বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লি থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসে থাকা অশীতিপর এক বৃদ্ধের হুঙ্কারে থরহরিকম্প অবস্থা কেন্দ্রের শাসক দলের। তাঁকে শান্ত করতে বারবার ছুটে যেতে হচ্ছে অমিত শাহ (Amit Shah), জে পি নাড্ডা (JP Nadda) ও বিএল সন্তোষদের। কিন্তু তিনি নিজের অবস্থানে অনড় খাতায় বিপাকে গেরুয়া শিবির। ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার আগেই প্রতিপক্ষ দুই শিবির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পরলেও ঘরবন্দি বিজেপি (BJP) নেতারা।
শনিবার মধ্যরাতে তাঁর অর্থাৎ কর্ণাটকের (Karnataka) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার (BS Yediyurappa) বাড়ি যান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ। কিন্তু ইয়েদি অনড় থাকায় সন্তোষকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বৃদ্ধের দাবি, তাঁর ছেলে-সহ ৩৫ জন ঘনিষ্ঠকে পছন্দমতো কেন্দ্রে প্রার্থী করতে হবে। দলের অনুমোদন ছাড়াই ইতিমধ্যে ছেলে বিজয়েন্দ্রকে মাইসুরুর বরুনা কেন্দ্রে আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী করার কথা ঘোষণাও করেছেন তিনি।
২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এতটা ল্যাজে-গোবরে হতে দেখা যায়নি বিজেপিকে। কর্নাটকের বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে প্রায় হপ্তাখানেক আগে। অথচ রবিবার পর্যন্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, প্রতি পদক্ষেপে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। প্রথমে প্রচারেই নামতে রাজি ছিলেন না। খবর পেয়েই অভিমান ভোলাতে তাঁর বাড়ি যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দাবি ছিল, ছেলেকে তাঁর পছন্দের কেন্দ্রে প্রার্থী করার। সেইসঙ্গে রাজ্যে প্রচারের কৌশল কী হবে, তা ঠিক করার দায়িত্ব তাঁকে দিতে হবে।
সূত্রের খবর, এবার নয়া দাবি তুলেছেন ইয়েদি। নিজের ঘনিষ্ঠদের প্রার্থী করতে সক্রিয় হয়েছেন। রাজ্যের প্রায় ১১ শতাংশ লিঙ্গায়েত ভোট নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। সেই ভোট গেরুয়া ঝুলিতে তুলতে অন্তত ৩৫টি আসনে তাঁর পছন্দের লোকেদের প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর এই দাবি মেনে নিলে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-বিধায়ককে ছেঁটে ফেলতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে শীর্ষনেতৃত্বের কাছে। তাঁর এই দাবি মেনে নিলে গোষ্ঠীকোন্দল চরমে পৌঁছবে বলে নিশ্চিত শাহ, নাড্ডারা। তাই তড়িঘড়ি বি এল সন্তোষকে পাঠান হয়। কিন্ত লাভ হয়নি।
এখানেই শেষ নয়। জানা গিয়েছে গত পরশু কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের চাপে দলে নিতে হয়েছে ইয়েদির অত্যন্ত অপছন্দের হাসন কেন্দ্রের চারবারের জেডিএস বিধায়ক এ টি রামস্বামীকে। দিল্লিতে উড়িয়ে এনে তাঁকে যোগদান করানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে কর্নাটকের কোনও নেতা হাজির ছিলেন না। সূত্রের খবর, রামস্বামীকে প্রার্থী করা যাবে না বলে সন্তোষকে সাফ জানিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.