ছবি: সুশান্ত পাল
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দীর্ঘ আন্দোলন। যার জেরে যোগ্যতা অনুযায়ী স্কুলের শিক্ষিকা (School Teacher)। হিসাবে কাজে যোগ দিলেন নলহাটির সোমা দাস। অসুস্থ শরীরেও কলকাতা রাজপথে সত্যের জন্য লড়াই চালিয়েছেন। লড়াইয়ের স্বীকৃতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। আদালতের নির্দেশে শনিবার বাড়ির কাছেই নলহাটি (Nalhati) ১ নম্বর ব্লকের মধুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলার শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দিলেন সোমা দাস।
অসুস্থ শরীর। ভাইকে নিয়েই স্কুলে গেল সোমা। তাঁকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী ঘটক। সোমার বাড়ি নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের পাইকপাড়া অঞ্চলের আশ্রমপাড়া। বছর চারেক আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) পরীক্ষায় বসেন তিনি। পরীক্ষায় তাঁর নাম মেধা তালিকায় থাকলেও তাঁর মতো অনেককেই চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন। প্রতিবাদে চাকরির দাবিতে বছরখানেক আগে কলকাতার রাজপথের ধারে গান্ধী
মূর্তির পাদদেশে খোলা আকাশের নিচে অবস্থানে বসেন সোমা সহ বঞ্চিত তরুণ তরুণীরা।
ক্যানসারে (Cancer) আক্রান্ত সোমা। ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা চালাতে সোমার পরিবার ঋণে জর্জরিত। তবু তিনি লড়াইয়ের মাঠ ছাড়েননি। সোমা ব্যতিক্রমী। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই তাঁকে আদালতে ডেকে পাঠান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি সোমার সঙ্গে কথা বলে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দ্রুত সোমার চাকরির নিয়োগপত্রে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মতো স্কুল সার্ভিস কমিশন সোমাকে তাঁর বাড়ির কাছে মধুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগপত্র দেয়। স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগদান করেন শনিবার। তবে লড়াই থেকে
সরছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বন্ধুদের পাশে থাকছেন। এদিন স্কুলে ছাত্র ছাত্রীরা ছিল না। তবু স্কুল ঘুরে ঘুরে দেখেন।
সোমা দাস বলেন, “চাকরি পেয়ে আমি খুশি। তবে আমার সঙ্গে আন্দোলনরত সকলে চাকরি পেলে আরও খুশি হতাম। চার বছর পর আমার প্রাপ্য চাকরি পেলাম। নিয়মিত স্কুলে আসব। কিন্তু অবসর সময়ে আমি কলকাতার রাজপথে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকব”। তাঁর মা অপর্ণা দাস জানান, মেয়ের রোগ মুক্তির জন্য বহু টাকা ঋণ
হয়ে গিয়েছে। সেই ঋণ শোধ হবে। তবে তার সঙ্গীরা একসঙ্গে চাকরি পেলে লড়াইয়ের স্বীকৃতি হত। মধুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী ঘটক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পদটি খালি হয়ে পরেছিল। সোমা
যোগ দেওয়ায় আমরা খুশি। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হবে। আমরা সোমাকে সমস্তরকম সাহায্য করে যাব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.