গ্রাফিক্স: অরিত্র দেব।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রুফটপ রেস্টুরেন্ট। কিংবা ভাসমান রেস্তরাঁ। অথবা হাইওয়ের ধারে ধাবা। ঘরের বাইরে পা রাখলে কত রকম খাবারের ডেরাই তো পাওয়া যায়। তবে এই প্রথম বাংলায় চালু হতে চলেছে বিমান রেস্তরাঁ! তাও আবার প্রান্তিক জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায়। একেবারে উড়োজাহাজে চেয়ার-টেবিল পেতে ইন্ডিয়ান, কন্টিনেন্টাল, চাইনিজ এমনকি ‘ষোলআনা বাঙালিয়ানা’র নানা পদ চাখতে পারবেন আশ মিটিয়ে। অবাক হচ্ছেন? রসনা তৃপ্তির সঙ্গে ভারচুয়ালি বিমানে চলাচলের স্বাদও মিলবে এয়ার বাস রেস্তরাঁয়। থাকবেন এয়ার হোস্টেস থেকে পাইলট সকলে। থ্রি ডি শো-র মাধ্যমে বিমান চালানোর অভিজ্ঞতাও মিলবে। এমন চমকপ্রদ রেস্তরাঁ শুধু বাংলাতেই যে প্রথম, তা নয়। ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার অর্থাৎ প্রতিবেশী কোনও রাজ্যেই নেই।
শহর পুরুলিয়া থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে ধানবাদ-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে পুরুলিয়া (Purulia) মফস্বল থানার বেলকুড়ি টোল প্লাজার কাছে একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এই রেস্তরাঁ চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যা এখন সামাজিক মাধ্যম-সহ সর্বত্র ভাইরাল। সত্যিই বদলে যাচ্ছে ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা প্রান্তিক পুরুলিয়া। পর্যটনের উপর ভর করেই এই বদল বনমহলের। ওই বেসরকারি পর্যটন সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছর দুর্গাপুজোর আগেই অভিনব বিমান রেস্তরাঁ চালু হয়ে যাবে।
জানা গিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার একটি পুরনো এয়ারবাস A-319 কে পুরুলিয়ায় আনা হয়েছে। তাকে সাজিয়েগুছিয়ে রেস্তরাঁর চেহারা দেওয়া হবে। রেস্তরাঁর (Resturant)একটি নামও থাকবে। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় ২০১৭ সাল নাগাদ দেশে প্রথম বিমান রেস্তরাঁ চালু হয়েছিল। যা এখন দেশের নিরিখে ২৮তম। শুধু রেস্তরাঁ নয়, গান-বাজনার একটি রাউন্ড সার্কেলও থাকবে এই পরিত্যক্ত বিমানে। এই পর্যটন প্রকল্পের কর্ণধার সীতেশ সিনহা পুরুলিয়ার বাসিন্দা। তাঁর কথায়, “বিমান রেস্তরাঁর মধ্য দিয়ে পর্যটন বিস্তার বাংলায় এই প্রথম। পুরুলিয়া লাগোয়া ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহারেও এমন নেই। আমাদের এই বিমান রেস্তরাঁ চালু হলে এটি দেশের মধ্যে ২৮ তম হবে। প্রায় ২০ বছর আগের এই পুরনো বিমান আমরা নিয়ে এসেছি। ইঞ্জিনিয়াররা এসে ইনস্টল করবেন। এই রেস্তরাঁয় প্রায় ৬০ জনের বসার জায়গা থাকবে। এই পর্যটন (Bengal Tourism) প্রকল্পের মধ্য দিয়ে পুরুলিয়ার টুরিজম আরও এগিয়ে যাবে।”
পুরুলিয়া হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহিত লাটা বলেন, “বাংলার পর্যটনে টপ সার্চে দার্জিলিঙের পর পুরুলিয়া রয়েছে। এই প্রখর দাবদাহেও। রাজ্য সরকারের নানান সুবিধার জন্যই পুরুলিয়ার পর্যটনে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে। সব ধরনের পর্যটন পরিকাঠামো এখানে গড়ে তোলা হয়েছে। এয়ার বাস রেস্তরাঁ নতুন সংযোজন।”
সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়া থেকে এই ককপিটটি (Cockpit) আনা হয়েছে। দিল্লি থেকে পাটনা হয়ে সড়কপথে এই ককপিটটি আনতে সময় লেগেছে প্রায় তিন মাস।এই বিমানে প্রবেশের জন্য আপাতত মূল্য ধার্য করা হয়েছে ৫০০ টাকা। রেস্তোরাঁয় খাবার (Food) অনুযায়ী টাকা দিতে হবে। এছাড়া বিমানের মধ্যেই চলাচলের স্বাদ নিতে হলে ১০০০ টাকা দিয়ে বোর্ডিং পাস মিলবে। ঝাড়খন্ডের বোকারো, রাঁচি, জামশেদপুর, ধানবাদ এবং পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে এই বিমান চলাচল করবে একেবারে ভারচুয়ালি। হবে ল্যান্ডিংও। এই ব্যবস্থাপনায় যেমন বিমানে চেয়ার নড়ে। মৃদু আওয়াজ হয়। সব অনুভূতি মিলবে। ১৫- ১৬ মিনিট ধরে এই বিমান চলাচলের স্বাদ পাবেন পর্যটকরা। এই বিমানের মধ্যেই এয়ার হোস্টেস, পাইলট মিলিয়ে মোট ৩০ জন কর্মী থাকবেন।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.