স্টাফ রিপোর্টার: বাংলায় বিজেপি এগোচ্ছে৷ এ রাজ্যে পার্টির ভিত তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ আগামিদিনে সরকার গঠন অসম্ভব নয়৷ বুধবার কলকাতায় দলের প্রদেশ পরিষদ সম্মেলনে এসে এমনই জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ পাশাপাশি গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের ফলাফলকে সাফল্য বলেই দাবি করে বিজেপি সভাপতি এদিন দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “একটা ভোট শেষ হলেও বিশ্রামের কোনও জায়গা নেই৷ আরও পরিশ্রম করতে হবে৷ আগামী পঞ্চায়েত ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনই প্রস্তুতি শুরু করে দিন৷ ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় ২০১৬-র নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ভোট আড়াইগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ তিনটি আসন এসেছে৷ এটা বড় সাফল্য৷” এ প্রসঙ্গে গুজরাত, কর্নাটকের উদাহরণ দিয়ে বিজেপি সভাপতি জানান, সরকার গঠনের আগে গুজরাতে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭ শতাংশ, কর্নাটকে ছিল ৮ শতাংশ৷ বাংলায় এবার ১০ শতাংশ ভোট এসেছে৷ পরের বার বাংলায় সরকার বিজেপিই করবে৷
এদিন মহাজাতি সদনে দলের প্রদেশ পরিষদ সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন অমিত শাহ৷ ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) রামলাল-সহ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সিদ্ধার্থনাথ সিং, শিবপ্রকাশ, সুরেশ পূজারি, রাহুল সিনহা, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ এদিন নিজের ভাষণে কর্মীদের চাঙ্গা করতে সংগঠন মজবুত করার উপরই মূলত জোর দিয়েছেন শাহ৷ জানিয়েছেন ২০১৯-এর নির্বাচনে বাংলায় ভাল ফল করার ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় পার্টি আশাবাদী৷ বলেন, বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে দল৷ তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, কেরল, ওড়িশা ও বাংলায় সরকার না গড়া পর্যন্ত বিজেপির কাজ শেষ হবে না৷ এবার বিধানসভায় বাংলায় গড়ে ১০ শতাংশ ভোট পেলেও উত্তরবঙ্গের বহু আসনে ২০ শতাংশ ভোট এসেছে৷ আগামী নির্বাচনে এর দ্বিগুণ ভোট পেতে হবে৷ আগেই তিনি জানিয়েছিলেন অসম মডেলকে সামনে রেখেই বাংলায় এগোবে দল৷ এদিনও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন অসমের সাফল্যের পর বিজেপির লক্ষ্য বাংলাই৷ কারণ অসমের রাজনৈতিক পটভূমির সঙ্গে বাংলার মিলও রয়েছে৷ অসমের ভোটেও অনুপ্রবেশকে ইস্যু করেছিল বিজেপি৷ সেই অনুপ্রবেশ ইস্যুতে এদিন বিজেপি সভাপতির মন্তব্য, পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি সরকার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ বাংলায় আগামিদিনে আরও ভাল ফল করার কাজটা যে কঠিনও তাও অবশ্য কর্মীদের এদিন মনে করিয়ে দিয়েছেন অমিত৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলায় কংগ্রেস আর কমিউনিস্টরা হিংসার রাজনীতি শুরু করে গিয়েছে৷ এদিন অবশ্য নিজের প্রায় ৪৫ মিনিটের ভাষণে তৃণমূল কিংবা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি বিজেপি সভাপতি৷
কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা উল্লেখ করে অমিত শাহ-র বক্তব্য, বিজেপি সরকার গরিব মানুষের জন্যই কাজ করে৷ এটাই সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে পার্থক্য বিজেপির৷ মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্হানের উদাহরণ দিয়ে তাঁর দাবি, বিজেপি যেখানে একবার সরকার গড়েছে সেখান থেকে আর কেউ বিজেপিকে হঠাতে পারেনি৷ সভায় রামলাল বলেন, জিততে পারব এই বিশ্বাস অর্জন করতে হবে নেতাদের৷ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে হবে৷ কৈলাস বিজয়বর্গীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করে এক হয়ে কাজ করতে হবে৷ সিদ্ধার্থনাথ সিংয়ের বক্তব্য, বর্তমানে বিজেপি সরকার আগের কংগ্রেস সরকারের থেকে ১৯ হাজার কোটি বেশি টাকা রাজ্যকে দিয়েছে৷ সিদ্ধার্থনাথের দাবি, অনেক কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে নিজেদের নামে চালাচ্ছে রাজ্য সরকার৷ সভা শেষে দলের কোর কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করে এদিন সন্ধ্যার বিমানে দিল্লি রওনা হয়ে যান অমিত শাহ৷ এদিনই বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দলের রাজ্য নেতাদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ছিলেন সিদ্ধার্থনাথ সিং, শিবপ্রকাশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.