এক ক্লিকেই বাজিমাত। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল কিছু ঘটনা। বিপ্লব থেকে বিতর্ক। একটু তর্ক অনেক বিতর্ক। সরগরম হয়েছিল নেটদুনিয়া। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে শোরগোল ফেলার সেসব কীর্তিরই সালতামামিতে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়ের:
এই তরুণীর চোখের ইশারায় ঘায়েল হননি, এবছর এমন পুরুষ খুঁজে পাওয়াই দায় হয়ে উঠেছিল। কয়েক সেকেন্ডের দৃশ্য। আর তাতেই উত্তাল কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। জীবনের সব জটিলতা, সমস্যা, ব্যথা-বেদনায় মলম লাগানোর কাজই যেন করেছিল প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়েরের চোখের চাহনি। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার লুঙ্গি এনগিডি থেকে ঋষি কাপুর, প্রিয়ার চোখের ইশারায় মোচড় দিয়ে উঠেছিল প্রত্যেকেই হৃদয়ই। চলতি বছর তাই ভাইরাল হওয়ার তালিকায় দক্ষিণী অভিনেত্রী প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়েরই ছিলেন শীর্ষে।
রাহুল গান্ধী:
লোকসভায় বসে প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়েরকে মনে করিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী৷ শাসকদলকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করার পর এক্কেবারে দক্ষিণী অভিনেত্রীর স্টাইলেই চোখ মেরেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি৷ তবে রাহুলের এই একটি কীর্তিই নয়, আরও একটি ঘটনা এ বছর ভাইরাল হয়েছিল৷ সংসদীয় গণতন্ত্রের নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যেও স্বাধীনতার খোলা হাওয়ার সাক্ষী থেকেছিল গোটা দেশ। শাসক ও বিরোধী দলের দুই প্রধান সেদিন সব দ্বন্দ্ব ভুলে আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়েছিলেন। লোকসভায় অনাস্থা নিয়ে আলোচনার পরই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী জড়িয়ে ধরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে৷
ট্রেনের সামনে সেলফি:
সেলফি তুলতে রেললাইনের একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েছিলেন হায়দরাবাদের যুবক শিবা। আচমকাই দ্রুতগতিতে ছুটে আসা ট্রেনটি তাঁকে ধাক্কা দেয়। এই ভিডিও দেখে তামাম দেশবাসী চমকে উঠেছিলেন। কী হল ওই যুবকের, আদৌ তিনি বেঁচে রয়েছেন কি না, জানার কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। তারপর সামনে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই গোটা ঘটনার ভিডিওটি আসলে এডিটিং সফটওয়্যারের কারিকুরিতে বানানো। শিবা ও তাঁর বন্ধুরা লোকজনকে বোকা বানানোর জন্য ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন। বছর শেষে আরও একবার দেখে নিন সেই কীর্তি।
ব়্যাম্পে হাঁটতে হাঁটতেই সন্তানকে স্তন্যদান:
মাতৃবক্ষ থেকে নিঃসৃত হয় অমৃতরস। জন্মের পর তাই-ই হয় শিশুর খাদ্য। কিন্তু স্তন্যদানের এই সম্পর্ককেই প্রকাশ্যে বলতে যত দ্বিধা। এই দ্বিধাই কাটিয়ে উঠে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন প্রখ্যাত সুইমস্যুট মডেল মারা মার্টিন। মিয়ামি সুইম উইকে নিজের পাঁচ মাসের সন্তানকে স্তন্যদান করাতে করাতেই হাঁটলেন ব়্যাম্পে। সেই ভিডিওই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রশংসা কুড়িয়েছিল আপামর জনতার।
ডান্সিং আঙ্কল:
