সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দলমা পাহাড়ের কোলে সবুজ জঙ্গল ছুঁয়ে কটেজ। কিছুটা দূরেই সাতগুড়ুম নদী। এই পাহাড়-টিলার জঙ্গলে হেঁটে বেড়ায় ময়ূর। মাঝেমধ্যে দেখা মেলে ঝাড়খন্ড থেকে আসা বুনো হাতির দলের। কপাল ভালো থাকলে সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে নেকড়ের সঙ্গেও। দেখা মিলতে পারে চিতল হরিণের। পুজোর ছুটিতে এমন অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের স্বাদ নিতে চান? ঠিক পুজোর আগেই ৭ অক্টোবর অবশেষে দ্বার খুলছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতির থরকাদহ-দুয়ারসিনি পর্যটন প্রকল্পের। কলকাতার একটি সংস্থাকে লিজ দিয়ে এই পর্যটন ব্যবসা চালাবে বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতি।
বান্দোয়ানের বিডিও তথা বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক রুদ্রাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”৭ অক্টোবর এই পর্যটন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। খুব শীঘ্রই পঞ্চায়েতের ট্যুরিজম পোর্টালে এই পর্যটন প্রকল্পের বিষয়ে বিশদে জানা যাবে।” পর্যটন দপ্তরের অর্থে এই প্রকল্প নির্মাণ হয়েছে। সমস্ত কাজ একেবারে শেষের দিকে।
গত শীতের মরশুমেই এই পর্যটন প্রকল্পের দরজা খোলার কথা ছিল। কিন্তু একটু ধীর গতিতে কাজ চলায় তা হয়নি। এই পর্যটন প্রকল্প চালু হয়ে গেলে পুরুলিয়ার দক্ষিণ প্রান্তের ট্যুরিজম সার্কিট আরও প্রসারিত হবে। বনমহলের এই জেলার দক্ষিণ প্রান্তের ট্যুরিজম সার্কিট বলতে মানবাজার এক নম্বর ব্লকের দোলাডাঙ্গা, মানবাজার দুই ব্লকের একাধিক পর্যটন প্রকল্প সেই সঙ্গে বান্দোয়ানের দুয়ারসিনি রয়েছে। ওই তালিকায় দুয়ারসিনির আরও ভিতরে ঘন জঙ্গলের মধ্যে এই পর্যটন প্রকল্প রীতিমতো অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম। তাই বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসন এই প্রকল্পকে অফবিট ট্যুরিজম হিসাবেই তুলে ধরছে।
সেই সঙ্গে সমগ্র বান্দোয়ানকেই বাইক রাইডিং-র ক্ষেত্র বলেও প্রচার করা হচ্ছে। আসলে দলমা পাহাড়ের কোলে দু’পাশে শাল, শিমূল, পলাশ, কুসুম জঙ্গলের বুক চিরে কালো পিচ রাস্তায় বাইক রাইডিং-র অনুভূতি অন্যরকম। তাই থরকাদহ ট্যুরিজম পর্যটন প্রকল্পের সঙ্গে অরণ্য সুন্দরী বান্দোয়ানকে ‘হেভেন ফর বাইকারস’ বলেও সামনে আনছে প্রশাসন। কিছুদিন আগেই এই বান্দোয়ানে ভালু পাহাড়ের কোলে ভিলেজ ট্যুরিজম চালু হয়েছে। টটকো জলাধার ছুঁয়ে এ এক অন্যরকম পর্যটন। বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত থরকাদহ-দুয়ারসিনি পর্যটন প্রকল্পে থাকতে হলে বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তার পর খুব শীঘ্রই ওয়েবসাইট বা কোন পোর্টালের মাধ্যমে বুকিং করা যাবে।
অতীতে এই এলাকা ছিল মাও মুক্তাঞ্চল। এখন বাংলার শেষ ঠিকানার সেই পাহাড় জঙ্গল-ই পর্যটনের ক্ষেত্র। পুরুলিয়ার পর্যটনের এই দক্ষিণ সার্কিটের সঙ্গে ছুঁয়ে রয়েছে দক্ষিণ বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামের পর্যটনের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের গালুডি, ঘাটশিলাও। ফলে দলমা পাহাড়ের কোলে এক ভিন্ন পর্যটন। যেখানে মিলছে খানাপিনায় লোকাল ডিস। যার মধ্যে নজরকাড়া দুয়ারসিনির কড়া পাকের জিলাপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.