সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখের সামনে তিন বছরের সন্তানকে গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে যেতে দেখলেন মা৷ সজোরে ধেয়ে আসা গাড়ির সামনে থেকে ছেলেকে টেনে আনার কোনও সুযোগ পেলেন না তিনি৷ বাঁচাতে পারলেন না ছেলের প্রাণ৷ এক মায়ের কাছে এর চেয়ে মর্মান্তিক আর কী-ই বা হতে পারে!
অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবারও মারুতি ভ্যানে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল ছোট্ট অভিরল রাণা৷ বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছেলেকে গাড়ি থেকে নামতে দেখছিলেন মা৷ এতদূর পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল৷ পরমুহূর্তেই ঘটল দুর্ঘটনা৷ গাড়িটি ঘোরাতে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অভিরলকে সজোরে ধাক্কা মারল চালক৷ রাস্তার এক ধারে ছিটকে গিয়ে পড়ল সে৷ চোখের সামনে সবকিছু ফ্যাকাসে হয়ে গেল তার মায়ের৷
উত্তর দিল্লির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অভিরলকে৷ সেখানেই মৃত্যু হয় তার৷ ঘটনায় গাড়ির চালক রাহুল কুমারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷
গত এক মাস ধরে এই মারুতি ভ্যানটিতেই প্লে-স্কুলে যাতায়াত করত অভিরল৷ প্রতিদিন অভিভাবকদের চোখের আড়ালে কত নিয়ম যে ভেঙেছে গাড়িটি, তা অজানাই থেকে গিয়েছিল৷ ভ্যানটিতে স্কুলের কোনও শিক্ষক থাকতেন না৷ ছিল না কোনও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও৷ এমনকী প্রয়োজনে অভিভাবকরা গাড়ির চালকের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারতেন না৷
২৮ বছরের ধৃত চালককে এর আগে অনেকবার বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য সতর্ক করা হয়েছে৷ কিন্তু কোনও লাভ হয়নি৷ চালকের এমন অসাবধানতার মূ্ল্য দিতে হল অভিরলকে৷ মঙ্গলবার সে দেখলই না, শিশুটি তখনও রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে ছিল৷ বাবা-মা তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার আগেই গাড়ি ঘোরায় সে৷ স্থানীয়রা রাহুলকে পাকড়াও করে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়৷ অভিরলের বাবা হিতেন্দ্র রাণা জানান, “অন্যান্য দিনের মতো বাড়ি থেকে কিছুটা আগেই অভিরলকে নামিয়ে দিয়েছিল গাড়ি৷ আমরা যাওয়ার আগেই ও গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়৷ আর তাতেই খানিকটা দূরে ছিটকে গিয়ে পড়ে আমার ছেলে৷” কথাগুলো বলার সময় গলা ধরে আসছিল তাঁর৷ স্কুলের তরফে বলা হয়, গাড়িটি অভিভাবকরা নিজেরা ভাড়া করেছিলেন৷ তাই গোটা ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও দায় নেই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.