Advertisement
Advertisement
Lok Sabha Election 2024

বঙ্গ রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে তারকাদের চালচিত্র, ভোট সাম্রাজ্য এবার কার দখলে?

চারের ভাগ্যেই চূড়ান্ত ফলাফল।

Bengal celebrities in Lok Sabha Election 2024
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:June 3, 2024 4:21 pm
  • Updated:June 3, 2024 7:13 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে তারকাদের আনাগোনা লেগেই থাকে। ভোটের বক্স অফিসে কেউ সুপারহিট, কেউ বা সুপারফ্লপ। ডায়লগের পর ডায়লগ, কেউ ‘গোখরো’র জাত চেনাতে ব্যস্ত, কারও কাছে আবার সৌজন্যই ‘প্রধান’ হাতিয়ার। গতবার কারা ছিলেন পলিটিক্যাল লাইমলাইটে? এবার কারা ‘নম্বর ১’? চারের চূড়ান্ত ফলাফলের আগে একবার দেখে নেওয়া যাক তারকাদের ভোট মানচিত্র।

প্রথমেই টলিউডের ‘খোকাবাবু’ দেবের (Dev) কথায় আসা যাক। শোনা যায়, তিনি নাকি রাজনীতিতেই আসতেই চাননি। কিন্তু স্টার খেলোয়াড় হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে দেবেরই জয়জয়কার। তবুও এবার নাকি প্রার্থী হতে চাননি দেব। কিন্তু বিজেপি আবার নিজেদের প্রার্থী হিসেবে হিরণের নাম ঘোষণা করে দেয়। যে হিরণ দেবকে একাধিকবার বাক্যবাণে বিঁধেছেন। কটাক্ষের পর কটাক্ষ করেছেন। দেব আবার ‘চ্যালেঞ্জ’ নিতে ভালোবাসেন। জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে হাসিমুখেই নেমে পড়েছেন ভোটযুদ্ধে। তূণে সাজিয়ে নিয়েছেন সৌজন্যের হাতিয়ার। তাতেই কিস্তিমাত! নিজের জয় নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী টলিউডের ‘প্রধান’।

Advertisement

dev

এবারে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় অন্যতম চমক বাংলার ‘দিদি নম্বর ১’ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাও আবার হাইভোল্টেজ হুগলিতে। কারণ এই কেন্দ্রে রচনার প্রতিপক্ষ গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। রচনার রাজনৈতিক সফর সবে শুরু হয়েছে। আর লকেট রাজনীতির পুরানা খেলোয়াড়। আবার গতবারের বিজয়ীও বটে। কিন্তু সময়ের কথা কে বলতে পারে! বাংলা টেলিভিশনে তো রচনার বহু দিনের রাজত্ব। মহিলা মহলে তাঁর তুমুল জনপ্রিয়তা। বাড়ির লক্ষ্মীরা যদি কারও সহায় হন তাহলে কী না হতে পারে?

Rachana-1

এবার আসা যাক জুন মালিয়ার কথায়। রাজনীতির আঙিনায় তাঁরও কিন্তু লেটার মার্কস রয়েছে। মেদিনীপুরের এই প্রার্থী ইতিমধ্যেই বিধায়ক পদ সামলেছেন। আর সেই সুবাদে সুনামও পেয়েছেন। তাই তো লোকসভার যুদ্ধেও তাঁর উপরই ভরসা রেখেছে ঘাসফুল শিবির। এই কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনে গতবার জয় পেয়েছিল পদ্ম শিবির। আর জয়ী প্রার্থী ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তবে দিলীপ ম্যাজিকের সুযোগ এবারে এখানে নেই। কারণ এবারের লোকসভায় মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল। যিনি কিনা জুনের মতোই গত বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন। অবশ্য অগ্নিমিত্রা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক পদ সামলেছেন, আর জুন ছিলেন মেদিনীপুরেরই বিধায়ক। ফলে তাঁর কাছে এই ময়দান একটু হলেও বেশি চেনা।

June-Malia-1

নজরে এবার সায়নী ঘোষও থাকবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণাতেই সায়নীর রাজনীতিতে আসা। তার পর যুবনেত্রী হওয়া। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের দায়িত্ব সামলানো। তবে ভোটের ময়দানে সায়নীর শুরুটা ভালো হয়নি। অগ্নিমিত্রার কাছেই হেরে গিয়েছিলেন বিধানসভা নির্বাচনে। তাতে অবশ্য দমে যাননি অভিনেত্রী। সোজা যাদবপুরে চলে এসেছেন। যে কেন্দ্রে এর আগে মিমি চক্রবর্তী জয় পেয়েছিলেন, তাতেই আবার ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থী সায়নী। গতবার বিজেপির পোড় খাওয়া নেতা অনুপম হাজরাকে হারিয়েছিলেন মিমি। কিন্তু এবারে তিনি একেবারেই ‘ভ্যানিশ’। প্রচারের ময়দানেও তো দেখা যায়নি। সায়নী অবশ্য প্রচারে খামতি রাখেননি। মাছ বাজার থেকে চায়ের দোকান, সর্বত্র গিয়ে ভোট চেয়েছেন। তাতে কি বিজেপির অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বা সিপিএমের তরুণ তুর্কি সৃজন ভট্টাচার্যকে হারাতে পারবেন? সময়ই জবাব দেবে।

