ছবিতে মোটর কালীর বিগ্রহ, ছবি:রতন দে।
রাজা দাস, বালুরঘাট: জাগ্রত মোটর কালীপুজোকে ঘিরে সাজসাজ রব পড়েছে বালুরঘাটে। হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। তাই পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত মন্দিরের কর্মকর্তারা। ভূতের আতঙ্ক কাটাতেই শহরের পুরনো মর্গের সামনে এই মোটর কালি পুজোর প্রচলন হয়েছিল। তাও দেখতে দেখতে ৫০টি বছর পেরিয়েছে। ধীরে ধীরে জেলাজুড়েই এই পুজোর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। চৈত্র সংক্রান্তিতে বাৎসরিক পুজোর আয়োজন হয়। একই সঙ্গে নিয়ম মেনে কালীপুজোর অমাবস্যাতেও মায়ের পুজো হয়।
বালুরঘাট শহরের বর্তমান প্রাইভেট বাসস্ট্যান্ড এলাকার জাগ্রত মোটর কালীপুজো বেশ ঘটনা সমৃদ্ধ। গাড়ির মালিকরা এই পুজো শুরু করায় মোটর কালী নামকরণ হয়েছে। আজ যেখানে মোটর কালীর মন্দির, একসময় সেখানেই ফুটানি গঞ্জের হাট বসতো। কিছু দূরে বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে ছিল পশ্চিম দিনাজপুরের জেলা হাসপাতালটি। সেই হাসপাতালের লাশকাটা ঘরটি ছিল হাটের মধ্যেই। পরবর্তীতে জেলা হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় রঘুনাথপুর এলাকায়। লাশকাটা ঘরটিও সেখানে চলে যায়। কিন্তু ফুটানিগঞ্জের হাটের মধ্যে থাকা মর্গ ও লাশ বহনকারী গাড়ি থেকেই যায় পরিত্যক্ত অবস্থায়। অদূরে ছিল একটি প্রাইভেট গাড়ির স্ট্যান্ড। ওই এলাকায় দিনের বেলা কিছু গাড়ি চলাচল করত। সপ্তাহে একদিন বসতো জমজমাট হাট। তবে বাকি দিনগুলিতে স্থানীয় কেউই ওই এলাকায় যাওয়ার সাহস দেখাতেন না। ভূতের আতঙ্ক গেড়ে বসেছিল মানুষের মধ্যে। সেই ভয় দূর করতেই বাস মালিকরা পরিত্যক্ত লাশকাটা ঘরের সামনে মা কালীর মূর্তি স্থাপনা করেন। নাম দেওয়া হয় মোটর কালী। এরপর থেকে নিয়ম মেনে পাঁঠাবলি ও নিষ্ঠাভরে পুজোর কাজ হয়ে আসছে।
তবে মন্দিরে কালীর আরাধনার আগে ঘাটপুজো হওয়া আবশ্যিক। তাই মন্দির লাগোয়া আত্রেয়ী নদীর খাঁড়িতেই হয় ঘাটপুজো। সেখানেই নাকি ঐশ্বরিক কিছু ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন বহু মানুষ। কথিত আছে, ঘাটকালীর পুজো যেখানে হয় সেই জায়গায় সারা বছর জলমগ্ন থাকে। পরীক্ষামূলক ভাবে সেচের ব্যবস্থা করেও সেই জল সরানো সম্ভব হয়নি। অথচ খরার সময় খাঁড়ির অন্য পাশে জল শুকিয়ে রীতিমতো চড়া পড়ে যায়। বালুরঘাটের বাসিন্দাদের ধারণা, কালীর আশীর্বাদেই এটি ঘটে থাকে। তাই মোটর কালীর পুজো ঘিরে শহরে আয়োজনের কোনও খামতিই নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.