথম শহরের জল দাঁড়ানো নিয়ে আগাম পূর্বাভাস দিয়ে শহরবাসীকে সতর্ক করল কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগ৷ শুক্রবার মেয়র পারিষদ তারক সিং জানান, “শনিবার থেকে সোমবার অবধি গঙ্গার জোয়ারের জলস্তর বাড়বে৷ স্বাভাবিক জলস্তর থাকে তিন থেকে সাড়ে তিন মিটার৷ কিন্তু জোয়ারের জল বাড়বে প্রায় ছ’মিটার ও তার উপর৷ স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে গঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলির জলস্তর৷ জলমগ্ন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে একাধিক ওয়ার্ড৷ তার উপর যদি ঘণ্টা দু’য়েকের বৃষ্টি হয় তাহলে জল দাঁড়াতে পারে শহরে৷” কারণ হিসাবে মেয়র পারিষদ জানান, “২-৩ ঘণ্টা অতি বৃষ্টিতে শহরে যে জল জমে তা শহরের পাম্পিং স্টেশনগুলির মাধ্যমে গঙ্গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু জোয়ারে গঙ্গার জলস্তর বেশি থাকায় সেটি করা সম্ভব নয়৷ যার জেরে জোয়ারের জল না কমা অবধি অপেক্ষা করতে হবে৷” নিকাশি বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কিছু জেলায় অতি বর্ষণের জন্য সব নদীরই জলস্তর বেড়েছে৷ তার উপর প্রতিদিনই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে৷ ফলে গঙ্গাতে জলের স্তর বাড়ছে৷ তবুও পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরের ৭৪টি পাম্পিং স্টেশন, ৩৬৬ পাম্প ও ৪৫০ পোর্টেবল পাম্প প্রস্তত রাখা হচ্ছে৷ জোয়ারের জল কমার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে শহরের জমা বৃষ্টির জল বের করে দেওয়া যায় তার জন্য গ্যাংম্যানদেরও তৈরি রাখা হয়েছে৷ শহরের টালি নালা, রেনিয়া, চড়িয়ালখাল-সহ সব খালেরই জলস্তর বাড়বে৷ জল জমার সম্ভাবনা রয়েছে ৭১,৭২,১১১ থেকে ১১৬ ,১২৩ থেকে ১২৭, ১৩৬ ও ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ড৷ তবে নিকাশি বিভাগের এই তৎপরতায় খুশি কলকাতার বিরোধী কাউন্সিলররাও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.