Saayoni-1

[আরও পড়ুন: লোকসভার তুলনায় ভোটদানের হার অনেক কম বিধানসভা উপনির্বাচনে! কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা]

মিমির কথাতেই মনে পড়ে নুসরত জাহানের কথা। ২০১৯-এর লোকসভায় জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন টলিপাড়ার এই সুন্দরী। কিন্তু তার পর যেন মোহভঙ্গের পালা। অভিযোগ, তারকা ইমেজে ভোটে জিতলেও কোনওদিন জনপ্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেননি নুসরত। এর মধ্যেই আবার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি। নিখিল জৈনের সঙ্গে বিচ্ছেদ, যশ দাশগুপ্তর সঙ্গে সম্পর্ক, সন্তানের জন্ম সব নিয়ে তুমুল ট্রোলড হয়েছেন অভিনেত্রী। কফিনে শেষ পেরেকটি বোধহয় সন্দেশখালির ঘটনার সময় পোঁতা হয়ে যায়। অভিযোগ, গোটা সময়টায় বড় নির্লিপ্ত ছিলেন অভিনেত্রী। দায়সারা কথাতেই কাজ সারার চেষ্টা করেছেন। নুসরতের বদলে এবারে বসিরহাটের প্রার্থী ভূমিপুত্র হাজি নুরুল ইসলাম। ওদিকে এই শিবিরে বিজেপির বাজি সন্দেশখালির অন্যতম অভিযোগকারী রেখা পাত্র।

Nusrat

এবার ‘চড়াম চড়াম’ বীরভূম। এক সময় যে কেন্দ্র লালদুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল সেখানে সবুজ আবির নিয়ে আসেন শতাব্দী রায়। ২০০৯ সাল থেকে এই কেন্দ্রে জয়ী হচ্ছেন টলিউডের অভিনেত্রী। একসময় বীরভূমের নির্বাচনের গোটা দায়িত্বটাই এতদিন থাকত অনুব্রত মণ্ডলের কাঁধে। তবে এবারের ছবিটা আলাদা। গরুপাচার মামলায় তিহাড়ে বন্দি কেষ্ট। ফলে এবারে শতাব্দীর লড়াই বেশ কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। শতাব্দীর বিরুদ্ধে এবার বিজেপির হয়ে লড়ছেন দেবতনু ভট্টাচার্য আর কংগ্রেসের প্রার্থী মিল্টন রাশিদ। এমন পরিস্থিতি কেষ্টকে মিস করছেন অভিনেত্রী। তবে নিজের জয় নিয়ে আশাবাদী তিনি।

Shatabdi-Web

আসানসোলে বলিউড কানেকশন। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচন থেকে এই কেন্দ্র ছিল বিজেপির। কিন্তু কাহানি মে ট্যুইস্ট। কারণ, বাবুল সুপ্রিয়। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে আরেক তারকা প্রার্থী মুনমুন সেনকে হারিয়েছিলেন তিনি। বলতে গেলে বিজেপির জয়ের কান্ডারি ছিলেন বাংলার গায়ক। কিন্তু খেলা ঘুরে যায় বাবুলের তৃণমূলে যোগদানের পর। এর পর ২০২২ সালের উপ-নির্বাচন। তাতেই জয়ী হন বলিউডের ‘শটগান’ শত্রুঘ্ন সিনহা। এবারও তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে ঘাসফুল শিবির।

Shatrughan Sinha

এছাড়াও এবারে তৃণমূলের বড় চমক স্টার ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। বহরমপুরের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হতেই শোরগোল পড়ে যায়। কারণ এই কেন্দ্রটি কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর গড়। সেই ১৯৯৯ সাল থেকে। গত লোকসভায় আশি হাজারের একটু বেশি ভোটে তৃণমূলের অপূর্ব সরকারকে হারিয়েছিলেন অধীর। এই ব্যবধান কংগ্রেস নেতাকে চিন্তায় রাখবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

Yusuf

এদিকে বর্ধমান-দূর্গাপুরে এবার ‘কাঁটে কা টক্কর’। একদিকে ক্রিকেট তারকা কীর্তি আজাদ, অন্যদিকে বিজেপির দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা দিলীপ ঘোষ। গতবার বিজেপির জয় সম্ভব হয়েছিল মাত্র ২,৪৩৯ ভোটে। এবার শেষ হাসি কার মুখে দেখা যাবে? উত্তর পেতে অপেক্ষা আর মাত্র কিছুক্ষণের।

Kirti

[আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের রাস্তায় ‘হেনস্তা’র ঘটনায় রবিনার পাশে কঙ্গনা, বড় খবর জানাল পুলিশ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement