ছবি: সংগৃহীত
নিরুফা খাতুন: ‘সেই সাপ জ্যান্ত, গোটা দুই আনত?’— সুকুমার রায়ের ‘বাবুরাম সাপুড়ে’ কবিতা এই লাইনের মতোই এবার সাপ ধরতে সাপুড়ের দ্বারস্থ হয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানা। চন্দ্রবোড়া বা গোখরো নয়। অ্যানাকোন্ডা! তাও আবার সবুজ অ্যানাকোন্ডা। দেশে তন্ন তন্ন করে তাকে খুঁজেছে। কোথাও তার সন্ধান মিলছে না। এবার বিদেশে তার খোঁজ শুরু করেছে রাজ্যের জু অথরিটি। এর জন্য ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অফ জু অ্যান্ড অ্যাকুয়ারিয়াম (ডব্লুইএজেডএ) দ্বারস্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এখন আলিপুরের জন্য সবুজ অ্যানাকোন্ডার খোঁজ চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক এই সংগঠন। দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গল তোলপাড় করা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ অ্যানাকোন্ডা। নামটা শুনলেই একটা অন্যরকম কৌতূহল তৈরি হয়। ভয়ও গ্রাস করে। যাকে নিয়ে নানা জায়গায় নানা গল্পগাথা রয়েছে, হলিউড থেকে শুরু করে বাংলা চলচ্চিত্রেও তাকে নিয়ে ছবি তৈরি হয়েছে। ঘন গভীর আমাজনের অরণ্যে মৃত্যুদূত হিসেবে পরিচিত অ্যানাকোন্ডা। দৈত্যাকার এই সাপকে আলিপুরে নিয়ে আসা হয়েছিল বছর পাঁচেক আগে।
২০১৯ সালে মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্ক থেকে চারটি অ্যানাকোন্ডা নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি সবই ছিল হলুদ অ্যানাকোন্ডা। আলিপুরে তাদের বংশবৃদ্ধিও হয়েছে। এবার দর্শকদের সঙ্গে সবুজ অ্যানাকোন্ডার পরিচয় করিয়ে দিতে চাইছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সবুজ অ্যানাকোন্ডা হলুদ অ্যানাকোন্ডার থেকে দ্বিগুণ বড়। দৈত্যাকার এই সাপের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত হয়। ওজন ২৫০ কেজির মতো। প্রায় তিন বছর ধরে তাকে খুঁজে চলছে রাজ্য জু অথরিটি। একটা সময় মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্কে তার সন্ধান মিলেছিল। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। সেইমতো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, সেখানেও নাকি তারা নেই।
এর পর দেশের একাধিক চিড়িয়াখানায় তার খোঁজ চালানো হয়। কিন্তু কেউ তার সন্ধান দিতে পাচ্ছিল না। অবশেষে ডব্লুইএজেডএ-এর দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য জু অথরিটি। বিশ্বের সমস্ত চিড়িয়াখানা ও অ্যাকুয়ারিয়ামের প্রতিনিধিরা এই সংগঠনের সদস্য রয়েছেন। রাজ্য জু অথরিটি সূত্রে খবর, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার মতো জায়গায়ও সন্ধান করা হয়েছিল। কোথাও সবুজ অ্যানাকোন্ডার খোঁজ মেলেনি। অবশেষে ডব্লুইএজেডএ-র কাছে আবেদন করা হয়েছে। সবুজ অ্যানাকোন্ডা জোগাড় করে দেওয়ার দায়িত্ব এখন তাদের উপর। সন্ধান পেলে তার পরই তাকে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এদিকে নতুন অতিথির জন্য আলিপুরে ইতিমধ্যেই ঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই প্রথম নয়, দার্জিলিংয়ের জন্য সাইবেরিয়ান বাঘের সন্ধানও ডব্লুইএজেডএ দিয়েছিল। রাশিয়া থেকে প্রথমে সাইবেরিয়ান বাঘ নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ লেগে যাওয়ায় ভেস্তে যাই সেই ভাবনা। সাইবেরিয়ান বাঘের খোঁজে ডব্লএজেডএ-র দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য জু অথরিটি। তারাই সাইপ্রাস জু থেকে একজোড়া সাইবেরিয়ান বাঘ এনে দিয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.