স্টাফ রিপোর্টার: চওড়া হল জোটের ফাটল৷ কমিটির সদস্যপদ ধরে রাখতে শুক্রবার কার্যত কংগ্রেসকে বোকা বানিয়ে বিধানসভায় পিএসি-র বৈঠকে যোগ দিল সিপিএম৷ চওড়া হওয়া ফাটল জোড়া লাগাতে তড়িঘড়ি বিধানসভায় পৌঁছন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷ বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও সুজন চক্রবর্তীকে নিয়ে বন্ধ ঘরে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তিনি৷ তবে এদিনের টানটান এই ঘটনায় যারপরনাই খুশি পিএসি-র চেয়ারম্যান বিতর্কিত কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া৷ মান্নানকে খোঁচা দিয়ে মানসের কটাক্ষ, কংগ্রেস নেতাদের সিপিএমের কাছ থেকে ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ শেখা উচিত৷ পাশাপাশি এদিন কংগ্রেস পরিষদীয় দলের রাজভবন যাত্রাকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি৷ এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিধায়করা নিরীহ৷ কিন্তু নেতৃত্ব অসময়ে এই যাত্রা করেছেন৷ আরও চার মাস আগে করা উচিত ছিল৷
শুক্রবার বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির ষষ্ঠতম বৈঠক ছিল৷ মানস ভুঁইয়ার চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে জটিলতা থাকায় গত পাঁচটি বৈঠকে কংগ্রেস বিধায়কদের পাশাপাশি সিপিএম তথা বামেরাও একযোগে অনুপস্থিত ছিল৷ তবে গত বৈঠকে কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা হঠাৎ করে উপস্থিত হন৷ যদিও সুখবিলাসের দাবি ছিল, ভুল করে তিনি চলে এসেছিলেন৷ আর এদিন পিএসি-র বৈঠকে দুই বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী ও বিশ্বনাথ চৌধুরি যোগ দেওয়ায় জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায়৷ রাজনৈতিক মহল মনে করছে, টানা ছয়টি বৈঠকে যদি কোনও বিধায়ক অনুপস্থিত থাকেন তাহলে সেই কমিটির সদস্যপদ তাঁর আর থাকবে না৷ এটাই পরিষদীয় নিয়ম৷ মনে করা হচ্ছে, এদিন পিএসি- কমিটির বৈঠকে না গেলে কমিটির সদস্যপদ যেতে পারে সে কারণেই সুজন চক্রবর্তী ও বিশ্বনাথ চৌধুরিরা বৈঠকে যোগ দেন৷ সুজন চক্রবর্তীর অবশ্য যুক্তি, বৈঠক বয়কট করার কোনও মনোভাব বামেদের কখনওই ছিল না৷ এতদিন সময় করে উঠতে পারছিলেন না তারা৷ এদিকে, বৈঠকে বামেদের যোগ দেওয়াকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি এদিন ফের অধীর-মান্নানদের নাম না করে একহাত নেন পিএসি-র চেয়ারম্যান তথা প্রবীন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া৷ বলেন, “পিএসি-র চেয়ার বিতর্কিত নয়৷ দু-চারজন ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদীয় রীতিনীতি না বুঝে এই কমিটির চেয়ারকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি করছেন৷” মানস ভুঁইয়ার আবেদন, ১৯ আগস্ট পরবর্তী বৈঠক রয়েছে৷ আশা করি কং-বিধায়করা যোগ দেবেন৷ এদিকে, বিধানসভায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের আসা নিয়ে সুজন চক্রবর্তীর অবশ্য বক্তব্য, “সূর্যদা প্রাক্তন বিধায়ক৷ ওঁর কিছু কাগজপত্র সই করানোর ছিল৷” সবংয়ে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় মানসের পাশে দাঁড়াতে শুক্রবার রাজভবনে গিয়েছিলেন আবদুল মান্নান-সহ কংগ্রেস বিধায়করা৷ এ প্রসঙ্গে নাম না করে অধীর-মান্নানদের কটাক্ষ করে মানস ভুঁইয়া এদিন বলেন, যখন রোগী মারা যাওয়ার পথে তখন ডাক্তারের সঙ্গে শলাপরামর্শ করছেন কংগ্রেস নেতারা৷ প্রায় একই সময়ে পিএসির বৈঠক নির্দিষ্ট থাকায় রাজভবনে তাঁর পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয়নি৷ বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের বক্তব্য, “সকল বিধায়ককেই আসতে বলেছিলাম৷ মানস কেন আসেননি সেটা মানসই বলতে পারবেন৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.