নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: সরষের মধ্যেই ভূত! রবিবার যেখানে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল গুলশান হত্যাকাণ্ডে জামাত-যোগ স্পষ্ট করেছেন, সেখানে পুলিশ জানিয়েছে জঙ্গিদের মধ্যে নাকি রয়েছে শাসক দল আওয়ামি লিগের নেতা এস এম ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে রোহন ইবনে ইমতিয়াজও৷ ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে ঘুরে যেতে পারে সমগ্র তদন্তের মোড়ই৷
আমাক নিউজকে উদ্ধৃত করে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা পাঁচ মৃত জঙ্গির ছবি প্রকাশ করলে সেগুলি ঘিরেই এই বিতর্ক দানা বাঁধে৷ আমাক নিউজে হত্যার দায় কবুল করেছে আইএস৷ তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর পিছনে জামাত উল মুজাহিদিন বাংলাদেশের হাত রয়েছে বলে জানান৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হোসেন তৌফিক ইমাম ঘটনায় পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও জামাতের যোগসাজশকে দায়ী করেন৷ পুলিশ প্রধান শহিদুল হকও আওয়ামি লিগ সদস্যদের সুরে সুর মেলান৷
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত জঙ্গিদের নাম আকাশ, বিকাশ, ডন, বন্ধন ও রিপন৷ অন্যদিকে, আমাককে উদ্ধৃত করে সাইটে প্রকাশিত জঙ্গিদের ছবিতে তাদের নাম লেখা ছিল– আবু ওমর, আবু সালাম, আবু রহিম, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব আল বাঙ্গালি৷ প্রকাশিত ওই ছবি দেখে মৃত জঙ্গির বন্ধুরা তাদের শনাক্তও করে৷ তাদের এমন সব নামের উল্লেখ করে যার সঙ্গে সাইট বা পুলিশের উল্লেখ করা নামের কোনও মিল নেই৷ আর এখানেই দানা বেঁধেছে ধোঁয়াশা৷
ফেসবুক-সহ অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মৃত জঙ্গিদের ছবি দেখে মন্তব্য করে তাদের সহপাঠী-বন্ধুরা৷ জানায়, একেবারে ডানপাশে দাঁড়ানো ছেলেটির রোহন ইবনে ইমতিয়াজ৷ তার বাবা এস এম ইমতিয়াজ খান বাবুল বাংলাদেশের মোহম্মদপুর আওয়ামি লিগের শীর্ষ নেতা৷ ক্রীড়াজগতের এক অতি পরিচিত মুখও৷ বাংলাদেশ ওলিম্পিক অ্যাসোশিয়েশন ও বাংলাদেশ বাস্কেটবল ফেডারেশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তিনি৷ স্কলাস্টিকার পড়ুয়া রোহন নিখোঁজ ছিল বেশ কিছুদিন৷ নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা ছেলের সঙ্গে তোলা একটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করেন৷ মা-বাবা-সহ রোহনের একটি ছবি আমাক প্রকাশিত ছবিটির পাশে রেখে পোস্ট করে তার বন্ধুরা৷
যেখানে আওয়ামি লিগ সদস্যরা খোদ বিএনপি ঘনিষ্ঠ জামাতকে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করছে, সেখানে লিগ নেতার ছেলে রোহনের নাম এভাবে জড়িয়ে যাওয়ায় বিস্মিত সকলেই৷ সন্দেহ, আওয়ামি লিগের জঙ্গি-ছোঁয়াচ বাঁচাতেই কী আওয়ামি লিগের নেতারা জামাত-ই-ইসলামি ও বিএনপির নাম সামনে আনছেন? তবে পুলিশের প্রকাশিত মৃত জঙ্গিদের ছবি বা সাইট প্রকাশিত ছবির একটিতেও রোহন নেই বলে দাবি তার পরিবারবর্গের৷
এদিকে ফেসবুক কমেন্ট থেকেই আরও জঙ্গিদের পরিচয় জানা গিয়েছে৷ নিব্রাস সিলাম নামে ওই যুবক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক৷ আরেক জঙ্গি মির সাবিহ্ মুবাশশের স্কলাস্টিকার ছাত্র৷ পুলিশ জানিয়েছে, এরা প্রত্যেকেই ধনী পরিবারের উচ্চশিক্ষিত ছাত্র৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.