চলতি বছর এই আঙ্কলের নাচ মিস করেছেন, এমন কেউ কি আছেন? মনে হয় না৷ সাধারণ মানুষ তো ছাড়ুন, সলমন খান থেকে গোবিন্দার মতো সেলেব পর্যন্ত এই আঙ্কলের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল৷ ভোপালের বাসিন্দা সঞ্জীব শ্রীবাস্তবের নাচ মন ভরিয়েছিল গোটা দেশের৷ পেশায় শিক্ষক সঞ্জীববাবু একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে নেচেই প্রথম তাক লাগিয়েছিলেন৷ গোবিন্দার এই অন্ধ ভক্ত ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন৷ ডাক পড়ে রিয়ালিটি শোগুলিতেও৷ এক সাধারণের অনন্য হয়ে ওঠার সাক্ষী রইলেন জনতা৷ বছরটা যে তাঁর দুর্দান্ত কেটেছে, তা বলাই বাহুল্য৷
বিয়ের কনে:
ঠিক যেন শুভ দৃষ্টির পরের মুহূর্ত। মাথায় মুকুট। কপালে সিঁদুরের টিপ। বাঁ-হাতে জোড়া পানপাতা। তাতে মুখের নিচের অংশটুকু ঢাকা। ডান হাতে লক্ষ্মীর গাছকৌটো। খোলা চুল৷ তা সামনের দিকে নামিয়ে দেওয়া। কিন্তু বিতর্ক দানা বেঁধেছিল, বিয়ের সাজের ওই তরুণী একেবারেই নগ্ন হওয়ায়। পানপাতা ধরা হাত এবং ডান দিকে ঝুলিয়ে দেওয়া চুল ঢেকেছে বুক। লক্ষ্মীর গাছকৌটো দিয়ে কনে আড়াল করে রেখেছেন তাঁর যৌনাঙ্গ। বাঙালি কনের এই ছবি ভাইরাল হতেই প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন আলোকচিত্রী প্রীতম মিত্র৷ যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে ঘটনাও অতীত৷
টুম্পার গান:
মনে আছে গিটার নিয়ে এক তরুণী গেয়ে উঠেছিলেন, ‘পোলা ও পোলা রে তুই অপরাধী রে…/ আমার যত্নে গড়া ভালবাসা দে ফিরাইয়া দে?’ মন ভাঙার ব্যথা, প্রেম হারিয়ে ফিরে পাওয়ার আকুতির ‘ডেডলি কম্বিনেশন’ মাত করেছিল নেটিজেনদের। সে গানের একগুচ্ছ রিমিক্সও তো তৈরি হয়ে গিয়েছিল৷ বাংলাদেশের বাসিন্দা টুম্পার এ গানই ভাইরাল হতে বিশেষ সময় নেয়নি।
মোমো চ্যালেঞ্জ:
ব্লু হোয়েলের পর এবছর প্রাণঘাতী গেমে পরিণত হয়েছিল মোমো চ্যালেঞ্জ৷ বছরের মাঝামাঝি সময় গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল মোমো গেমের আতঙ্ক। অচেনা নম্বর থেকে আসছিল একটি মেসেজ। লেখা, ‘হাই, আমি মোমো।’ সেই মেসেজের উত্তর দেওয়ার অর্থই মোমোর ফাঁদে পা দেওয়া। তবে পরবর্তীকালে শোনা যায়, ব্যক্তিগত নথি হাতানোই লক্ষ্য ছিল মোমোর। বছরশেষে সে ভয় থেকে মুক্ত আমআদমি।
স্বরা ভাস্কর:
‘বীরে দি ওয়েডিং’ ছবিটার কথা নিশ্চয়ই মনে আছে৷ আর স্বরা ভাস্করের সেই দৃশ্য তো আরওই মনে থাকার কথা৷ কতই না বিতর্ক হয়েছিল তা নিয়ে৷ কী করেছিলেন অভিনেত্রী? ছবির একটি দৃশ্যে হস্তমৈথুন করতে দেখা গিয়েছিল স্বরাকে৷ চরিত্রটি চরম সুখের জন্য ভাইব্রেটরও ব্যবহার করেছিল৷ তাতেই সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন অভিনেত্রী৷ যদিও সেই সমাজই আড়ালে আবডালে স্বরার এই অভিনয় ভিডিও আকারে উপভোগ করে তা ভাইরাল করেছিল৷
কিকি চ্যালেঞ্জ:
হালকা চালে চলছে চার চাকার গাড়ি। ভিতরে গমগমিয়ে বাজছে ‘কিকি’ গান। হঠাৎই সামনের দরজাটা খুলে চালকের আসন থেকে নেমে পড়ে নাচতে শুরু করলেন কোনও মহিলা বা পুরুষ। এমনই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। পাগলের কাণ্ডকারখানা নয়, এটা নাকি ছিল একরকম চ্যালেঞ্জ। বিপজ্জনক এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে অনেকেই নেটদুনিয়ায় নিজেদের জনপ্রিয় করে তোলার নেশায় বুঁদ হয়েছিলেন। এই অদ্ভুত ঝুঁকিপূর্ণ খেলারই পোশাকি নাম ছিল ‘কিকি চ্যালেঞ্জ’। আপনি ট্রাই করেছিলেন নাকি?
ওয়েবসিরিজে অর্গ্যাজম:
মহিলার চরম সুখের মুহূর্ত। স্মার্টফোনে চোখ রেখে এ দৃশ্য তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছিলেন দর্শকরা৷ আবার সমালোচনা করতেও ছাড়েনি৷ তাই তো নেটফ্লিক্সে করণ জোহরের শর্টফিল্ম ‘লাস্ট স্টোরিজ’-এ মেঘার চরিত্রে কিয়ারা আডবানীর তৃপ্তির ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.